ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

দীর্ঘদিন পর অনুশীলন, হাতে ফোসকা পড়েছে এ বাঁহাতি ওপেনারের

ব্যাটিংয়ে নেমে বিপাকে ইমরুল

প্রকাশিত: ০০:০৪, ২১ জুলাই ২০২০

ব্যাটিংয়ে নেমে বিপাকে ইমরুল

মোঃ মামুন রশীদ ॥ ভয়াল করোনাভাইরাসের সংক্রমণের জন্য বাংলাদেশে সব ধরনের ক্রিকেট কর্মকা- বন্ধ হয়ে ছিল ৪ মাস। কিন্তু এই পরিস্থিতির মধ্যেও অনেকে ঘরে থেকেই নিজ উদ্যোগে অনুশীলন চালিয়ে গেছেন। সেই অনুশীলন যে তেমন কাজেই লাগেনি রবিবার থেকে মাঠের অনুশীলনে ক্রিকেটাররা নামার পরই স্পষ্ট হয়ে গেছে। এককভাবে ভেন্যুতে গিয়ে অনুশীলনের সুযোগ নিয়ে রবিবার মুশফিকুর রহীম, শফিউল ইসলাম ও মোহাম্মদ মিঠুনরা বুঝেছেন ফিটনেসের অবস্থা যাচ্ছেতাই। সামান্য রানিং আর জিম সেশনেই পরিশ্রান্ত হয়ে হাঁপিয়েছেন তারা। সোমবার বৃষ্টির বিঘœতার মধ্যেই মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুশীলন করেছেন বাঁহাতি ওপেনার ইমরুল কায়েস ও মিঠুন। তবে ৪০ মিনিট ব্যাটিং করেই হাতে ফোসকা পড়ে গেছে ইমরুলের। দীর্ঘ ৪ মাস পর ব্যাটিংয়ে নামার কারণেই এ অবস্থা। তিনি জানিয়েছেন, ব্যাটিংয়ের সময় টাইমিং এবং ফুটওয়ার্কেও সমস্যা হচ্ছে, দ্রুত কাজ করছে না হাত-পা। আরও কিছু সময় ব্যাটিংয়ের ইচ্ছা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ফোসকা পড়াতে বাড়িই ফিরেছেন ইমরুল। দেশের ৪ ভেন্যুতে ৯ ক্রিকেটার অনুশীলন করবেন, সেটার সময়সূচী আগেই দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কারও সঙ্গে কারও দেখা-সাক্ষাত হবে না সেভাবেই সূচী করা। দ্বিতীয় দিন মিরপুরে মুশফিক ও শফিউলের অনুশীলন ছিল না। তবে দ্বিতীয় দিনের মতো অনুশীলন সেরেছেন মিঠুন। বৃষ্টির কারণে অবশ্য রানিং করতে পারেননি। মাঠে পৌঁছে শুরুতে আধা ঘণ্টার মতো ব্যাটিং করেন মিডল অর্ডার এই ব্যাটসম্যান। এরপর প্রায় ৪০ মিনিটের মতো জিম করে অনুশীলন শেষ করেন মিঠুন। ক্রিকেটারদের ফিটনেসের অবস্থা যে ভাল নয়, প্রথম দিনের অনুশীলনেই তা বোঝা গেছে। ৩০ মিনিট রানিং করে একাডেমি মাঠের এক কোণে গিয়ে বসে পড়েন শফিউল। যে মুশফিক সবার আগে অনুশীলনে গিয়ে সবার পরে মাঠ ছাড়েন, সেও দৌড়ে এতটাই হাঁপিয়ে ওঠেন যে, হাঁটুতে দুই হাতে ভর দিয়ে উপুর হয়ে থেকেছেন অনেকক্ষণ। এরপর হাত পা ছড়িয়ে মাঠে শুয়ে থাকেন ১৫ মিনিটের মতো। মিঠুনেরও অবস্থা ছিল কাহিল। তবে তিনি জানিয়েছিলেন, মানিয়ে উঠতে সময় লাগবে। অপেক্ষায় ছিলেন ইমরুল। সোমবার তিনি অনুশীলন করেছেন। প্রায় ৫ সপ্তাহ আগে গ্রামের মাঠে ব্যাটিং অনুশীলনও করেছিলেন তিনি। ফিটনেস ঠিক রাখতেও কাজ করেছেন, কিন্তু মাঠের আসল অনুশীলনটা যে কত কঠিন ৪ মাস পর করতে নেমেই বুঝেছেন