ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২০:৪৭, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০

জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী

জাতিসংঘের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার বিশেষ অধিবেশন শুরু হয়েছে নিউইয়র্কে সর্ববৃহৎ আন্তর্জাতিক সংস্থাটির সদর দফতরে। করোনা মহামারীর কারণে এবারই প্রথম বিশ্বনেতারা সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন ভার্চুয়ালি। এবারের অধিবেশনের মূল প্রতিপাদ্য- ‘আমরা ভবিষ্যত চাই, আমাদের জাতিসংঘের প্রয়োজন : বহুপাক্ষিকতার প্রতি আমাদের সম্মিলিত প্রতিশ্রুতি পুনঃনিশ্চিত করতে।’ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এতে যোগ দিয়েছেন ভার্চুয়াল মাধ্যমে। বিশ্বের ইতিহাসে বিভিন্ন ক্রান্তিকালীন সময়ে জাতিসংঘের ইতিবাচক ভূমিকা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের জন্য বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে জাতিসংঘকে। চলমান বৈশ্বিক প্রাণঘাতী মহামারী কোভিড-১৯ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আনাকাক্সিক্ষত এই মহামারী আমাদের ২০৩০ এসডিজি এজেন্ডার লক্ষ্যকে কঠিন করে তুলেছে। চলমান মহামারীসহ বর্তমান সময়ের নানা চ্যালেঞ্জ ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বব্যাপী। সেসব সমস্যা ও সঙ্কট মোকাবেলায় বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সীমাবদ্ধতা এমনকি অক্ষমতাও প্রকাশ পেয়েছে অনেকাংশে। উদাহরণত বলা যায়, কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে আশ্রিত ১১ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থীর মিয়ানমারে পুনর্বাসনে জাতিসংঘসহ বিশ্ব নেতৃবৃন্দ তেমন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারেননি। ততোধিক শোচনীয় দুরবস্থা পরিলক্ষিত হয়েছে কোভিড-১৯ অতিমারী মোকাবেলার ক্ষেত্রে। করোনার বিরুদ্ধে কার্যকর কোন ভ্যাকসিন আজ পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি। করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় আপাত কার্যকর লকডাউনসহ আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প কারখানায় স্থবিরতা নেমে এসেছে। সে সবের বিপুল আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নেয়াও দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে বিশ্বের জন্য। এর পাশাপাশি ঘটেছে বিপুল সংখ্যক মানুষের চাকরিচ্যুতি, জীবনমানের অবনতি সর্বোপরি খাদ্য সঙ্কটের আশঙ্কা। এসব কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় জাতিসংঘসহ বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে একযোগে সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ নিতে হবে, যাতে নতুন প্রজন্মের জীবন-জীবিকাসহ কল্যাণ নিশ্চিত করা যায়। এক্ষেত্রে জাতিসংঘ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বিশ্ব খাদ্য সংস্থাসহ বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ অবশ্যই ইতিবাচক অবদান রাখতে পারে। মনে রাখতে হবে, বর্তমানে বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রতিটি দেশের অর্থনীতিই মূলত বিশ্বায়নের সঙ্গে সংযুক্ত। পরস্পর পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল। এই অবস্থায় করোনা পরবর্তী বৈশ্বিক অর্থনীতির চেহারা কি দাঁড়াবে তা কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারে না। তবে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, চরম এক মহামন্দার কবলে পড়তে যাচ্ছে বিশ্ব। এর পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী খাদ্য সঙ্কট তথা দুর্ভিক্ষের পূর্বাভাসও দিয়েছে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা। অন্তত ৩৬টি দেশে দুুর্ভিক্ষের আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করেছে সংস্থাটি। চলমান এসব চ্যালেঞ্জ সাফল্যের সঙ্গে মোকাবেলা করাই হবে জাতিসংঘের অন্যতম দায়িত্ব ও কর্তব্য।
×