ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সাকিবদের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হবে না বিসিবির

প্রকাশিত: ২৩:২৯, ২২ অক্টোবর ২০২০

সাকিবদের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হবে না বিসিবির

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রিকেটারদের আন্দোলনের এক বছর হয়ে গেছে। এ আন্দোলনে যে দাবিগুলো ছিল, তার সব এখনও পূরণ হয়নি। আবার অনেকখানি হয়েছেও। এই আন্দোলনে ক্রিকেটারদের সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সম্পর্কের কোন অবনতি কী হয়েছে? বিসিবির সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন মনে করেন, সম্পর্কে কোন অবনতি হবে না। বিসিবি নানা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অসন্তোষ থেকেই এই আন্দোলন করেছিলেন ক্রিকেটাররা। নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। সঙ্গে থাকেন বাংলাদেশ ওপেনার তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় সব ক্রিকেটার। তবে আন্দোলনে রাখা হয়নি দেশের সেরা অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাকে। ঘরোয়া লীগের ক্রিকেটাররাও আন্দোলনের সঙ্গে যোগ দেন। দেশের ক্রিকেটকে সঠিক পথে ফেরাতে শুরুতে ১১ দফা দাবি দেয়া হয়। পরে আরও দুই দফা বাড়ানো হয়। দাবি না মানা পর্যন্ত সব ধরনের ক্রিকেট বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বোর্ডের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন ক্রিকেটাররা। ক্রিকেটারদের সঙ্গে এরপরও সম্পর্ক খারাপ হবে না বলে মনে করেন বিসিবির সিইও। তিনি বলেছেন, ‘আমরা সবসময় তাদের সম্মান করি এবং ক্রিকেটারদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের অবনতি হবে না। কারণ ওরা বোর্ডের মূল অংশীদার। বোর্ড অভিভাবকের মতোই সব দায়িত্ব গ্রহণ করবে। আমি মনে করি না যে আমাদের মাঝে কোন গ্যাপ থাকবে। তাদের কিছু বিষয় নিয়ে সমস্যা ছিল যেগুলো আমরা উত্থাপন করেছি। খেলোয়াড় এবং বোর্ডের মধ্যে সম্পর্ক সবসময়ই আন্তরিক।’ নিজামউদ্দিন আরও জানান, ক্রিকেটাররা নিজেদের যে কোন সমস্যা চাইলেই বোর্ডকে জানাতে পারবেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সব ধরনের মাধ্যম খোলা রেখেছি। তারা যেভাবে চায় সেভাবেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে। আগের চেয়ে এখন বেশি ক্রিকেটার বোর্ডের প্রতিনিধিত্ব করার কাজ করছে। সংবিধান মোতাবেক ক্রিকেটারদের প্রতিনিধিও রয়েছে। বোর্ডের সবার কাছে পৌঁছতে পারে ক্রিকেটাররা। আপনারা সবাই ভাল করেই জানেন যে আমাদের বোর্ড সভাপতির সঙ্গে খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত সম্পর্কও রয়েছে।’ ক্রিকেটাররা যে দাবিগুলো তুলেছিলেন, তার মধ্যে ক্রিকেটারদের হাতে ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ বা কোয়াবের নেতৃত্ব নির্বাচনের অধিকার দেয়া, ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে সুনির্দিষ্ট পারিশ্রমিক এবং অন্যান্য বিধিনিষেধ উঠিয়ে নেয়া, আগের নিয়মে বিপিএল আয়োজন এবং দেশীয় ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক বৃদ্ধি করা, প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটের ম্যাচ ফি ১ লাখে উন্নীত করা এবং প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটারদের বেতন ৫০% বৃদ্ধি। ১২ মাস কোচ, ট্রেনিং এর নিশ্চয়তা দেয়া, প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে মানসম্মত বল ব্যবহার, দৈনিক ভাতা বাড়ানো, ক্রিকেটারদের যাতায়াতের বিমান ভাড়া, হোটেলে জিম ও সুইমিংপুল এবং ক্রিকেটারদের বাস উন্নয়ন করার দাবি, কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ক্রিকেটারের সংখ্যা বাড়িয়ে ৩০ করা এবং একইসঙ্গে চুক্তির আওতায় বেতন বৃদ্ধি করা, মাঠকর্মী, স্থানীয় কোচ, আম্পায়ার, ফিজিও ও ট্রেনারদের সম্মানী বৃদ্ধি করা, প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটের মতোই আরও একটি করে ৫০ ওভার ও ২০ ওভারের ঘরোয়া টুর্নামেন্ট আয়োজন, ঘরোয়া ক্রিকেটের জন্য নির্ধারিত সময়সূচী, প্রিমিয়ার লীগের বকেয়া টাকা সময়মতো পরিশোধ করা, যে কোন ২টি বিদেশী ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগ খেলার বিধিনিষেধ শিথিল করা, বোর্ডের রাজস্বের ভাগ দিতে হবে ক্রিকেটারদের এবং নারী ক্রিকেটার ও পুরুষদের সমান সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। এই দাবিগুলোর মধ্যে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগ আগের মতো আয়োজন করা, ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক বিপিএল করা, প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি বাড়ানো, লীগগুলোর পাওনা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দেয়া, বিদেশী দুই লীগের বেশি খেলায় শিথিল করার দাবিগুলো ছাড়া আর কোন দাবিই পূরণ হয়নি এখনও। করোনাভাইরাসের কারণে অবশ্য খেলাই ঠিকমতো হয়নি। আবার সব ঠিকমতো হলে তখন দেখা যাবে, দাবিগুলোর সবকটি ঠিকমতো পূরণ হয় কিনা। তবে আন্দোলনের এক বছরেও ক্রিকেটারদের সঙ্গে যে বিসিবির সম্পর্কে কোন অবনতি হয়নি, তা ক্রিকেটারদের সঙ্গে বিশেষ করে বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের সম্পর্কের দিকে নজর দিলেই বোঝা যায়।
×