ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

জেলহত্যা দিবসে চার জাতীয় নেতাকে স্মরণ

প্রকাশিত: ২১:৩১, ৪ নভেম্বর ২০২০

জেলহত্যা দিবসে চার জাতীয় নেতাকে স্মরণ

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ জেলহত্যা দিবসে গভীর শোক আর শ্রদ্ধায় রাজশাহীতে জাতীয় চার নেতাকে স্মরণ করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার দিনভর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠন নানা কর্মসূচী পালন করে। রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সকালে দলীয় কার্যালয়ের পাশে স্বাধীনতা চত্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে নগরীর কাদিরগঞ্জে জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে সেখানে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা শেষে জাতীয় চার নেতার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। এসব কর্মসূচীতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল, কামারুজ্জামানের ছেলে ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী-৪ আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি আক্তার জাহান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, সাবেক সহসভাপতি শাহীন আক্তার রেনী, শফিকুর রহমান বাদশা, আওয়ামী লীগ নেতা আসলাম সরকার, মীর ইশতিয়াক আহমেদ লিমনসহ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। চট্টগ্রাম স্টাফ রিপোর্টার চট্টগ্রাম অফিস থেকে জানান, একাত্তরের পরাজিত শক্তি ’৭৪ সালে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পথ প্রশস্ত করেছিল। সেই ধারাবাহিকতা অশুভ সিন্ডিকেট এখনও দেশকে অস্থিতিশীল করতে ভোগ্যপণ্যের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করছে। তারা উন্নয়নের মহাসড়কে চলমান বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকাকে রুদ্ধ করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চায়। ঐক্যবদ্ধভাবে সে অপচেষ্টা প্রতিহত করতে হবে। মঙ্গলবার জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কথাগুলো বলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী। থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম মিলনায়তনে আয়োজিত সভায় তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন ষড়যন্ত্র নির্মূলে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেন তখনই তাঁকে সপরিবারে হত্যা করে ষড়যন্ত্রকারীরা। এর পর থেকে দেশে শুরু হয় রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশ পরিচালিত হতে থাকে পাকিস্তানী ভাবধারায়। মুক্তিযুদ্ধের সকল অর্জনকে একে একে বিসর্জন দিয়ে জিয়া-এরশাদ-খালেদা জিয়া পাকিস্তানী কায়দায় দেশ শাসন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের জনগণ ছিল নিজ দেশে পরবাসী। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ জাতি মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। এই উন্নত শির আর কখনও নত হবে না। খুলনা স্টাফ রিপোর্টার খুলনা অফিস থেকে জানান, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি) শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসন ভবনের ৪র্থ তলায় সম্মেলন কক্ষে ওয়েবিনারে শোকাবহ জেলহতা দিবস উপলক্ষে ‘জেলহত্যা দিবস : পিছনে ফিরে দেখা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা মঙ্গলবার বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামানের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সরকারের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা এমপি সিমিন হোসেন রিমি। সিমিন হোসেন রিমি বলেন, বাংলাদেশের স্থপতি, মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলাদেশ অবিচ্ছেদ্য। জাতীয় চার নেতা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্ত সহচর, আপোসহীন নেতৃত্ব। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের সঙ্গে কখনই তারা বেঈমানী করেননি। তিনি আবেগজড়িত কণ্ঠে পঁচাত্তরের পনেরোই আগস্টের শেষ রাতের এবং এরপর থেকে ৩ থেকে ৫ নবেম্বরের সেই শোকাবহ, দুর্বিসহ এবং ভয়াবহ দিনগুলোর স্মৃতি তুলে ধরে বলেন, জাতীয় চার নেতার নির্মম হত্যাকা- ছিল পনেরোই আগস্টে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে নৃশংস হত্যাকা-ের ধারাবাহিকতা। এরপর থেকে অনেক বছর পর্যন্ত এ দেশের মানুষ বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার নাম মুখে নিতে পারতেন না। তিনি আরও বলেন, দেশী-বিদেশী নীল নক্সায় নৃশংস পনেরোই আগস্ট ও জেলহত্যাকা-ের পর দেশকে পাকিস্তানী ভাবধারায় যারা ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছিল তাদের সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ আজ বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, অগ্রগতির পথে রয়েছে। বরিশাল স্টাফ রিপোর্টার বরিশাল থেকে জানান, বরিশালে জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ ও স্মরণসভার মধ্যদিয়ে তাদের স্মরণ করেছে বিসিসি মেয়র এবং মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা। মঙ্গলবার সকাল নয়টায় নগরীর শহীদ সোহেল চত্বরে দলীয় কার্যলয়ের সামনে জাতীয় চার নেতার অস্থায়ী প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করার মাধ্যমে প্রথম শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। এরপর পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুস। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে আওয়ামী লীগ ও তার সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সবশেষে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুসের সভাপতিত্বে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। সিলেট স্টাফ রিপোর্টার সিলেট অফিস থেকে জানান, জেল হত্যা দিবসে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খানের পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন, অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট শাহ মোশাইদ আলী,সাইফুল আলম রুহেল, এ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান,ফারুক আহমদ, কবির উদ্দিন আহমদ, এ্যাডভোকেট রঞ্জিত সরকার, সাবেক মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নাজনীন হোসেনসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সিরাজগঞ্জ স্টাফ রিপোর্টার সিরাজগঞ্জ থেকে জানান, শহীদ এম মনসুর আলীর পৌত্র সাবেক এমপি প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয় জেলহত্যা দিবসে তার দাদার স্মৃতিচারণ করলেন। কাজিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত জেলহত্যা দিবসের আলোচনায় তিনি আবেগাপ্লুত কণ্ঠে তার পিতা জাতীয় নেতা মোহাম্মদ নাসিম এবং দাদু শহীদ এম মনসুর আলীর রাজনীতিতে অবদানের কথা শোনালেন নতুন প্রজন্মকে। এর আগে তিনি উপজেলা চত্বরে জাতীয় চার নেতাসহ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। এ ছাড়াও সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সকল সংগঠন ও বিভিন্ন উপজেলায় ভাবগম্ভীর পরিবেশে জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, কোরানখানি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন অধ্যাপক ডাঃ হাবিবে মিল্লাত মুন্না এমপি, আবু ইউসুফ সূর্য্য, কেএম হোসেন আলী হাসান, আব্দুস সামাদ তালুকদার প্রমুখ। জেলা প্রশাসন এ দিবসে কর্মসূচী পালন করে।
×