ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

১৪ দলের ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় দাবি

রাষ্ট্রদ্রোহী রাজনৈতিক মোল্লাদের দ্রুত আটক করে সাজা দিতে হবে

প্রকাশিত: ২২:০৩, ১৪ ডিসেম্বর ২০২০

রাষ্ট্রদ্রোহী রাজনৈতিক মোল্লাদের দ্রুত আটক করে সাজা দিতে হবে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যের ওপর আঘাত মানে পুরো জাতি, স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধানের ওপর আঘাত। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে আঘাত হেনে যারা বাঙালী সংস্কৃতি ও বাঙালী জাতিসত্তার ওপর আঘাত হেনেছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে সেই সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুরকারী রাষ্ট্রদ্রোহী রাজনৈতিক মোল্লারা সংবিধানের বিরুদ্ধে এবং বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করে যে অন্যায় করেছে, তার প্রতিকার হিসেবে তাদের গ্রেফতার করে দ্রুত বিচারের আওতায় এনে সাজা দিতে হবে।’ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস স্মরণে রবিবার কেন্দ্রীয় ১৪ দল আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে জোটভুক্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা এ দাবি জানান। সভায় সভাপতির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের ওপর আঘাত মানে জাতিসত্তার ওপর আঘাত, দেশের সংস্কৃতি, শিল্প-কর্ম ও বাঙালীর ঐতিহ্যের ওপর আঘাত। দেশের অগ্রগতি ও উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে আবারও নতুন ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করছে স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক অপশক্তি। বিজয়ের পূর্বক্ষণে যারা জাতির মেধাবী সন্তানদের হত্যা করে জাতিকে মেধাশূন্য করতে চেয়েছিল, সেই ষড়যন্ত্রের পথ ধরে এখনও তারা সক্রিয় উল্লেখ করে প্রবীণ এই নেতা আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থান ঘটে। এই স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিকে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা দেয় জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়া। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে আঘাত হেনে যারা বাঙালী সংস্কৃতি ও বাঙালী জাতিসত্তার ওপর আঘাত হেনেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে সেই সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের দেশ, আমরা সবাই ধর্মে বিশ্বাস করি। আমরা ধর্মকর্ম করি। কিন্তু তার মানে এই না ধর্মন্ধতার মধ্য দিয়ে আমাদের বিপথগামী করা যাবে বা বিপথগামী করার চেষ্টা হলে এটা আমরা মেনে নেব। এটা আমরা কিছুতেই মেনে নিতে পারি না, এটা মেনে নেব না। হেফাজতের যে নেতারা আজকে আন্দোলন করছেন তাদের নাকের ডগায় চট্টগ্রামে কিন্তু ৩০ বছর ধরে জিয়াউর রহমানের ভাস্কর্য। সেটি নিয়ে তাদের ভ্রুক্ষেপ নেই, কথাবার্তা নেই। বিভিন্ন মাদ্রাসায় শিক্ষকরা যেভাবে ছাত্রীদের সম্ভ্রমহানি করছে, সে ব্যাপারে তাদের কোন বক্তব্য নেই। আওয়ামী লীগের অপর উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সংবিধানবিরোধীদের সম্পর্কে দেশের মানুষকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ আজকে এগিয়ে যাচ্ছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর যতগুলো স্বপ্ন ছিল যেটা তিনি পূরণ করে যেতে পারেননি, তারই কন্যা শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর প্রত্যেকটা স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে চলেছেন। বাংলাদশে আজ পৃথিবীতে উন্নয়নের রোল মডেল। বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকারীদের উত্তসূরীরাই ভাস্কর্য ভাঙ্গার সঙ্গে জড়িত উল্লেখ করে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, সাপের মুখে চুমু দিলেও সাপ ছোবল মারে, এটা খুব সাধারণ কথা। কিন্তু সাপ ছোবল মারা ভোলে না। জামায়াত পেছন থেকে সংগঠিত হচ্ছে, সুতরাং জামায়াত এখানে রয়েছে। এখানে হেফাজতকে যদি আমরা মনে করি শুধুই একটা অরাজনৈতিক সংগঠন তাহলে ভুল করব। এদের সঙ্গে কোন আপোস নয়, হতে পারে না। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য গুঁড়িয়ে ফেলার হুমকি ছেড়েছে। এর মধ্যে দিয়ে তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, ইতিহাস-ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। এই চিহ্নিত রাজনৈতিক মোল্লারা তারা ক্ষমার অযোগ্য। তাদের প্রতি কোনভাব প্রদর্শন করলে আবার আমাদের বিপদেই পড়তে হবে। তারা আবার পেছন থেকে ছোবল মারবে। তাই কোন রাজনৈতিক মোল্লার ফতোয়াবাজিতে নয়, সংবিধান দিয়েই দেশ চলবে।
×