ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পাঁচ মাস পর মুখর রাজশাহীর বিনোদন কেন্দ্র

প্রকাশিত: ২০:০৭, ৫ আগস্ট ২০২০

পাঁচ মাস পর মুখর রাজশাহীর বিনোদন কেন্দ্র

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও বোটানিক্যাল গার্ডেনের তালা খুলেছে। শনিবার ঈদ-উল-আজহার দিন থেকে শিশুদের পদচারণায় আবার মুখর হয়ে উঠেছে বিনোদন কেন্দ্রটি। তবে সেখানে ঢুকতে হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে গত মার্চে রাজশাহীর সব পার্ক-চিড়িয়াখানা বন্ধের নির্দেশ দেয় জেলা প্রশাসন। সে অনুযায়ী বিনোদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে ঈদ-উল-আজহার দিন শুধু কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা খোলা হয়েছে। এরপর থেকে সেখানে বেড়েছে প্রাণচাঞ্চল্য। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঈদের দিন প্রায় ৭০০ শিশু ও তাদের অভিভাবক চিড়িয়াখানায় এসেছেন। ঈদের পরদিন এসেছে প্রায় দুই হাজার শিশু ও তাদের অভিভাবক। ঈদের তৃতীয় দিনও শিশুদের আনাগোনা ছিল বেশি। প্রতিদিনই বাড়ছে দর্শনার্থী। স্বাস্থ্যবিধি মেনে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই চিড়িয়াখানায় বিনোদনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মাস্ক না পরলে কাউকেই চিড়িয়াখানার ভেতরে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। ঈদের পর মঙ্গলবার বিকেলে চিড়িয়াখানায় শিশুদের সঙ্গে নিয়ে চিড়িয়াখানায় গিয়েছিলেন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আবু ইউসুফ। তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে গৃহবন্দী থাকতে থাকতে তার সন্তানরা বিরক্ত। চিড়িয়াখানা বন্ধ থাকলেও সে মাঝে মাঝেই এখানে আসতে চাইত। কিন্তু আসা যেত না। ঈদের দিন সে আবার বায়না ধরে। কিন্তু সেদিন কোরবানি নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আসতে পারেননি। মঙ্গলবার দুপুরের পরই চিড়িয়াখানায় এসেছেন তারা। গৃহিনী জলি খাতুন বলেন, প্রায় পাঁচ মাস পর চিড়িয়াখানায় দুই সন্তানকে নিয়ে এসে তার ভাল লাগছে। আগের চেয়ে চিড়িয়াখানা বেশি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। সবচেয়ে ভাল লাগছে নতুন করে সংস্কার করা পুকুরটি। নতুন পানি দিয়ে পুকুরে রঙিন মাছ ছাড়া হয়েছে। বড় বড় রুই-কাতলও আছে। বাদাম ছুড়ে দিলেই মাছগুলো কাছে আসছে। এদিকে ঈদের দিন থেকে রাজশাহীর বিস্তীর্ণ পদ্মার পাড়েও নানা বয়সী মানুষের আনাগোনা বেড়েছে। তিস্তা পাড় যেন সমুদ্র সৈকত তাহমিন হক ববী তিস্তা ব্যারাজ থেকে জানান, করোনাভাইরাসের কারণে বদলে গেছে মানুষের স্বাভাবিক চলাচল। আনন্দ- বেদনায়, সঙ্কটে, উৎকণ্ঠায় কাটছে সময়। দিন যায়, মাস যায়- খোলা আকাশের নিচে শান্তিময় ঘুরে বেড়ানোই দায়। আর কতদিন চলবে এমন যাপিত জীবন। তাই ঈদ-উল-আজহার পরের দিন রবিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত তিন দিন উত্তরাঞ্চলের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় ঈদ আনন্দে যেন সমুদ্র সৈকতে পরিণত হয়েছিল। ব্যারাজ এলাকায় বিনোদন পিপাসুদের উপচে পড়া ভিড়। তিস্তার বুকে দ্রুত বেগে এক পাশ থেকে আরেক পাশে ছুটে চলছে ¯িপডবোট বা শ্যালোচালিত নৌকা। হই-হুল্লোড়ে মেতে উঠছেন সবাই। ছোট বড়, শিশু কিশোর, তরুণ-তরুণী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে তিস্তা পাড়। বিভিন্ন এলাকা হতে তিস্তা ব্যারাজে পরিবার পরিজন নিয়ে সকলে এসেছেন মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস বা ইজিবাইক করে। এ সকলের পাশাপাশি তিস্তা ব্যারাজজুড়ে বসেছে অস্থায়ী বাজার। নানা রকম পণ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে দোকানগুলো। বিভিন্ন খেলনা, বাঁশি, বেলুন, মাটির গাড়ি, খাবারের দোকান রয়েছে এখানে। এ ছাড়া নদীর বুকে ভাসমান বেশ কিছু পাল তোলা নৌকা নজর কাড়ছে দর্শনার্থীদের। ফুরফুরে বাতাস মনকে চাঙ্গা করে দিয়েছে। অনেকেই ক্যামেরা ও মোবাইল ফোনে বন্দী করছেন প্রিয় মুহূর্তগুলো।
×