ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

জবিতে মেয়েদের প্রথম নিবাস- ‘বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল’

প্রকাশিত: ২৩:০০, ২১ অক্টোবর ২০২০

জবিতে মেয়েদের প্রথম নিবাস- ‘বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল’

মামুন শেখ, জবি ॥ ‘এসো জ্ঞানের মশাল বয়ে নিয়ে যাই আগামীর পানে’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে রাজধানী পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার গুণগত মান নিশ্চিত করার অঙ্গীকার গ্রহণ ও নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে সরকারী স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করা হয়। এদিকে মঙ্গলবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অবশেষে ১৬ তলাবিশিষ্ট একটি আবাসিক ছাত্রী হল পেয়েছে। এর মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ দিনের চাওয়া কিছুটা হলেও পূরণ হলো। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের শুভ উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান। সাড়ে ১০টায় ভার্চুয়াল প্লাটফরমে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতির বক্তব্যে ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে জগন্নাথের অতীত গৌরবময় ঐতিহ্য রয়েছে এবং এই ঐতিহ্যকে বেগবান রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার মান আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এছাড়াও দেশীয় সংস্কৃতি বিকাশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত, নাট্যকলা, চারুকলা এবং ফিল্ম এ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগ আরও কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারবে।’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, ‘প্রতি বছরই বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে যে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় সেখানে স্থানীয় জনগণ এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে মেলবন্ধনের সৃষ্টি হয়। বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে জগন্নাথের যাত্রা ২০০৫ সালে হলেও মাত্র ৭.৫ একর জমির ওপর মূলত ২০১১ সাল থেকে এটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করে। শতভাগ অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে অন্যান্য সকল সমস্যা অতিক্রিম করেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সমসাময়িক অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় এগিয়ে যাচ্ছে। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম হল ‘বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল’ এর উদ্বোধন হলো। করোনা মহামারীর পরই ছাত্রীরা হলে উঠতে পারবে। অবকাঠামোগত যে সঙ্কট রয়েছে নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনের মাধ্যমে সেটিও নিরসন হবে। প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক সহায়তায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে কেরানীগঞ্জে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০ একর (প্রায়) ভূমির অধিগ্রহণ ও উন্নয়নের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।’ জবি শিক্ষার্থীদের প্রথম হল ॥ পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অবশেষে একটি ১৬ তলাবিশিষ্ট একটি আবাসিক ছাত্রী হল পেল। এর মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ দিনের চাওয়া কিছুটা হলেও পূরণ হলো। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত প্রথম আবাসিক ছাত্রী নিবাসের নাম ‘বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল’। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব নামে নতুন ওই হলের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক মীজানুর রহমান। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে কয়েক মিনিটের হাঁটা পথে বাংলাবাজারের পাশে গড়ে তোলা হয়েছে ১৬ তলা এই আবাসিক ভবন। সরেজমিনে দেখা যায়, ২০ তলা ভিত্তির ১৬ তলা ভবনটিতে মোট ১৫৬টি কক্ষ, একটি পাঠাগার, একটি ক্যানটিন, একটি ডাইনিং রয়েছে। এ ছাড়া প্রতি তলায় সাতটি করে টয়লেট, নয়টি গোসলখানা এবং চারটি লিফটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতি কক্ষে চারজন ছাত্রীর থাকার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতি শিক্ষার্থীর জন্য আলাদা বিছানা ও টেবিল-চেয়ার রয়েছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটলে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর মেধা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে হলে ছাত্রীদের তোলা হবে বলে উপাচার্য অধ্যাপক মীজানুর রহমান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যেভাবে সিট বরাদ্দ হয়, সে নীতিমালাগুলো পর্যালোচনা করে একটা নীতিমালা তৈরি করেছেন হলের প্রভোস্ট, সে অনুযায়ী ছাত্রীরা হলে উঠবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিসে হিসেবে মোট ২০ হাজার শিক্ষার্থী এখানে লেখাপড়া করেন। যার মধ্যে আনুমানিক ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ছাত্রী আছে।’ ২০০৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা নিয়মিতই বেদখল হল পুনরুদ্ধার ও নতুন হল নির্মাণের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন।
×