ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সত্যের জয় চিরন্তন

প্রকাশিত: ২০:৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২১

ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সত্যের জয় চিরন্তন

জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের ‘সত্য-কবি’ কবিতা উপস্থাপনে নিবন্ধের সূচনাপাট করছি। ‘অসত্য যত রহিল পড়িয়া, সত্য সে গেল চ’লে/ বীরের মতন মরণ-কারারে চরণের তলে দ’লে।/ যে-ভোরের তারা অরুণ-রবির উদয়-তোরণ-দোরে/ ঘোষিল বিজয়-কিরণ-শঙ্খ-আরাব প্রথম ভোরে,/ রবির ললাট চুম্বিল যার প্রথম রশ্মি-টীকা,/বাদলের বায়ে নিভে গেল হায় দীপ্ত তাহারি শিখা!/ মধ্য গগনে স্তব্ধ নিশীথ, বিশ্ব চেতন-হারা,/ নিবিড় তিমির, আকাশ ভাঙিয়া ঝরিছে আকুল-ধারা,/ গ্রহ শশী তারা কেউ জেগে নাই, নিভে গেছে সব বাতি,/ হাঁক দিয়া ফেরে ঝড়-তুফানের উতরোল মাতামাতি!’ কবিতার প্রাসঙ্গিকতায় বলা যায়; বিশ্বব্যাপী আধুনিক সভ্যতার মানদণ্ডে প্রকৃষ্ট সত্য-সততার নান্দনিক-মাঙ্গলিক মূল্যবোধের গভীরতম স্খলনে অসত্য পরাভূত না হওয়ার নিন্দিত অধ্যায় যেন বিরচিত হচ্ছে। প্রাণঘাতি করোনা অতিমারীর দ্বিতীয় তরঙ্গের ভয়াবহ তা-বে বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় প্রতিটি জাতিরাষ্ট্র প্রচ- ক্ষত-বিক্ষত। সংক্রমণের অপ্রতিবন্ধ উর্ধমুখী বিস্তার ও প্রাণ সংহারের পরিসংখ্যান বিশ্ববাসীর হৃদয়ে নবতর সীমাহীন আতঙ্কের আঘাত কঠিন মনস্তাত্ত্বিক সঙ্কট তৈরি করছে। ইতোমধ্যে কঠোর লকডাউনের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার দেশবাসীকে এ ব্যাপারে সচেতন ও সতর্ক করার প্রাণপণ প্রয়াস অব্যাহত রেখেছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা বিবেচনায় দেশের অভ্যন্তরে শিল্প-কারখানা-কৃষি-ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ-অন্যান্য উৎপাদন খাতগুলোর গুরুত্ব অনুসারে অর্থনীতিকে সচল রাখার স্বার্থে চলমান রেখেছে। বাংলা নববর্ষের শুরুতে আমন ধানের বাম্পার ফলন ও মহাসমারোহে ধান কাটার উৎসব কৃষক ও কৃষি অর্থনীতিতে অতিশয় প্রাণ সঞ্চারের যুগপৎ দৃশ্যপট নিগূঢ় অনুপ্রাণিত। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় বিধির পরিপূর্ণ প্রতিপালন সাপেক্ষে তৈরি পোশাক শিল্পকে লকডাউনের আওতামুক্ত রেখে দরিদ্র শিল্প শ্রমিকদের কর্মসংস্থান ও অর্থ উপার্জনে নৈমিত্তিক দিনানিপাতকে অন্তরায়হীন রেখেছে। পবিত্র রমজান মাসে জনগণের দুর্ভোগ লাগবে উন্মুক্ত নিত্যপণ্য বাজারের ব্যবস্থা এবং পরিষেবাসমূহ যথাযথভাবে কার্যকর রাখার উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয়। প্রধানমন্ত্রীর ‘সবার আগে জীবন’ উচ্চারণে জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত ভাষণে জনগণকে শঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান আশাজাগানিয়া শক্তিমানতার নতুন পতাকার উড্ডীন করেছে। সরকার জনগণের পাশে আছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পথ যত কঠিন হোক জয় করে এগিয়ে যেতে হবে ইত্যাদি দৃঢ়চেতা কণ্ঠের অমিয় বক্তব্য বাংলা নববর্ষ ও পবিত্র রমজানের শুভেচ্ছা জ্ঞাপনে মার্গশীর্ষ নেতৃত্বের আলোকন অধিকতর প্রজ¦লিত হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, সাম্প্রতিককালে অন্ধকারের অশুভ শক্তির