ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি

শুল্ক কমিয়ে বিদেশ থেকে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত

প্রকাশিত: ২২:৪৮, ৭ আগস্ট ২০২০

শুল্ক কমিয়ে বিদেশ থেকে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ দেশে উদ্বৃত্ত থাকলেও ব্যবসায়ীদের কারসাজি বন্ধ করতে এবং বাজার স্থিতিশীল রাখতে শুল্ক কমিয়ে বিদেশ থেকে চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার খাদ্যমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রয়োজনীয় পরিমাণ চাল আমদানি করতে প্রধানমন্ত্রী অনুমতি দিয়েছেন। এতে বলা হয় প্রধানমন্ত্রী প্রয়োজনীয় পরিমাণ চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছেন। মিল মালিকরা চুক্তিমূল্যে সরকারকে চাল সরবরাহ না করায় শুল্ক কমিয়ে বিদেশ থেকে আমদানির সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে এর আগে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছিল। এবার বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হলেও মিল মালিকরা চুক্তিমূল্যে সরকারকে চাল সরবরাহ করছিলেন না। চালকল মালিকরা সরকারকে চাল না দিলে প্রয়োজনে আমদানি করা হবে বলে বেশ কিছু দিন ধরেই হুঁশিয়ার করে আসছিলেন খাদ্যমন্ত্রী। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কোভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতিতে কিছু মিল মালিক ৩৬ টাকা কেজি দরে চাল সরবরাহ করতে গড়িমসি করে সরকারের কাছে চালের দাম বাড়ানোর দাবি তোলেন। অনেক মিল মালিক চুক্তিমূল্যে চাল না দেয়ায় মজুদের লক্ষ্য পূরণ করা নিয়ে বিপাকে পড়ে সরকার। এর আগে ২০১৭ সালে হাওড়ে বন্যার সময় সরকারীভাবে চালের সংগ্রহ বাধাগ্রস্ত হলে সরকার চাল আমদানির ওপর ট্যাক্স ফ্রি করে দিয়েছিল। ফলে ৪০ লাখ মেট্রিক টন চাল বিভিন্নভাবে আমদানি করা হয়। এতে ওই বছর মিলমালিকরা এবং কৃষক উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। খাদ্য মন্ত্রণালয় জানায় এবারও ধান-চাল উদ্বৃত্ত রয়েছে। এরপর শুল্ক কমিয়ে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত জানিয়ে গত ৭ জুলাই খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘কারসাজি ঠেকাতে ও চালের বাজার স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে প্রয়োজনে আমদানি শুল্ক কমিয়ে প্রয়োজন মতো চাল বিদেশ থেকে আমদানি করা হবে।’ এর আগে গত ১ জুলাই খাদ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘অপচেষ্টার মাধ্যমে চালের বাজার অস্থিতিশীল করা হলে কঠোর অবস্থানে যাবে সরকার। প্রয়োজনে চাল আমদানি করা হবে। এবার বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে; এই ভরা মৌসুমে চালের বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার কোন কারণ নেই। যদি কেউ অপচেষ্টার মাধ্যমে চালের মূল্য বৃদ্ধি করার চেষ্টা করে তাহলে কঠোর অবস্থানে যাবে সরকার। চালকল মালিকদের উদ্দেশে খাদ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, চালের বাজার স্থিতিশীল রাখেন, সরকারের সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী সরকারী গুদামে চাল সরবরাহ করেন; যদি তা না করেন তবে সরকার চাল আমদানিতে যেতে বাধ্য হবে। কিন্তু সরকার আমদানিতে যেতে চায় না; গেলে মিলারদের লোকসান হবে এবং যে সব কৃষক ধান ধরে রেখেছে তারাও লোকসানে পড়বে। এই সময়ে যে সব মিল এগিয়ে আসবে তাদের ‘এ’ ‘বি’ ‘সি’ ক্যাটাগরিসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে চিহ্নিত করার জন্য ইতোমধ্যেই খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেসব মিলকে পরে সে অনুযায়ী মূল্যায়ন করা হবে। চলতি বছর সাড়ে ১৯ লাখ মেট্রিক টন বোরো ধান-চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে সরকার। সে অনুযায়ী ৩৬ টাকা কেজি দরে মিলারদের কাছ থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল, ৩৫ টাকা কেজিতে দেড় লাখ মেট্রিক টন আতপ চাল এবং সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ২৬ টাকা কেজিতে আট লাখ মেট্রিক টন বোরো ধান কেনার কথা ছিল।
×