ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ডিভোর্স ছাড়া বিয়ে

নাসির ও তামিমার বিরুদ্ধে মামলা পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ

প্রকাশিত: ২৩:০১, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১

নাসির ও তামিমার বিরুদ্ধে মামলা পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ

সৈয়দা ফরিদা ইয়াসমিন জেসি ॥ ডিভোর্স পেপার ছাড়াই অন্যের স্ত্রীকে বিয়ে করার অভিযোগে ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তার সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসীমের আদালতে রাকিব হাসান বাদী হয়ে এ মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দী গ্রহণ করে ৩০ মার্চের মধ্যে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়। এদিকে গতকাল রাজধানীর বনানীতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে নাসির ও তামিমা উপস্থিত হয়ে জানান তারা বৈধভাবেই বিয়ে করেছেন। এ সময় নাসিরের আইনজীবী সাংবাদিকদের তালাকের কাগজ দেখান। তামিমা দাবি করেন, তার পূর্বের স্বামী রাকিবকে তালাক দিয়েই তিনি বিয়ে করেছেন। রাকিব যেটা করছে সেটা পাবলিক প্লাটফর্ম পাওয়ার জন্য। সংবাদ সম্মেলনে নাসির হোসেন বলেন, ধর্মীয় রীতিনীতি এবং দেশের প্রচলিত আইন মেনেই আমি তামিমাকে বিয়ে করেছি। আমি তাই সকলের প্রতি আহ্বান করছি যেন এমন কিছু না করা হয় যাতে তার স্ত্রীর কোন অসুবিধা হয়। আমার এখন ভয় লাগছে, তামিমা যেকোন সময় ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে পারে। নাসির আরও বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় যেসব কথা বলা হচ্ছে এসব হয়ত আমি সহ্য করতে পারছি, কিন্তু তামিমা তো সহ্য করতে পারছে না। ও যদি যেকোন মুহূর্তে রং ডিসিশন নেয়, তাহলে এর দায়ভার কে নেবে? আর রাকিব সাহেব যেভাবে কথা বলেছে, এভাবে তো বলতে পারেন না। তামিমাকে কিছু বলা মানে আমাকে বলা। তবে রাকিব মামলায় অভিযোগ করেন, ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বাদীর (রাকিব হাসান) সঙ্গে ১ নম্বর আসামি তামিমা সুলতানার ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক তিন লাখ এক টাকা দেনমোহরে বিয়ে এবং কাবিন রেজিস্ট্রি হয়। বিয়ের পর থেকে তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সংসার করতে থাকেন। তোবা হাসান নামে তাদের একটি মেয়ে রয়েছে। যার বর্তমান বয়স ৮ বছর। মামলায় বলা হয়, ‘চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি তামিমার সঙ্গে ২ নম্বর আসামির (ক্রিকেটার নাসির) কথিত বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে তা বাদীর নজরে আসে। বাদী এ ধরনের ছবি দেখে হতবাক হয়ে যান। পরে পত্রিকায় এ বিষয়ে সংবাদ দেখে তিনি ঘটনার বিষয় নিশ্চিত হন।’ মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, ‘তামিমা বাদীর সঙ্গে বিয়ের সম্পর্ক চলমান থাকা অবস্থায় নাসিরের সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। নাসির বাদীকে ফোন করে জানান যে, সম্পূর্ণ বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত এবং তার নিকট তামিমা আছেন। বাদীর সঙ্গে বিয়ের সম্পর্ক চলমান থাকা অবস্থায় তামিমার নাসিরকে বিয়ে করা যা ধর্মীয় এবং রাষ্ট্রীয় আইনে সম্পূর্ণ অবৈধ। আসামির সঙ্গে তিনি অবৈধ বিয়ের সম্পর্ক দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন, যা নিকৃষ্ট ব্যভিচার। আসামিদের এরূপ অনৈতিক ও অবৈধ সম্পর্কের কারণে বাদী ও তার শিশুকন্যা মারাত্মকভাবে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছেন। আসামিদের এহেন কার্যকলাপে বাদীর চরমভাবে মানহানি হয়েছে, যা বাদীর জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।’ অভিযোগ প্রমাণিত হলে ॥ রাকিবের মামলার অভিযোগে দণ্ডবিধির ৪৯৪/৪৯৭/৪৯৮ ও ৫০০ ধারার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ ধারাগুলোর সর্বোচ্চ শাস্তি সাত বছরের কারাদণ্ড। দণ্ডবিধির ৪৯৪ ধারায় স্বামী বা স্ত্রীর জীবদ্দশায় পুনরায় বিয়ে করায় ৭ বছরের পর্যন্ত যেকোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে। এ ছাড়া অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন অপরাধী। মামলায় উল্লেখিত ৪৯৭ ধারাটি ব্যভিচারের। এই অপরাধ প্রমাণিত হলে দোষীকে সাত বছর পর্যন্ত যেকোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে অথবা অর্থদণ্ডে অথবা উভয় দণ্ডেই দণ্ডিত করা যাবে। তবে নারী (স্ত্রী ব্যক্তিটি) দুষ্কর্মের সহায়তাকারী হিসেবে দণ্ডিত হবে না। মামলার ৪৯৮ ধারায় কোন বিবাহিতা নারীকে অপরাধমূলক উদ্দেশ্যে প্রলুব্ধকরণে দুই বছর পর্যন্ত যেকোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে অথবা অর্থদণ্ডে অথবা উভয়বিধ দণ্ডেই দণ্ডিত হবে। এ ছাড়া মামলায় উল্লেখিত ৫০০ ধারায় মানহানির অভিযোগ আনা হয়েছে। এই অপরাধেও দোষী দুই বছর পর্যন্ত যেকোন মেয়াদের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে অথবা অর্থদণ্ডে অথবা উভয়বিধ দণ্ডেই দণ্ডিত হবে।
×