পৃষ্ঠপোষকতায় মৌলবাদ-জঙ্গীবাদের আকস্মিক আস্ফালন দেশকে অস্থিতিশীল করার নির্লজ্জ অপচেষ্টা জাতি অবলোকন করেছে। ¯্রষ্টার অপার কৃপায় ধর্মের নামে এসব জঘন্য দুশ্চরিত্রের উন্মোচন ও দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করার সকল ভ্রষ্ট-নষ্ট বর্বর কৌশলগুলো সরকারের কঠোর পদক্ষেপ রুখে দিতে পেরেছে। অসত্য-অন্যায়-সম্পূর্ণ পবিত্র ইসলাম বিরোধী কর্মকান্ড ও বক্তব্য বুমেরাং হয়ে তাদের প্রতিহত-প্রতিরোধ করার পথ তারা নিজেরাই নির্মাণ করেছে। এতে পবিত্র ইসলামের অসাম্প্রদায়িক ধার্মিক চিন্তা-চেতনাকে পরিশুদ্ধ করে বঙ্গবন্ধুর ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শের বিজয় বার্তাকে আবারও মহিমান্বিত করেছে। বাঙালী প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে; তারা ঐক্যবদ্ধভাবে পবিত্র ইসলাম ধর্মের সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতাকে সমুন্নত ও মানবিকতা-মনুষ্যত্বে পরিপুষ্ট নীতি-নৈতিকতা-সততা-সত্যবাদিতার সুমহান ঐতিহ্য-সংস্কৃতি যে কোন মূল্যে অপরাজিত রাখবেই। অতিসম্প্রতি গণমাধ্যম সূত্রে প্রাপ্ত চমকপ্রদ সুখবর হচ্ছে; জঙ্গী-মৌলবাদ কর্মযজ্ঞে প্রত্যক্ষ সহায়তাদানের অভিযোগে অভিযুক্ত পাকিস্তান সরকারও উগ্রপন্থী আচরণের দায়ে ধর্মীয় রাজনৈতিক দল ‘তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান (টিএলপি)’ নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে। দলটির পক্ষ থেকে ফ্রান্সে ইসলামবিরোধী ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশের জেরে ইসলামাবাদে নিযুক্ত ফরাসী রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার ও দেশটি থেকে পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ ঘোষণার জন্য পাকিস্তান সরকারের প্রতি জোরালো দাবি উত্থাপন করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে দলপ্রধান আল্লামা সাদ রিজভিকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে গত সোমবার পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে তা-ব চালায় ধর্মীয় এই রাজনৈতিক দলটির নেতাকর্মীরা। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদ সংবাদ সম্মেলনে জানান, ‘টিএলপির সন্ত্রাসী হামলায় এ দিন দুজন পুলিশ নিহত এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আরও ৩৪০ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির দায়ে আমরা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় এ ধর্মীয় দলটির নিষিদ্ধের আবেদন করেছি। আশা করি মন্ত্রিসভায় এ প্রস্তাবটি পাস হবে।’ বিশ্বখ্যাত সূফী স¤্রাট মাওলানা জালালুদ্দিন রুমির প্রদত্ত অমিয় এক বাণী নিবিড় স্মরণযোগ্য। তিনি বলেছিলেন, ‘তুমি সাগরে এক বিন্দু পানি নও। তুমি এক বিন্দু পানিতে গোটা এক সাগর। শব্দ দিয়ে প্রতিবাদ করো, কণ্ঠ উঁচু করে নয়। মনে রাখবে ফুল ফোটে যতেœ, বজ্রপাতে নয়। গতকাল আমি বুদ্ধিমান ছিলাম, তাই পৃথিবীটাকে বদলে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আজ আমি জ্ঞানী, তাই নিজেকে বদলে ফেলতে চাই।’ দেশীয় ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে নৈতিক মূল্যবোধের চরম স্খলনের দৃশ্যমান বৈশিষ্ট্যের সমাহারে প্রতিষ্ঠিত সত্য হচ্ছে; অর্থ-সম্পদই সকল নৈরাজ্যের ¯্রষ্টা। মাওলানা রুমির উল্লিখিত মন্তব্য উপলব্ধিতে বিশ্বকে পাল্টানোর পূর্বে নিজেকে পরিপূর্ণ আবিষ্কার করার মধ্যেই প্রকৃত জ্ঞানের অনুসন্ধান। এটিও সত্য যে; ন্যায়-অন্যায়, সত্য-মিথ্যা, শুভ-অশুভ, মঙ্গল-অমঙ্গল, আনন্দ-বিষাদ, আলো-অন্ধকারের ব্যবচ্ছেদ মূল্যায়নে যারপরনাই আর্তনাদে কাতর-যন্ত্রণাদগ্ধ ও ক্ষত-বিক্ষত, রক্তক্ষরণে এই ধরিত্রীর প্রতিটি মানবিক মানব ও প্রকৃতির নিত্যানন্দ অনুষঙ্গ। জনশ্রুতিমতে হাতেগোনা কতিপয় পাপিষ্ঠ এবং ব্যক্তিস্বার্থে দেশ বিধ্বংসী রাজনীতিক-পেশাজীবীদের কূট চক্রান্ত-অবৈধ পন্থায় অর্থ-আধিপত্য ও দৌরাত্ম্যের কুৎসিত বহির্প্রকাশে ব্যতিব্যস্ত। মহান মুক্তিযুদ্ধের অবিনাশী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক চেতনার যথার্থ বাস্তবায়নে প্রাণ ঝুঁকির বিনিময়ে যারা প্রতিনিয়ত জীবনযুদ্ধে অবিচল রয়েছে; ক্ষেত্রবিশেষে তারা সমাজে যারপরনাই অপাঙ্্ক্তেয় ও কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। অনুপ্রবেশকারীদের বর্ণচোরা-ছদ্মবেশী আবরণে পদ-পইব-পদক দখলের দুর্বৃত্তায়নে হিংস্র প্রবৃত্তির কদর্য চরিত্রের হীন প্রকাশ জাতিকে ক্ষুভিত হতবাক করছে। দেশবাসী সম্যক অবগত আছেন প্রাচুর্য-বিলাস-ভোগবাদের বিপরীতে ক্ষুধা-দারিদ্র্য-অপুষ্টি-অসুস্থতা-দুর্ভোগ নিরন্তর তৈরি করেছে মানবসৃষ্ট দুর্ভেদ্য বৈষম্যের পরিধি ও বিস্তৃতি। স্বাধীন মাতৃভূমি বাংলাদেশেও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরে নির্মিত হয়েছে কথিত ব্যক্তিখাতে ঘৃণ্য চাতুর্যে শিল্পায়ন-ঋণখেলাপী-অর্থ পাচার-অপরাজনীতির অপসংস্কৃতি। সেনাশাসকদের স্বৈরশাসন বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রাক ’৭৪ পর্বে ব্যক্তিখাতে ঋণের পরিমাণ ছিল মাত্র ১২ কোটি টাকা। ১৯৭৫-৮১ সালে এই ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৭৬ কোটি টাকায়। উক্ত কালপর্বে ঋণ গ্রহণকারী চার হাজার শিল্প প্রকল্পের কোন হদিস পাওয়া যায়নি। ১৯৮২ সালের পরবর্তী নয় বছরে শিল্পখাতে ঋণ বরাদ্দ ছিল ৯ হাজার কোটি টাকার অধিক। অনুমোদিত এই শিল্প ঋণের সত্তর শতাংশ কোথাও বিনিয়োগ হয়নি। পুঁজি বিনয়োগ বোর্ডের জরিপ থেকে জানা যায়, ৮৫-৯০ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে গড়ে ৭ হাজার ৫ শত ৩১টি অনুমোদিত শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪ হাজার ৪ শত ২২টির কোন অস্তিত্বই ছিল না। অতীতে দুর্বৃত্তায়নের মহোৎসবে ঔপনিবেশিক লুণ্ঠনের মতোই ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট দুর্নীতিবাজদের নিয়ন্ত্রণের কোন ব্যবস্থা না করে অতি সমাদরে দেশ ধ্বংসের সকল প্রচেষ্টাই প্রণোদিত হয়েছে। মুক্তির মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য তনয়া দেশরতœ শেখ হাসিনার জঙ্গী-সন্ত্রাস-দুর্নীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করার কারণে অদম্য অগ্রগতিতে দেশ এগিয়ে বিশ্বপরিম-লে প্রোদ্ভিন্ন উন্নয়নের প্রশংসিত অবস্থানে উন্নীত হয়েছে। তাঁরই সুনিপুণ নেতৃত্বে বিগত দশকে গণমাধ্যমের অবাধ তথ্যপ্রবাহের ধারাবাহিকতায় সত্যনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনসহ প্রতিবেদন-নিবন্ধের সমাহার দেশবাসীকে সামগ্রিক বিষয়ে অবহিত করার লক্ষ্যে উপাত্ত-পরিসংখ্যানের তাৎপর্যপূর্ণ প্রকাশ ছিল