ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চীনা ভ্যাকসিন ট্রায়ালের অনুমোদন দিল বিএমআরসি

প্রকাশিত: ২২:৪১, ২০ জুলাই ২০২০

চীনা ভ্যাকসিন ট্রায়ালের অনুমোদন দিল বিএমআরসি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে চীনা ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ (বিএমআরসি)। রবিবার এ সংক্রান্ত বৈঠক শেষে বিএমআরসির তরফে এ কথা জানানো হয়েছে। ঢাকার করোনা হাসপাতালগুলোতে স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করবে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)। আইসিডিডিআরবির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে প্রতিষ্ঠানের জনসংযোগ শাখা বলছে, এখনও এ বিষয়ে কথা বলার সময় আসেনি। আমরাও টেলিভিশনে খবরটি দেখছি। এ বিষয়ে দুই/এক দিনের মধ্যে বিস্তারিত জানানো সম্ভব হবে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মকর্তা। বাংলাদেশের করোনা বিস্তার রোধে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি জানিয়েছে চীন। দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিং পিং এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করে বেজিং পাশে থাকার কথা জানান। এর পর চীনা বিশেষজ্ঞ দল ১০ দিনের জন্য ঢাকা সফর করে। এই সফরের সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাঃ জাহিদ মালেক বলেন, চীন কোভিড-১৯’র ভ্যাকসিন আবিষ্কার করলে অগ্রাধিকারভিত্তিতে তা বাংলাদেশে পাঠাবে। সম্প্রতি বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেছেন, চীনে করোনা সংক্রমণের সময় যেভাবে বাংলাদেশ পাশে ছিল ঠিক একইভাবে চীনও বাংলাদেশের করোনা নিয়ন্ত্রণে পাশে থাকবে। বিএমআরসি পরিচালক ডাঃ মাহমুদ-উজ-জাহান সাংবাদিকদের বলেন, আইসিডিডিআরবি বাংলাদেশে চীনের একটি ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করার অনুমতি চেয়েছে। নিয়ম অনুসারে কোনো ট্রায়ালের জন্য বিএমআরসি নীতিগত অনুমোদন দেয়। আমরা সবকিছু পর্যালোচনা করে অনুমোদন দিয়েছি। তবে এখনও আইসিডিডিআরবিকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেয়া হয়নি। শীঘ্রই তাদের বিষয়টি জানিয়ে চিঠি দেয়া হবে। বড় আকারে তৃতীয় ধাপের ভ্যাকসিন পরীক্ষা চালাতে ইতোমধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুমোদন পেয়েছে চীন। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর পাশাপাশি বাংলাদেশেও করোনা ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের অনুমোদন চায় বেজিং। দেশটিতে করোনা সংক্রমণ কমে আসায় পৃথিবীর অন্য দেশগুলোতে ভ্যাকসিনের ট্রায়াল চালানোর চেষ্টা করছে দেশটি। এই ট্রায়ালে আশার আলো দেখা হচ্ছে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের মতামতের ভিত্তিতে ভ্যাকসিনটি প্রয়োগের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বিএমআরসি বলছে, আইসিডিডিআরবি ঠিক করবে তারা কীভাবে পরবর্তী পদক্ষেপে যাবে। প্রাথমিকভাবে সাত/আটটি সরকারী কোভিড হাসপাতালের সঙ্গে তারা আলোচনা করে কীভাবে পরবর্তী ধাপে ট্রায়াল শুরু করবে, তাদের পার্টিসিপেন্ট সিলেকশন কীভাবে হবে তা নির্ধারণ করবে। এর পর ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর, স্বাস্থ্য অধিদফতরের কাছ থেকে বিভিন্ন ধাপের অনুমোদন এবং অনুমতি নিতে হবে। ঢাকার সাত থেকে আটটি হাসপাতালের করোনা রোগীর ওপর এই ট্রায়াল চালানো হবে। সাধরণত ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট উৎপাদনকারীর সঙ্গে চুক্তি অথবা ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে অংশ নেয়া। এতদিন সরকারের তরফ থেকে এ বিষয়ে কিছু পরিস্কার করা হয়নি। তবে এখন এই ট্রায়ালের মাধ্যমে করোনা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ আরও একধাপ এগিয়ে থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই ভ্যাকসিন দেশে নিরাপদ বলে প্রমাণ হলে ব্যাপকভাবে তা মানুষের শরীরে প্রয়োগ করা যাবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভ্যাকসিন পাওয়ার দৌড়ে অন্যদের তুলনায় এগিয়ে থাকবে।
×