ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মোটরযানের বীমা না থাকলেও মামলা হবে না

প্রকাশিত: ০০:৩৩, ৩ অক্টোবর ২০২০

মোটরযানের বীমা না থাকলেও মামলা হবে না

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ কোন মোটরযানের বীমা করা না থাকলেও ওই মোটরযান বা তার মালিকের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া যাবে না। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে পুলিশকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ- বিআরটিএ। খবর বিডিনিউজের। বিআরটিএর কর্মকর্তারা বলছেন, ১৯৮৩ সালের মোটরযান আইনে তৃতীয় পক্ষের বীমা বাধ্যতামূলক ছিল। তবে ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইনে বীমা করা বাধ্যতামূলক নয়। বীমা করা না থাকলেও মামলা দেয়া যাবে না। ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইন কার্যকর হয়েছে ২০১৯ সালের ১ নবেম্বর থেকে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে অনেকের স্বচ্ছ ধারণা না থাকায় এখনও এই অভিযোগে মামলা দেয়া হচ্ছে। বিষয়টির সুরাহা চেয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর বিআরটিএতে একটি আবেদন করেন মোঃ স্বাধীন খান নামে একজন পরিবহন মালিক। এছাড়া ২৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতিও একই বিষয়ে বিআরটিএর কাছে আবেদন করে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএর চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার শুক্রবার বলেন, মোটরযান আইনের এ বিষয়টি নিয়ে অনেকের মধ্যে ধারণা স্পষ্ট ছিল না। নতুন আইনের বিষয়টি স্পষ্ট করার দরকার ছিল। এছাড়া পরিবহন মালিকরা আমাদের জানিয়েছেন আগের আইনের ধারায় এখনও মামলা দেয়া হচ্ছে। এ কারণেই পুলিশকে আমাদের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন বিআরটিএ চেয়ারম্যান। চিঠিতে বলা হয়, ১৯৮৩ সালের মোটরযান অধ্যাদেশের ১০৯ ধারা অনুযায়ী যানবাহনের জন্য তৃতীয় পক্ষের ঝুঁকি বীমা বাধ্যতামূলক ছিল। ওই আইনের ১৫৫ ধারায় এ জন্য দণ্ডেরও বিধান ছিল। কিন্তু ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইনের ধারা ৬০-এর ১, ২ ও ৩ উপধারা অনুযায়ী মোটরযানের জন্য বীমা বাধ্যতামূলক নয়। উপধারা ১-এ বলা হয়েছে, কোন মোটরযান মালিক বা প্রতিষ্ঠান ইচ্ছা করলে তার মালিকানায় থাকা যে কোন মোটরযানের জন্য যে সংখ্যক যাত্রী পরিবহনের জন্য নির্দিষ্ট করা তাদের জীবন ও সম্পদের বীমা করতে পারবেন। উপধারা ২ অনুযায়ী, মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠান তাদের অধীনে পরিচালিত মোটরযানের জন্য নিয়ম অনুযায়ী বীমা করবেন এবং মোটরযানের ক্ষতি বা নষ্ট হওয়ার বিষয়টি বীমার আওতাভুক্ত থাকবে। বীমাকারী উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পাবেন। উপধারা ৩-এ বলা হয়েছে, মোটরযান দুর্ঘটনায় পড়লে বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা নষ্ট হলে ওই মোটরযানের জন্য ধারা ৫৩ অনুযায়ী গঠিত তহবিলের অধীনে গঠিত আর্থিক সহায়তা তহবিল থেকে কোন ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারবেন না। আইনের বিষয়টি উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, এ ধারা অনুযায়ী তৃতীয় পক্ষের ঝুঁকি বীমা বাধ্যতামূলক নয় এবং এই আইনের অধীনে তা লঙ্ঘন হলেও কোন দণ্ডের বিধান নেই। তৃতীয় পক্ষের ঝুঁকি বীমা না থাকলে মোটরযান বা মোটরযানের মালিকের বিরুদ্ধে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ অনুযায়ী কোন মামলা দেয়ার সুযোগ নেই। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবগত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে ওই চিঠিতে। বিআরটিএর হিসাবে ২০২০ সালের আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা ৪৫ লাখ ২৩ হাজার ৬০০টি। এর মধ্যে ৩০ লাখ ৩২ হাজার ৫৫৯টি মোটরসাইকেল, যা যানবাহনের মোট সংখ্যার প্রায় দুই তৃতীয়াংশ।
×