ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

থেমে গেল কিংবদন্তি সাংবাদিক ল্যারি কিংয়ের কণ্ঠ

প্রকাশিত: ২৩:০৮, ২৪ জানুয়ারি ২০২১

থেমে গেল কিংবদন্তি সাংবাদিক ল্যারি কিংয়ের কণ্ঠ

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ মার্কিন চ্যানেল সিএনএনের ‘ল্যারি কিং লাইভ’ যার কণ্ঠে মোহাবিষ্ট ছিল বাংলাদেশের মানুষও, সেই ল্যারি কিং আর নেই। খ্যাতনামা এই টিভি ব্যক্তিত্ব ৮৭ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শনিবার মারা গেছেন। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে মৃত্যুর কোন কারণ পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি। খবর গার্ডিয়ানের। সিএনএন জানিয়েছে, ল্যারি কিংয়ের ফেসবুক পাতায় তার মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে। একটানা ২৫ বছর সিএনএনে ‘ল্যারি কিং লাইভ’ টক শোটি চালিয়ে এসেছিলেন ল্যারি কিং। ৬৩ বছরের পেশাগত জীবনে রেডিও, টেলিভিশন ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে হাজার হাজার সাক্ষাতকার তিনি নিয়েছিলেন। সেলিব্রেটিদের নিয়ে আলোচনা করতে করতে এক পর্যায়ে ল্যারি কিং নিজেই সেলিব্রেটি হয়ে ওঠেন। করোনা উপগর্স দেখা দেয়ায় তাকে লস এ্যাঞ্জেলসের কেডারস-সিনাই সেন্টার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ল্যারি কিং তার অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থেকে বিদেশী রাষ্ট্রনেতা, সেলিব্রেটি, বিতর্কিত ব্যক্তিত্বসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ অংশ নিতেন। তিনি খুব ছোট সরাসরি ও সহজ প্রশ্ন করতেন। তার সহজাত স্বাক্ষাতকারের জন্য তিনি সেলিব্রেটি খেতাব পান। তার কর্মজীবনে তিনি ৩০ হাজারেরও বেশি স্বাক্ষাতকার নিয়েছেন। ৯০ এর দশকে তার ল্যারি কিং শোর একদিনের দর্শক থাকতেন ১৫ লাখের বেশি মানুষ। তিনি যেসব ব্যক্তিত্বদের সাক্ষাতকার নিয়েছেন তাদের মধ্যে ফিলিস্তিনী প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাত, দক্ষিণ অফ্রিকার অবিসংবাদিত নেতা নেলসন মেন্ডেলা, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ছিলেন। এছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন থেকে শুরু করে ডোনাল্ড ট্রাম্প পর্যন্ত প্রতিটি প্রেসিডেন্টের সাক্ষাতকার নেন। সেলিব্রেটি ফ্রাঙ্ক সিনাত্রা থেকে লেডি গাগাও তার অনুষ্ঠানে যোগ দেন। অস্ট্রিয়ান বংশোদ্ভূত মার্কিন অর্থোডক্স ইহুদি অভিবাসী মা-বাবার ঘরে ১৯৩৩ সালের ১৯ নবেম্বর লরেন্স হার্ভে জিংগার জন্ম নেন। পরে তিনিই হয়ে ওঠেন ল্যারি কিং। তার বাবা এ্যারোন ছিলেন রেস্তরাঁর মালিক ও মা জেনি ছিলেন পোশাক শ্রমিক। ব্যক্তিজীবনে আটবার বিয়ে করেন কিং। ২০১৯ সালের আগে তার সঙ্গে সাতজনের বিচ্ছেদ হয়। ২০১৯ সালে সর্বশেষ শন সাউথউইক নামে এক নারীকে বিয়ে করেন। বিভিন্ন সময়ে তিনি রোগে ভুগেছিলেন। ১৯৮৭ সালে তার প্রথম হার্ট এ্যাটাক হয়। ২০১৭ সালে লাং ক্যান্সার ধরা পড়ে। ২০১৯ সালে এ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি স্ট্রোক হয়। তার পাঁচ সন্তানের মধ্যে দুইজন গতবছরের আগস্ট মাসে মাত্র পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে মারা যায়। তারা হলেন ছেলে এ্যান্ডি (৬৫) হার্ট এ্যাটাক ও মেয়ে চাইয়া (৫১) লাং ক্যান্সারে মারা যান। ওরা মিডিয়া থেকে এক বিবৃতিতে কিংয়ের মৃত্যুর খবর ঘোষণা করা হয়। তারপর তারা বলে, কিংয়ের সাক্ষাতকার ২০ ও ২১ শতাব্দীতে একটি ঐতিহাসিক রেকর্ড হয়ে থাকবে। বিবৃতিতে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয়। কিংয়ের জীবিত সন্তানদের মধ্যে ল্যারি জুনিয়র, চান্স, ক্যানন ও পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পরে কিংয়ের শেষ কৃত্যানুষ্ঠানের সময় জানিয়ে দেয়া হবে। এই সময় পরিবারের কাউকে কিছু জিজ্ঞেস করে বিরক্ত না করার জন্য অনুরোধ জাননো হয়েছে।
×