প্রমুদিত। এটি প্রতিষ্ঠিত ধারণা যে; অর্থ-সন্ত্রাসের এই বিস্তৃতি শুধু দেশেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। অকল্পনীয় দুষ্টপন্থা অবলম্বনে দেশ থেকে অপরিমেয় অর্থ পাচার করে দেশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। সেনাশাসিত স্বৈরসরকার কোন ধরনের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করার ফলশ্রুতিতে এদের নগ্ন প্রতিপত্তি এত বেশি শক্তিমান হয়েছে; দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব-পবিত্র সংবিধান ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সুমহান মর্যাদাকে ভূলুণ্ঠিত করার দুঃসাহস দেখাতেও পিছপা হচ্ছে না। অর্থ পাচারের অস্বাভাবিক চিত্র পর্যবেক্ষণে বিষয়সমূহ অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান। ৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২ কলকাতা ব্রিগেড ময়দানে বঙ্গবন্ধু আবেগঘন ভাষণে আদর্শিক ভাবধারার চেতনাসূচী প্রকাশ করে বলেছিলেন, নীতির জন্য সংগ্রাম করেছিলাম। বিশ্বকবি রবীঠাকুরের ‘প্রান্তিক’ কাব্যগ্রন্থের পঙ্্ক্তি উপস্থাপনে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘নাগিনীরা চারিদিকে ফেলিতেছে বিষাক্ত নিশ্বাস,/ শান্তির ললিত বাণী শোনাইবে ব্যর্থ পরিহাস-/ বিদায় নেয়ার আগে তাই ডাক দিয়ে যাই/ দানবের সাথে যারা সংগ্রামের তরে প্রস্তুত হইতেছে ঘরে ঘরে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমার বাঙালীরা প্রস্তুত আছে। নাগিনীদের আমরা চিনি। ভয়ের কোন কারণ নাই।’ পাপাচার-কদাচার-মিথ্যাচার-প্রতারণা-দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে দেশ ধ্বংসের নির্বস্ত্র উদ্যোগ গ্রহণে প্রতিনিয়ত লিপ্ত এসব অভিশপ্ত নরপশুর উদ্দেশে দেশের বরেণ্য কবি হুমায়ুন আজাদের ‘সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে’ কবিতার পঙ্্ক্তি উপস্থাপন করতে চাই। ‘আমি জানি সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে।/ কড়কড়ে রৌদ্র আর গোলগাল পূর্ণিমার চাঁদ/ নদীরে পাগল করা ভাটিয়ালি খড়ের গম্বুজ/ শ্রাবণের সব বৃষ্টি নষ্টদের অধিকারে যাবে।/ রবীন্দ্রনাথের সব জ্যোৎস্না আর রবিশংকরের সমস্ত আলাপ হৃদয়স্পন্দন গাথা ঠোঁটের আঙ্গুর/ ঘাইহরিণীর মাংসের চিৎকার মাঠের রাখাল কাশবন একদিন নষ্টদের আধিকারে যাবে।/ চ’লে যাবে সেই সব উপকথা : সৌন্দর্য-প্রতিভা-মেধা;- এমনকি উন্মাদ ও নির্বোধদের প্রিয় অমরতা/ নির্বোধ আর উন্মাদদের ভয়ানক কষ্ট দিয়ে অত্যন্ত উল্লাসভরে নষ্টদের অধিকারে যাবে।’ আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আপামর জনসাধারণ বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের তীক্ষè চেতনাবোধে উজ্জীবিত বাংলাদেশ সকল বাধাবিপত্তি নিধনে মহান স্বাধীনতার ইতিহাস-কৃষ্টি-ঐতিহ্য-সংস্কৃতিসহ সত্য-সুন্দর-কল্যাণ-মঙ্গল-আনন্দের সকল প্রত্যয় এসব নষ্টদের কবল থেকে দখলমুক্ত করবেই। করোনা অতিমারী ও তার চেয়েও ভয়ঙ্কর জঙ্গীবাদ-মৌলবাদ-দুর্নীতি-মাদক-সকল অপকর্ম রুদ্ধ করে বিরাজিত ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বাঙালী জাতি বিজয়ী হবেই- এই আশাবাদটুকু ব্যক্ত করে নিবন্ধের শেষ করছি। লেখক : শিক্ষাবিদ, সমাজ-অপরাধবিজ্ঞানী, সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
×