জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ায় দেশের সব মসজিদে জুমা, ওয়াক্তের নামাজ এবং অন্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রার্থনার আগে ও পরে গণজমায়েত নিরুৎসাহিত করাসহ বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। বুধবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে সকল ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিকে এসব নির্দেশনা পালনের অনুরোধ করা হয়েছে। খবর বাংলা ট্রিবিউন অনলাইনের।
শর্তগুলো হচ্ছে, ১. জুমা ও অন্য ওয়াক্তের নামাজ এবং প্রার্থনার আগে-পরে মসজিদ ও অন্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে কোন প্রকার সভা-সমাবেশ করা যাবে না। ২. মসজিদে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে তারাবিসহ অন্য নামাজ আদায় করতে হবে এবং অন্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে প্রার্থনা করতে হবে। ৩. প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ১৮ দফা এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনা মোতাবেক ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা সব নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট সবাইকে মেনে চলতে হবে। এতে বলা হয়, উল্লেখিত নির্দেশনা লঙ্ঘিত হলে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে। নির্দেশনায় প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদ ও অন্য ধর্মীয় উপাসনালয়ের পরিচালনা কমিটিকে উল্লেখিত নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। ৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগও এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেয়। সেগুলো হলো- ১. মসজিদের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান-পানি রাখতে হবে। মুসল্লিকে অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে আসতে হবে। ২. প্রত্যেককে নিজ নিজ বাসা থেকে অজু করে সুন্নত নামাজ ঘরে আদায় করে মসজিদে আসতে হবে। অজু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে। ৩. মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। প্রত্যেক ওয়াক্তে নামাজের আগে সম্পূর্ণ মসজিদ জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে, মুসল্লিদের প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসতে হবে। ৪. কাতারে নামাজে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে। ৫. শিশু, বয়োবৃদ্ধ, অসুস্থ ব্যক্তি ও অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের জামাতে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ৬. সংক্রমণ রোধে মসজিদের অজুখানায় সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না। ৭. সর্বসাধারণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে। ৮. মসজিদে ইফতার ও সেহরির আয়োজন করা যাবে না। ৯. করোনাভাইরাস মহামারী থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নামাজ শেষে মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে খতিব ও ইমামেরা দোয়া করবেন। ১০. খতিব, ইমাম ও মসজিদ পরিচালনা কমিটি বিষয়গুলো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবে। এসব নির্দেশনা লঙ্ঘন করা হলে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে বলেও জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।