এ বাঁহাতি। লম্বা সময় পর ব্যাটিং করার পর ইমরুল জানিয়েছেন, তার হাতে ফোসকা পড়ে গেছে। এছাড়া হাত-পা দ্রুত কাজ করছে না। যদিও দ্রুতই এসব স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশাবাদী এই বাঁহাতি ওপেনার। তিনি বলেন, ‘প্রায় ৫ মাস পর নেটে অনুশীলন করলাম। বাসায় অবশ্য জিম করেছি, রানিং করেছি। হাত পা একটু কম চলে। এটা তো অভ্যাসের ব্যাপার। এতদিন পর বলের কাছে যাওয়া। দুই একটা সেশন গেলে সব ঠিক হবে। বডি মুভমেন্ট আরেকটু দ্রুতগতির হওয়া লাগবে। বাঁ হাতে ঠোসা পড়ে গেছে। অনেকদিন পর ব্যাটিং করলাম এজন্য।’ একজন ব্যাটসম্যানের জন্য অপরিহার্য নিখুঁত টাইমিং, দারুণ ফুটওয়ার্ক এবং সেই সঙ্গে শরীরের নড়াচড়ায় রিফ্লেক্সটা ভাল হওয়া। ইমরুল সোমবার অনুশীলন করতে নেমে বুঝে গেছেন গত ৪ মাসে নিজ উদ্যোগে মাঠের বাইরে যত চেষ্টাই করেছেন নিজেকে ফিট রাখার সেসব তেমন কাজে দেয়নি। জড়তা এসেছে শরীরের প্রতিটি কোণায় কোণায়। সেই সঙ্গে শারীরিক সক্ষমতাও কমেছে, নিয়মিত অনুশীলন করতে পারলেই হয়তো এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবেন তিনিসহ বাকি ক্রিকেটাররা। ১০টা থেকে অনুশীলন ছিল ইমরুলের। যথা সময়েই মাঠে হাজির হয়ে বৃষ্টির জন্য রানিং করতে পারেননি। তাই আধা ঘণ্টার মতো জিম করে ইনডোরে গিয়ে ব্যাটিং করেন নেটে ৪০ মিনিট। পরে আবারও জিমে ঘাম ঝরিয়ে শেষ করেন অনুশীলন। ব্যাটিং আরেকটু করার ইচ্ছা থাকলেও ফোসকার মতো পড়ে যাওয়াতে তা করেননি। এরপরও দীর্ঘ দিন পর অনুশীলন শেষে সন্তুষ্ট তিনি। ইমরুল বলেন, ‘প্রথম দিনটা ভালই গেছে। হাতে ফোসকা পড়ে যাওয়াও দুই-একদিন পর হয়তো ব্যাটিং করতে হবে। তবে অবস্থা ভাল হলে কালও (আজ) করব ব্যাটিং, দেখা যাক। খুব বেশি ফোসকা না পড়লেও হাতে ব্যথা লাগছিল। এ কারণে আর করিনি।’ মিঠুনের মতো ইমরুলও বললেন মানিয়ে ওঠার জন্য সময় লাগবে। বিশেষ করে ফুটওয়ার্ক ও বডি মুভমেন্ট ঠিক করতে সময় দিতে হবে নেটে প্রচুর। তিনি বলেন, ‘মানিয়ে নিতে অবশ্যই সময় লাগবে। এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। বডি মুভমেন্ট, ফুটওয়ার্ক; এসব ঠিক হতে সময় লাগে। এক সপ্তাহ অনুশীলন না করলেই বল দেখতে সমস্যা হয়। সেখানে চার মাস কিছু করিনি। এটা তো অবশ্যই সমস্যা।’ আগামী কয়েক মাস খেলা না থাকায় সব কাটিয়ে ওঠার যথেষ্ট সময় আছে বলেই মনে করেন এ বাঁ হাতি। তিনি বলেন, ‘আশা করি এই সুযোগটাকে আমরা কাজে লাগাতে পারব। কারণ আমাদের একটা বড় গ্যাপ আছে। আমরা আমাদের স্কিল বা ফিটনেস নিয়ে কাজ করতে পারব। যদি এই সময়টুকু সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারি, স্কিল এবং ফিটনেসের দিক থেকে আরেক ধাপ এগিয়ে যেতে পারব।’
×