ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ন্যূক্যাম্প ছেড়ে আর কোথাও যাওয়ার ইচ্ছে নেই আর্জেন্টাইন সুপারস্টারের

বার্সিলোনায় ‘আজীবন’ থাকবেন মেসি

প্রকাশিত: ০০:৫৭, ৩ জুন ২০২০

বার্সিলোনায় ‘আজীবন’ থাকবেন মেসি

জাহিদুল আলম জয় ॥ বার্সিলোনার সঙ্গে আত্মিক সম্পর্ক লিওনেল মেসির। পেশাদার ক্যারিয়ারের পুরোটা সময়ই কাতালানদের তাবুতে কাটিয়ে দিচ্ছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। তবে ক্যারিয়ারের পড়ন্তবেলায় মেসির ন্যূক্যাম্প ছাড়ার গুঞ্জনও শোনা যাচ্ছে প্রায়শই। ইদানিং চাউর হচ্ছে, আগামী বছর বার্সিলোনা ছাড়তে পারেন মেসি। অর্থাৎ ২০২১ সালে বার্সিলোনার সঙ্গে বর্তমান চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে নাকি খুদে এই জাদুকর ফ্রি হয়ে যাবেন। যেতে পারেন যেখানে খুশি! এমন খবরের পর আরেকবার কাতালানরা জানিয়ে দিয়েছে, তারা কোথাও যেতে দিতে চাই না তাদের সেরা তারকাকে। এবার মেসিও আরেকবার স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, সুযোগ থাকলেও তিনি নূূ্যূক্যাম্প ছাড়বেন না। এখানেই শেষ করবেন ক্যারিয়ার। এই গ্রীষ্মে ফ্রিতে বার্সিলোনা ছাড়ার সুযোগ থাকলেও সেটা কাজে লাগাননি মেসি। বরং কমপক্ষে আরও এক মৌসুম ক্যাম্প ন্যুয়ে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। ২০২১ সালের ৩০ জুন বার্সার সঙ্গে মেসির চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে। তবে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী এই জুনেই ক্লাব ছাড়ার সুযোগ ছিল মেসির সামনে। কিন্তু মেসি নিজেই বার্সা ছাড়তে চাচ্ছেন না। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের উদ্ধৃতিতে এমনই জানা গেছে। গত সেপ্টেম্বরেই জানা গিয়েছিল, মেসির সঙ্গে বার্সার বর্তমান চুক্তিতে এমন একটি শর্ত আছে যাতে মৌসুম শেষে চাইলেই অন্য কোথাও পাড়ি জমাতে পারবেন তিনি। ফ্রি ট্রান্সফার বাস্তবায়ন করতে হলে ৩২ বছর বয়সী বার্সা অধিনায়ককে চলতি বছরের ১ জুন ক্লাবকে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিতে হতো। কিন্তু মেসি এদিন এ বিষয়ে কিছুই বলেননি। ফলে আরও এক মৌসুম তার থেকে যাওয়া নিশ্চিত। বার্সিলোনাও জানে ছয়বারের ফিফা সেরা তারকা চুক্তির ওই শর্ত প্রয়োগ করবেন না। কিন্তু জানুয়ারিতে চাইলে অন্য ক্লাবের সঙ্গে দলবদল নিয়ে আলোচনা শুরু করতে পারবেন তিনি। ফলে মেসিকে ধরে রাখার জন্য নতুন চুক্তি গুছিয়ে আনছে কাতালানরা। এক্ষেত্রে অবশ্য নির্ভার থাকতেই পারে স্প্যানিশ পরাশক্তিরা। কেননা স্বয়ং মেসি বলেছেন, তিনি বার্সা ছেড়ে কোথাও যাচ্ছেন না। এ বিষয়ে খুদে জাদুকর বলেন, এটা ঠিক আমার যাওয়ার অনেক জায়গা আছে। বিশেষ করে আমার শৈশবের ক্লাব, যারা আমাকে সবসময় চায়। কিন্তু আমি এখানেই (বার্সিলোনা) থেকে যেতে চাই। মেসিকে আরও বেশি সুরক্ষিত রাখতে চুক্তি নবায়ন করতে চায় বার্সিলোনাও। এক্ষেত্রে আজীবন চুক্তিও করার ইচ্ছে আছে তাদের। চুক্তিতে স্পষ্ট লেখা থাকবে, বার্সিলোনার হয়ে যতদিন ইচ্ছা খেলতে পারবেন আর্জেন্টাইন তারকা। এর আগে একই সুযোগ দেয়া হয়েছিল ক্লাবের কিংবদন্তি মিডফিল্ডার আন্দ্রেস ইনিয়েস্তাকেও। তিনি অবশ্য এরইমধ্যে বার্সা ছেড়ে জাপানী লীগে পাড়ি জমিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে বার্সা সভাপতি জোসেপ মারিয়া বার্টোমেউ বলেছিলেন, মেসির ফুটবল জীবন উপভোগ করার জন্য আমাদের হাতে অনেক সময় আছে। সে ক্লাবের সীমানা পেরিয়ে গেছে। সবাইক তাকে পছন্দ করে এবং অন্য স্টেডিয়ামেও হাততালি পায় সে। মেসি এক ক্লাবের মানুষ। মাঠে সে যা করে তার চেয়েও এটা বেশি। বার্সার সঙ্গে তার সম্পর্ক আজীবনের। আমি এক্ষেত্রে ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি পেলে’র উদাহরণ দিতে পারি যিনি সারাজীবন সান্টোসের হয়ে খেলেছেন। আমরা মেসিকে সারাজীবনের জন্য চাই। সেটা মাঠের খেলার মাধ্যমেই হোক কিংবা ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত থেকেই হোক। তবে বছরের পর বছর বিস্ময় জাগানিয়া ধারাবাহিক পারফরমেন্স প্রদর্শন করে চলা মেসির শুরুর পথটা মসৃণ ছিল না। এক সময় অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় ঝরে পড়ার উপক্রম হয়েছিল বিস্ময়কর এ প্রতিভার! ১৯৮৭ সালে আর্জেন্টিনার রোজারিও’তে জন্ম নেয়া মেসির বেড়ে ওঠার গল্পের সঙ্গে আজকের অবস্থান মেলাতে গেলে আপনি বিভ্রান্তিতে পড়তে বাধ্য। কেননা সে সময় মেসির বাবা-মা ছিলেন নিতান্তই গরিব। বাবা জর্জ মেসি কাজ করতেন ফ্যাক্টরিতে আর মা সিলিয়া ছিলেন পার্টটাইম ক্লিনার। এমন অস্বচ্ছল পরিবার থেকেই মেসির আকাশছোঁয়া স্বপ্নের বীজ বপন করেন তার বাবা জর্জ। মূলত বাবার প্রচ- উৎসাহ আর আগ্রহেই মাত্র পাঁচ বছর বয়সে স্থানীয় ক্লাব গ্রান্দলিতে ফুটবলে হাতেখড়ি হয় মেসির।
×