ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

তদন্তে গাফিলতি হলে হস্তক্ষেপ করবে হাইকোর্ট

কক্সবাজারে গরু চুরি মামলায় মা ও দুই মেয়ের জামিন

প্রকাশিত: ২৩:০২, ২৫ আগস্ট ২০২০

কক্সবাজারে গরু চুরি মামলায় মা ও দুই মেয়ের জামিন

স্টাফ রিপোর্টার, ঢাকা ও কক্সবাজার ॥ চকরিয়ায় কথিত গরু চুরি মামলায় মা ও দুই মেয়েকে জামিনে মুক্তি দিয়েছে আদালত। সোমবার দুপুরে চকরিয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব কুমার দেব তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। জামিনপ্রাপ্তরা হলেন পটিয়া শান্তির হাট কুসুমপুর এলাকার পারভিন আক্তার, তার দুই মেয়ে সেলিনা আক্তার ও রোজিনা আক্তার। চকরিয়া আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট ওমর ফারুক জানান, শুনানি শেষে মা ও দুই মেয়ের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালতের বিচারক। এদিকে চকরিয়ায় গরু চুরির অভিযোগে দুই মেয়ে, এক ছেলে ও মাসহ পাঁচজনকে রশি দিয়ে বেঁধে প্রকাশ্য দিবালোকে নির্যাতনের ঘটনায় স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলা নিয়েছে চকরিয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। মামলাটি চকরিয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপারকে ৭ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন বিচারক রাজিব কুমার দেব। একই ঘটনায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসক ও চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় হতে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের কমিটিতে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক (উপ-সচিব) রায়কে প্রধান করা হয়েছে। চকরিয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার কাজী মোঃ মতিউল ইসলাম বলেন, চকরিয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে হারাবাংয়ের ভাইরাল হওয়ায় ঘটনায় জনস্বার্থে একটি মামলা নিয়েছে। মামলাটি তাকে (চকরিয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার) ৭ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। আদালতের উক্ত নির্দেশনা পত্রটি হাতে পেয়েছেন বলে জানান তিনি। চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তাবরীজ সনেট জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্যাতনের দৃশ্যটি ভাইরাল হওয়ার পর তার দৃষ্টি গোচর হয়। তিনি সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য থানা পুলিশকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি জানান, সংঘটিত ঘটনার বিষয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তন্মধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগ উপ-পরিচালককে একটি তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে। উল্লেখ্য, হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলামের নেতৃত্বে মা ও মেয়েকে নির্যাতনের ঘটনার পর রবিবার ওইসব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরপর স্থানীয় প্রশাসনের টনক নড়ে। চকরিয়া থানার ওসির দায়েরকৃত চুরির মামলায় কারাগার থেকে মা ও দুই মেয়ে জামিনে মুক্তি পেয়েছে। তাদের আইনী সহায়তা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতি। নজর রাখছে হাইকোর্ট ॥ এদিকে কক্সবাজারে গরু চুরির অভিযোগে মা-মেয়েসহ একই পরিবারের পাঁচজনকে রশি দিয়ে বেঁধে নির্যাতন করার বিষয়ে নজর রাখছে হাইকোর্ট। আদালত বলেছে, নির্যাতনের বিষয়ে তদন্তে গাফিলতি হলে হস্তক্ষেপ করবে হাইকোর্ট। অন্যদিকে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক এক আসামির সঙ্গে নামের মিলের কারণে ভোলার মোঃ লিটনকে কারাগারে রাখার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট দায়ের করা হয়েছে। সোমবার মা-মেয়েসহ নির্যাতিতদের বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনা হয়। পরে হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের বেঞ্চ এমন মন্তব্য করে। বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী এ্য্যাডভোকেট জেসমিন সুলতানা। তাকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী এএম জামিউল হক ফয়সাল। নামের মিল থাকায় কারাবন্দীর মুক্তি চেয়ে রিট ॥ সাজাপ্রাপ্ত পলাতক এক আসামির সঙ্গে নামের মিলের কারণে ভোলার মোঃ লিটনকে কারাগারে রাখার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। সোমবার মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র এবং লিটন এ রিট করেন। গত ২২ আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিকে ‘শুধু নাম ঠিকানা মিলে জেল খাটছেন দিনমজুর’ শীর্ষক প্রতিবেদন যুক্ত করে এ রিট করা হয়। বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ রিটের ওপর শুনানি হতে পারে। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের আইনজীবী হিসেবে রিটের পক্ষে শুনানি করবে সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী এ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না, ইয়াদিয়া জামান ও মোঃ শাহিনুজ্জামান। আবেদনে বিবাদী করা হয়েছে স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, কারা মহাপরিদর্শক, ভোলার পুলিশ সুপার, ভোলার জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের।
×