ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতীয় নির্বাহীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় সালমান রহমান

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক যে কোন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের চেয়ে গভীর

প্রকাশিত: ২২:৫৭, ২৫ আগস্ট ২০২০

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক যে কোন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের চেয়ে গভীর

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগে ব্যাপক উন্নয়ন হলেও যতটা প্রচার হওয়ার কথা ছিল ততটা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান এমপি। সোমবার ভারতীয় হাইকমিশনের আয়োজনে বাংলাদেশে কর্মরত ভারতীয় শীর্ষ নির্বাহীদের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় তিনি বলেন, যদি দুইদেশের মধ্যে যোগাযোগ ঘটে, তখন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডও বৃদ্ধি পায়। এটি দুইদেশের মধ্যে প্রতিযোগিতার সম্পর্ক নয় বরং একে অপরের সহযোগী হওয়ার বিষয়। আর ভারতের ক্ষেত্রে এই কথা আরও বেশি প্রযোজ্য, কেননা দুইদেশের মধ্যে এক ঐতিহাসিক সম্পর্ক বিদ্যমান। তিনি বলেন, অন্য দু’টি দেশের মতো বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক কেবল ভাতৃপ্রতীম বা বন্ধুত্বপূর্ণই নয়, এটি আরও গভীর একটি সম্পর্ক। বিশেষ করে বাংলাদেশ সৃষ্টিতে ভারতের ভূমিকার কারণে। বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের বিদায়ী হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাস অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। বাংলাদেশে কর্মরত ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর এক ডজনেরও বেশি শীর্ষ নির্বাহী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে ভারতীয় ব্যবসায়ী কর্মকর্তারা ভারতের পারাদিপ ও হালদা বন্দর থেকে বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জে সরাসরি মালামাল পরিবহন সহজতর হবে বলে মন্তব্য করেন। এতে করে সময় ও অর্থের সাশ্রয় হওয়ার পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর থেকে চাপ কমবে। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এই পরামর্শের প্রশংসা করেন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি উত্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি রেলপথেও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড বেগমান করতে ভারতের সংশ্লিষ্ট রেলওয়ে অবকাঠামো উন্নত করারও আহ্বান জানান। ভারতের হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাস ভারতীয় ব্যবসায়ীদের পক্ষে বিভিন্ন ইস্যু উপস্থাপন করেন। বিশেষ করে নন-ট্যারিফ প্রতিবন্ধকতা, কাস্টমস সংক্রান্ত জটিলতা, ভারত থেকে আমদানিকৃত গাড়ির সিসি-সীমা, ভারতীয় ব্যবসায়ী ও নির্বাহীদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী ভিসা ইত্যাদি প্রসঙ্গে আলোচনা করেন। এ সময় ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও লেটার অব ক্রেডিট-এর বিপরীতে অর্থ পরিশোধে বিলম্বের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা এ সময় ভারতীয় দূত ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের এসব বিষয় সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিগোচরে আনবেন বলে আশ্বস্ত করেন। লভ্যাংশ ভারতের মূল কোম্পানিতে পাঠাতে জটিলতা দেখা দিয়েছে মর্মে এক অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপদেষ্টা বলেন, ‘এই ধরনের বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা হয়তো আছে। তবে বাংলাদেশের যতটুকু উদারীকরণ এই পর্যায়ে দরকার ততটুকু আমরা করে ফেলেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু দুইদেশের মুদ্রা বিনিময়যোগ্য (কনভার্টিবল) নয়, সেহেতু কিছু জটিলতা থাকবেই। আগে আমাদের এতবড় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল না, যার কারণে সমস্যা হতো। তবে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অনেক বেড়েছে। বিদেশী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো এখন ঝামেলাহীনভাবে তাদের ডিভিডেন্ড দেশে পাঠাতে পারে।’ সালমান এফ রহমান বাংলাদেশের শুভেচ্ছাদূত হতেও ভারতীয় ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান রাখেন। তিনি বলেন, ‘আপনারা নিজ দেশে, নিজেদের সহকর্মী ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আপনাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করুন ও দুইদেশের মধ্যে যোগাযোগ যে কত নিবিড় তা প্রচার করুন।’
×