বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আগামী ১০ মে’র মধ্যে চীনের উপহার হিসেবে দেয়া ৫ লাখ ডোজ টিকা দেশে আসতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা জানান।
সরকার চীন থেকে যে টিকা কিনতে চায় সেগুলো আসতে আরও কিছুটা সময় লাগবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, চীন আমাদের বলেছে ৫ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে দেবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আমাদের জানিয়েছে, তারা এটা আনার ব্যবস্থা করছে। হয়তো ১০ তারিখের মধ্যে বাংলাদেশে আসতে পারে। আর অন্য যে অংশটুকু আমরা কিনতে চাই, সেটা আসতে একটু সময় লাগবে।
তিনি বলেন, চীন থেকে আরও টিকা কেনার জন্য আমাদের তরফ থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। চীনের পক্ষ থেকে প্রস্তাব পাঠালেই টিকা ক্রয়ের আলোচনা শুরু হবে। আমাদের অনেক টিকা লাগবে। আমরা চীনের টিকা ৪ থেকে ৫ কোটি ডোজ হলেও নেব।
মন্ত্রী বলেন, রাশিয়ার সঙ্গেও আমাদের আলোচনা হয়েছে। তারা টিকা দিতে চায়, উৎপাদনও করতে চাচ্ছে। আমরা দুটি দেশের সঙ্গেই কথা বলে রাখছি। করোনার কারণে বর্তমানে সীমান্ত বন্ধ রাখার যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তা পরিবর্তন হচ্ছে না জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, বর্ডার যেভাবে বন্ধ করা আছে এখনও, তা বন্ধ থাকবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সীমান্তগুলো বন্ধ থাকবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ সংক্রমণ এবং মৃত্যুই হচ্ছে বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশন এলাকায়। কাজেই এই অঞ্চলগুলোয় কঠোর নজরদারির আওতায় রাখা হবে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম বলেছেন, চীন সে দেশে তৈরি সিনোফার্ম কোম্পানির পাঁচ লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে দিতে চেয়েছে। সোমবার রাজধানীর মহাখালীতে এক অনুষ্ঠান শেষে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
চীনের সিনোফার্ম যে পাঁচ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে দিচ্ছে সেগুলো কবে নাগাদ আসতে পারে জানতে চাইলে এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, এখনও সঠিক তারিখ পাওয়া যায়নি। তবে তাড়াতাড়ি আসবে। তারা আমাদের বলেছিল আমরা টিকা নেব কিনা। আমরা নিতে রাজি আছি, সেটা তাদের জানিয়েছি। এ সময় তিনি বলেন, ‘মডার্নার টিকা আনার জন্য রেনাটা ফার্মাসিউটিক্যালস নামে একটি ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি আবেদন করেছে।’ ডাঃ এবিএম খুরশিদ আলম জানান, রেনাটার দেয়া এ সংক্রান্ত কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, তাদের আবেদন আমরা সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রসহ ডিজিডিএসে পাঠিয়েছি। তারা যাচাই-বাছাই করে দেখছে ওই কোম্পানির সক্ষমতা আছে কিনা, আর তারা আনতে পারবে কিনা।
মডার্নার টিকা বাংলাদেশে সংরক্ষণ করা যাবে কিনা জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, এই টিকা শূন্যের নিচে তাপমাত্রায় রাখতে হয়। ঢাকায় এ ধরনের ব্যবস্থা আছে। এই টিকার জন্য যে তাপমাত্রা লাগে, এখন পর্যন্ত সে তাপমাত্রায় রাখার মতো প্রস্তুতি আমাদের নেই। সে কারণে আমরা এটা ঢাকায় রাখতে পারব। কিন্তু ঢাকার বাইরে এই টিকা সংরক্ষণের কোন ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত নেই।