ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রায়ালের মাঝ পর্যায়ে চীনের ভ্যাকসিনও সফল

প্রকাশিত: ২২:৫৮, ১৯ নভেম্বর ২০২০

ট্রায়ালের মাঝ পর্যায়ে চীনের ভ্যাকসিনও সফল

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ইরানে শনিবার থেকে লকডাউন শুরুর ঘোষণা দেয়া হয়েছে। করোনা সংক্রমণের এক বছর পর ১৩ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হলো। আর ইউরোপ-আমেরিকার পর ট্রায়ালে চীনের ভ্যাকসিনও ‘সফল’। ফের লকডাউনে যাচ্ছে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া। যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাস টিকা সরবরাহ শুরু ফাইজারের। খরব বিবিসি, সিএনএন, আলজাজিরা, রয়টার্স ও ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের। সারাবিশে^ বুুধবার পর্যন্ত ৫ কোটি ৬২ লাখ ৫০ হাজার ২৭০ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ১৩ লাখ ৪৯ হাজার ৩৯৯ জন। সুস্থ হয়েছেন তিন কোটি ৯১ লাখ ৬৫ হাজার ৫১৭ জন। এখনও চিকিৎসাধীন আছেন এক কোটি ৫৬ লাখ ৪৫ হাজার ৬১০ জন। যাদের মধ্যে এক লাখ ৭৮৭ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ লাখ ৪৬ হাজার ৬৫৪ জনের করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। একদিনে মারা গেছেন ১০ হাজার ৮১৬ জন। মধ্যপর্যায়ের ট্রায়ালে সফলতা পেয়েছে চীনের তৈরিকৃত করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনটি। এ ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করা গবেষকরাই এমন দাবি করছেন। গবেষকরা বলছেন, এ ট্রায়ালে ৭০০ মানুষের ওপর কাজ করা হয়েছে। যেখানে সিনোভেক বায়োটেকের তৈরিকৃত করোনার ভ্যাকসিনটি দ্রুত ইমিউন তৈরিতে সক্ষম হয়েছে। ইউরোপ-আমেরিকার তৈরিকৃত ভ্যাকসিনগুলোর ৯০ শতাংশের বেশি কার্যকারিতার প্রতিবেদন প্রকাশের পরই এমন ঘোষণা দিয়েছেন চীনের গবেষকরা। যদিও বড় পরিসরেই ট্রায়াল হয়েছে ইউরোপ-আমেরিকার ভ্যাকসিনগুলোর। সেক্ষেত্রে ৭০০ মানুষের ওপর চালানো এ ট্রায়াল তুলনামূলক কমই বলা চলে। বিশ্বে করোনায় একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু ॥ বিশ্বে মহামারী করোনায় সবচেয়ে প্রাণঘাতী দিন ছিল মঙ্গলবার। ওইদিন ১০ হাজার ৮১৬ জন কোভিড-১৯ রোগী প্রাণ হারিয়েছেন। এর আগে একদিনে এত মৃত্যু দেখেনি বিশ্ব। শুধু মৃত্যু নয় চলতি মাসের বেশিরভাগ দিনই দৈনিক আক্রান্তের রেকর্ড হয়েছে। শঙ্কা করা হচ্ছে, পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, শীতের আগমনে বৈশ্বিক করোনা প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্র যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্ত ও মৃত্যু বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্য চলতি মাসে রেকর্ড করোনা সংক্রমণ প্রত্যক্ষ করেছে। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয় দুই আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়ার দেশগুলোতেও ভাইরাসটির সংক্রমণ এখন উর্ধমুখী। এর আগে বিশ্বে একদিনে করোনায় সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছিল গত ৪ নবেম্বর; ১০ হাজার ৭৩৩ জন। আর এই ভাইরাসটিতে সবচেয়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র। সবশেষ হিসাব বলছে, দেশটিতে এ পর্যন্ত এক কোটি ১৩ লাখ ৮০ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। ইরানে ফের লকডাউন ॥ করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় শনিবার থেকে রাজধানী তেহরানসহ ১৫০ শহরে লকডাউন কার্যকর করার ঘোষণা দিয়েছে ইরান সরকার। আবার মঙ্গলবার থেকে র‌্যাপিড এ্যান্টিজেন টেস্ট কিটের উদ্বোধন করা হয়েছে। এই কিটের সাহায্যে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে করোনা রোগী শনাক্ত করা সম্ভব হবে। ব্যাপক সংখ্যায় এই কিট উৎপাদনের কাজও শুরু করেছে ইরান। র‌্যাপিড এ্যান্টিজেন টেস্ট কিটের উদ্বোধনের পর রাজধানী তেহরানের করোনা মোকাবেলা বিষয়ক টাস্কফোর্সের প্রধান আলি রেজা দাবি করেন, র‌্যাপিড এ্যান্টিজেন টেস্ট কিট তৈরির মাধ্যমে ইরান বিশ্বের শীর্ষ পাঁচ দেশের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। তিনি আরও জানান, বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও ব্রিটেনের কাছেই কেবল এই প্রযুক্তি ছিল। লকডাউনে যাচ্ছে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া ॥ করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ ঠেকাতে ৬ দিনের ‘কঠোর’ লকডাউনে যাচ্ছে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া। দেশটির এ রাজ্যে গত রবিবার (১৫ নবেম্বর) একজনের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর এ পর্যন্ত ৩৬ জন শনাক্ত হয়েছেন। এটি গত ৬ মাসের মধ্যে রাজ্যটিতে স্থানীয়ভাবে প্রথম কমিউনিটি সংক্রমণ। এ বিষয়ে রাজ্যের কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘শুরুতেই এর সংক্রমণ রোধে সার্কিট ব্রেকার ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন ছিল।’ তবে ৩৬ জনের আক্রান্তের খবরে ‘সার্কিট ব্রেকার’ লকডাউনে যাওয়াকে ছোট সমস্যার বড় সমাধান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বুধবার (১৮ নবেম্বর) মধ্যরাত থেকে এ লকডাউন কার্যকর হবে। মাত্র এক সপ্তাহ আগেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ প্রতিহত করতে এর প্রতিবেশী রাজ্য ভিক্টোরিয়াতেও লকডাউন জারি করা হয়। যদিও করোনার শুরু থেকেই অস্ট্রেলিয়া এর প্রতিরোধে যথার্থই ভূমিকা রেখেছিল। দেশটির রাজ্যেগুলোর প্রধানরাও নিয়েছিলেন কার্যকরী পদক্ষেপ। ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেশটিতে বন্ধ রাখা হয়েছিল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সীমান্ত এলাকাসহ জনসমাগম। এ বিষয়ে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার রাজ্য প্রধান স্টেপেন মার্শাল বলেছেন, ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আবারও চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। এটার (করোনার দ্বিতীয় ঢেউ) শুরুতেই আমাদের সার্কিট ব্রেকার প্রয়োজন। বয়স্ক, অসহায়সহ আমাদের পুরো সম্প্রদায়কে রক্ষা করতে আমাদের নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। করোনার টিকা সরবরাহ শুরু ॥ যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাস টিকার সরবরাহ শুরু করেছে ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি ফাইজার। প্রথম ধাপে চারটি অঙ্গরাজ্যে রোড আইল্যান্ড, টেক্সাস, নিউ মেক্সিকো এবং টেনেসি অঙ্গরাজ্যে তাদের তৈরি টিকার পরীক্ষামূলক সরবরাহের পাইলট কর্মসূচী চালু করেছে। এই সরবরাহ প্রক্রিয়ায় সমস্যা হচ্ছে তাপমাত্রা। ফাইজার উদ্ভাবিত টিকা সংরক্ষণ করতে হয় মাইনাস ৭০ ডিগ্রী সেলসিয়াসে। অন্য সাধারণ টিকা রাখা হয় ২ থেকে ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াসে। এক্ষেত্রে ফাইজারের এই টিকা সাধারণ ওষুধ বিতরণকারীদের কাছে রাখা কঠিন হয়ে পড়তে পারে। ফাইজার এক বিবৃতিতে বলেছে, টিকার পাইলট কর্মসূচী চালু হয়েছে। এতে আমরা আশা করতে পারি এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অন্য অঙ্গরাজ্যগুলো এবং আন্তর্জাতিক সরকারগুলোর জন্য এই সরবরাহ একটি মডেল হিসেবে কাজ করবে। এরই মধ্যে ফাইজারের টিকা শতকরা ৯০ ভাগ সফল বলে প্রাথমিক তথ্যে বলা হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও স্বীকৃতি দেয়া হয়নি এই টিকা বা অন্য কোন টিকা।
×