ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পুরাকীর্তি ‘মঙ্গলাবাস’ সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন

প্রকাশিত: ০০:৪৩, ২৯ ডিসেম্বর ২০২০

পুরাকীর্তি ‘মঙ্গলাবাস’ সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন

জবি সংবাদদাতা ॥ পুরান ঢাকার ফরাশগঞ্জের মোহিনী মোহন দাস লেনে নান্দনিক কারুকার্যখচিত ব্রিটিশ যুগের প্রাসাদ ‘মঙ্গলাবাস’। ভবনটি বতর্মানে কবি নজরুল সরকারী কলেজের ছাত্রাবাস (শহীদ শামসুল আলম ছাত্রাবাস) হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সম্প্রতি ভবনটি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। জমিদার যতিন্দ্র কুমার সাহার শতবর্ষী এই রাজকীয় ভবনটি যথাযথ সংস্কার ও সংরক্ষণের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। সোমবার সূত্রাপুরের ৩নং মোহিনী মোহন দাস লেনে অবস্থিত ভবনটির সামনে আরবান স্টাডি গ্রুপ এই মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে। মানববন্ধন চলাকালে কবি নজরুল সরকারী কলেজের কয়েক শিক্ষার্থী কর্মসূচী বন্ধ করার চেষ্টা করে। পরে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে তারা সেখান থেকে চলে যায়। শিক্ষার্থীরা বলেন, হলের অভ্যন্তরে বহিরাগতরা কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া মানববন্ধন করায় আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি। আরবান স্টাডি গ্রুপের অভিযোগ, গত সপ্তাহ থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ ভবনটি সংস্কারের নামে এর সামনের অংশজুড়ে চুন-সুরকির আস্তর ফেলে দিয়ে ঢালাওভাবে নতুন করে সিমেন্ট প্লাস্টারের কাজ শুরু করেছে। ফলে একদিকে যেমন চুন-সুরকির এই ভবনটির কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়বে তেমনি এর মূল অবয়বের নান্দনিক গুরুত্ব হারিয়ে যাবে। সংগঠনটি জানায়, জমিদার যতিন্দ্র কুমার সাহার শতবর্ষী রাজকীয় ভবন মঙ্গলাবাস কারুকার্য খচিত রেলিং, রঙ্গিন কাঁচের শার্শি সংবলিত ইউরোপীয় নিও ক্লাসিক্যাল স্টাইলে নির্মিত এই অনন্য সুন্দর স্থাপনাটির বিভিন্ন অংশে কালের আবর্তে আস্তর ক্ষয়ে যেয়ে এক অদ্ভুত নান্দনিকতার সৃষ্টি করেছে। স্থাপত্যিক ও নান্দনিক বৈশিষ্ট্যের জন্য ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাটি শিল্প-সংস্কৃতি অঙ্গনে বিশেষভাবে সমাদৃত । সংগঠনটির প্রধান নির্বাহী তাইমুর ইসলাম দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন, গত বুধবার বিষয়টি জানার পরে গত বৃহস্পতিবার সংগঠনের পক্ষ থেকে কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হলে এক সপ্তাহের জন্য কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এই সময়ের মধ্যে আরবান স্টাডি গ্রুপের সহযোগিতায় ভবনটির ঢালাওভাবে না করে সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দিষ্ট অংশ নির্বাচন করে একটি পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে অজ্ঞাত কারণে একদিন কাজ বন্ধ থাকার পর আবার কাজ শুরু করা হয়। এর পর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও এখনও পুরোদমে কাজ চলছে। এতে ঐতিহ্যবাহী ভবনটি তার নান্দনিক গুরুত্ব হারাতে বসেছে। সংগঠনের কার্যনির্বাহী পরিচালক শামিম আরা দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন, ইট সুরকির ভবনটি যদি বালু সিমেন্টের প্লাস্টার করা হয়। তবে ভবনটি আস্তে আস্তে ভিত্তিসহ অন্যান্য অবকাঠামো দুর্বল হয়ে পড়বে। তাই আমরা কলেজ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছি আন্তর্জাতিক পুরাকীর্তি কোড মেনে ভবনটি সংস্কার করেন।
×