ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

১২ বছরেও পেনশন পাননি মুক্তিযোদ্ধা পুলিশ অফিসারের পরিবার

প্রকাশিত: ২১:০৬, ৭ অক্টোবর ২০২০

১২ বছরেও পেনশন পাননি মুক্তিযোদ্ধা পুলিশ অফিসারের পরিবার

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সাবেক সহকারী পুলিশ সুপার যতীন্দ্রনাথ পোদ্দারের মৃত্যুর ১২ বছর পরেও তার পরিবার এখন পর্যন্ত পেনশনের টাকাসহ কোন সুযোগ-সুবিধা পায়নি। এ বিষয়ে মামলা করে যতীন্দ্রনাথ পোদ্দারের স্ত্রী মমতা রানী পোদ্দার মামলার অনুকূলে রায় পেলেও তিনি স্বামীর পেনশনের টাকা তুলতে পারেননি। এরই মধ্যে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বার বার দেনদরবার করেও সমস্যা সমাধান হয়নি। বর্তমানে তিনি সন্তানদের নিয়ে মানবেতর অবস্থায় সাতক্ষীরা শহরে বসবাস করছেন। গোপালগঞ্জ জেলার বাসিন্দা যতীন্দ্রনাথ পোদ্দার মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ শেষে ১৯৭২ সালের ৫ জুলাই বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে এসআই পদে যোগদান করেন। ১৯৯০ সালের ২৯ এপ্রিল পদোন্নতি পেয়ে তিনি সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে চুয়াডাঙ্গা জেলায় কর্মরত থাকেন। এর এক পর্যায়ে তিনি ও তার পরিবার সাতক্ষীরা শহরে স্থায়ী বসবাস শুরু করেন। স্ত্রী মমতা রানী পোদ্দার জানান, ২০০৬ সালের ২ মার্চ চাকরির বয়সসীমা ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ার ৩ বছর আগে তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। অথচ তার বিরুদ্ধে দীর্ঘ চাকরি জীবনে কোন ধরনের লঘুদ- বা কারাদ-ের অভিযোগ ছিল না। তিনি দীর্ঘদিন সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাকে অবসরে পাঠানোর বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের কাছে দেনদরবার করেও কোন সুফল না পেয়ে খুলনায় প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করেন (মামলা নম্বর-৬/২০০৬)। ট্রাইব্যুনাল তার পক্ষে ২০০৭ সালের ২২ নবেম্বর প্রদত্ত রায়ে অবসরে পাঠানো আইন সম্মত হয়নি উল্লেখ করে তাকে চাকরিতে পুনর্বহাল এবং বিধি মোতাবেক তার চাকরির সমস্ত সুযোগ-সুবিধা প্রদানের আদেশ প্রদান করে। আদালত রায়ে উল্লেখ করে যে, প্রতিহিংসা মূলকভাবে তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে। যা যুক্তিযুক্ত ও আইনসঙ্গত ছিল না। এরই মধ্যে ২০০৮ সালের ১৬ আগস্ট যতীন্দ্রনাথ পোদ্দার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। সরকারের কাছে দেয়া মমতা রানী পোদ্দার তার আবেদনে উল্লেখ করেন যে, সরকার প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের ওই রায়ের বিপক্ষে আপীল করেন (নম্বর ০৯/০৮)। প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল ওই আপীল খারিজ করে আগের রায় বহাল রাখেন। এদিকে পুনরায় সরকারপক্ষ সুপ্রীমকোর্টে লিভ টু আপীল (নম্বর ১১৬৩/১২) করলে তাও ২০১৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর খারিজ হয়ে যায়। ফলে আদালতের আগের আদেশসমূহ বহাল থাকে।
×