ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

মেয়ের জন্য জুতা কিনতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন মা

প্রকাশিত: ২২:৫৬, ১২ নভেম্বর ২০২০

মেয়ের জন্য জুতা কিনতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন মা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মেয়ের বায়না মিটাতে গিয়ে লাশ হয়ে ঘরে ফিরলেন এক হতভাগিনী মা। মেয়ের পছন্দের জুতা কিনতে যাচ্ছিলেন বাজারে। সঙ্গে মেয়েও ছিল। আর তাই কাল হলো মা আর মেয়ের জন্য। জুতা কেনা হলো না। যাওয়ার সময়ই মেয়ের সামনেই রাস্তা পার হওয়ার সময় ঘাতক বাস কেড়ে নিল মায়ের প্রাণ। পুলিশ চালকসহ ঘাতক বাসটিকে আটক করেছে। বুধবার বেলা এগারোটার দিকে মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনাটি ঘটে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল মা ও শিশু হাসপাতালের সামনের রাস্তা মুহূর্তেই রক্তে লাল হয়ে যায়। ভিড় জমে যায় শত শত মানুষের। মায়ের সঙ্গে থাকা মেয়ে জান্নাত আক্তার (১৪) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অঝোরে কাঁদছিলেন। বলছিলেন সেই দুর্ঘটনার কথা। তিনি জানান, আমার সামনে পরীক্ষা। আবার শীতও আসছে। স্যান্ডেল পরলে শীত শীত লাগে। তাই মাকে বলেছিলাম আমার জন্য এক জোড়া জুতা কিনে দিতে। মা আমার কথায় রাজি হন। আমার পছন্দের জুতা কিনতে আমাকেও সঙ্গে নিয়ে যান। আমরা মাতুয়াইল মা ও শিশু হাসপাতালের সামনের রাস্তা পার হচ্ছিলাম। এমন সময় একটি যাত্রীবাহী বেপরোয়া গতির বাস মাকে ধাক্কা দেয়। চিৎকার দিয়ে মা রাস্তায় পড়ে যায়। মুহূর্তেই পুরো রাস্তা রক্তে লাল হয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই আমার মা আমাকে ছেড়ে চলে যান। বলেই ডুকরে কেঁদে ওঠেন। এ ঘটনায় সেখানে শত শত মানুষ ভিড় করেন। তারা দ্রুত মাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। ততক্ষণে সব শেষ। চিকিৎসক নেয়ার পর পরই মাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত মরিয়ম বেগমের (৪৪) স্বামী নুর ইসলাম বলেন, তিনি পেশায় চালক। আমার মেয়ের সামনে পরীক্ষা। তার মেয়ে স্থানীয় একটি স্কুলের ছাত্রী। মেয়ের জন্য শনিরআখড়া মার্কেটে যাচ্ছিল জুতা কিনতে। সেই জুতা কেনাই কাল হলো আমাদের জন্য। বলেই কেঁদে ফেলেন তিনি। যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামসুল আলম জনকণ্ঠকে জানান, নিহতের বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর জেলার চরমটোয়া গ্রামে। ঢাকা থেকে নরসিংদীগামী মেঘালয় পরিবহনের ঘাতক বাসটিকে চালকসহ জব্দ করা হয়েছে। চালকের নাম মোস্তফা মিয়া (৫০)।
×