ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

আসবাব কেনায় এবার ১১ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয়

প্রকাশিত: ২১:৩৫, ১২ অক্টোবর ২০২০

আসবাব কেনায় এবার ১১ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয়

নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা, ১১ অক্টোবর ॥ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত প্রকল্পের বালিশকা-ের হোতারা এখনও সক্রিয়। এবার আসবাবপত্র ক্রয়ের টেন্ডারে অনিয়ম করে সরকারের ১১ কোটি টাকা লুটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। টেন্ডারের কারসাজির পর গণপূর্ত বিভাগের সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলীকে দুদকের উপ-পরিচালক পদে পদায়ন করা হয়েছে। রূপপুর প্রকল্পের আবাসিক ১০ ভবনের আসবাবপত্র ক্রয়ের জন্য ১৯ জুলাই থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। ৯ আগস্ট দরপত্র খোলা হয়। টেন্ডারে অংশগ্রহণ করে ছয় প্রতিষ্ঠান। দরপত্র মূল্যায়নে দেখা যায়, প্রথম সর্বনিম্ন দরদাতা পারটেক্স ফার্নিচার্স ইন্ডাট্রিজ লিমিটেড। তাদের দর ছিল ৪৪ কোটি ৯২ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। দ্বিতীয় দরদাতা আরএফএল লিমিটেড। তাদের দর ছিল ৫৪ কোটি আট লাখ ১২ হাজার টাকা। তৃতীয় দরদাতা প্রতিষ্ঠান হাতিল কমপ্লেক্সের দর ছিল ৫৫ কোটি ৯০ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। তৃতীয় দরদাতা হাতিল কমপ্লেক্সকে কাজটি প্রদান করা হয়েছে। প্রথম ও তৃতীয় দরদাতার দামের পার্থক্য ছিল প্রায় ১১ কোটি টাকা। এছাড়াও টেন্ডারে অংশগ্রহণ করে এস রহমান এ্যান্ড ব্রাদার্স, আখতার ফার্নিচার্স লিমিটেড ও ব্রাদার্স ফার্নিচার্স লিমিটেড। টেন্ডার কমিটির চেয়ারম্যান পাবনা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান খন্দকার এই টেন্ডারের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি টেন্ডার কাজ যথাযথ নিয়মে সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবি করেন। এ বিষয়ে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের পরিচালক সৈকত আকবরকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটি তার বিষয় নয়, গণপূর্তের বিষয়। কারণ আবাসন বিষয়টি গণপূর্ত দেখভাল করে। আসবাবপত্র সরবরাহের এই টেন্ডার সম্পন্ন করার পরপরই নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান খন্দকারকে দুদকের উপ-পরিচালক পদে পদায়ন করা হয়েছে। এ পদায়ন রহস্যজনক বলে বিভিন্ন মহল প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি উপ-পরিচালক দুদক হিসেবে গত ১৩ সেপ্টেম্বর যোগদান করেছেন। বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজীম (যোগদান করেছেন ২ সেপ্টেম্বর) বলেন, রূপপুর প্রকল্প প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প। অতএব এখানে টেন্ডারসহ যাবতীয় কাজ সম্পর্কে তিনি অবহিত আছেন। এছাড়াও কয়েকজন মন্ত্রী এই প্রকল্পের কাজ সম্পর্কে জ্ঞাত। শাহাদাতের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ॥ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত প্রকল্পের বালিশ কেলেঙ্কারির অন্যতম হোতা ঠিকাদার শাহাদাত হোসেন যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারে সেজন্য দুদক যথাযথ কর্তৃপক্ষকে নজর রাখার অনুরোধ করেছে। গত ১ সেপ্টেম্বর আদালত থেকে জামিন পেয়ে জেল থেকে ছাড়া পান শাহাদত। দুদুক পাবনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, শাহাদাতের আইনজীবীরা গত ৩১ আগস্ট পাবনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে তার জামিনের জন্য আবেদন করেন। শুনানি শেষে পাবনা জেলা ও দায়রা জজ মকবুল আহসান তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। তড়িঘড়ি করে জামিনের আদেশ গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে পাঠালে ১ সেপ্টেম্বর রাতে কাশিমপুর কারাগার থেকে তিনি ছাড়া পান বলে জানান দুদক কর্মকর্তা। দুদকের পক্ষ থেকে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, ঠিকাদার শাহাদত হোসেন যেন দেশ ত্যাগ করতে না পারেন। এছাড়াও উচ্চ আদালতে শাহাদাতের জামিন বাতিলের জন্য দুদকের পক্ষ থেকে ‘রিভিউ পিটিশন’ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাবনা জেলা দুদকের সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন। দুদকের পক্ষ থেকে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, ঠিকাদার শাহাদাত হোসেন যেন দেশ ত্যাগ করতে না পারেন। এছাড়াও উচ্চ আদালতে শাহাদতের জামিন বাতিলের জন্য দুদকের পক্ষ থেকে ‘রিভিউ পিটিশন’ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাবনা জেলা দুদকের সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন।
×