বিশেষ প্রতিনিধি ॥ তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যারা এ দেশের স্বাধীনতা চায়নি, মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা পাকিস্তানের সঙ্গে কনফেডারেশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল, খন্দকার মোশতাকসহ সেই সব বর্ণচোরা ষড়যন্ত্রকারীই ১৫ আগস্টে নির্মম হত্যাকা- ঘটিয়েছে। শুধু ব্যক্তি বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারই নয়, বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও স্বাধীনতাকে হত্যার চক্রান্তেই বঙ্গবন্ধু হত্যাকা- পরিচালিত হয়।
শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মহিলা শ্রমিক লীগ আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে স্বাধীনতার ১৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে একটি অগ্রগতির উদাহরণ হয়ে উঠত, এশিয়ায় সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়ার আগে মানুষ বাংলাদেশের উন্নয়নের গল্প শুনতো, কিন্তু তাঁকে সেই সুযোগ দেয়া হয়নি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যাতে হত্যার বিচার না হয় সে জন্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ দেয়া হয়েছিল, জিয়াউর রহমান সেটাকে ১৯৭৯ সালে আইনে পরিণত করেন। একইভাবে ২০০২ সালে বেগম জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি অপারেশন ক্লিনহার্ট পরিচালনা করে শত শত মানুষকে হত্যা করে। তার বিচার বন্ধেও ইনডেমনিটি দেয় খালেদা জিয়া। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর দেশে পাকিস্তানি ভাবধারা তৈরি করা হয়েছিল। পাকিস্তানের সঙ্গে কনফেডারেশন করার, জাতীয় পতাকা ও সঙ্গীত পরিবর্তন করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। বাংলাদেশ বেতারের নাম পরিবর্তন করে রেডিও পাকিস্তানের আদলে রেডিও বাংলাদেশ করা হয়েছিল।
মহিলা শ্রমিক লীগ সভাপতি সুরাইয়া আক্তারের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি এমপি ও দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রহিমা আক্তার সাথীর সঞ্চালনায় সভায় ১৫ আগস্টের শহীদদের ওপর শোক প্রস্তাব পাঠ করেন সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি শামসুন নাহার এমপি।
এছাড়াও শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর উত্তর মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখতে গিয়ে তথ্যমন্ত্রী দেশের শত্রুদের ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর অপ্রতিরোধ্য জনপ্রিয়তাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে দেশ ও প্রগতির শত্রুরা তাঁকে হত্যা করে। দেশ ও উন্নয়নের শত্রুদের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আহমেদ হাসনাইনের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক রূপম বড়ুয়ার সঞ্চালনায় আয়োজিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী নেতা মুক্তিযোদ্ধা এম এ কাশেম, সাবিনা আক্তার তুহিন, মহিলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া বেগম, আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুর রহমান হিরণ, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, আল মামুন প্রমুখ।