নিজস্ব সংবাদদাতা, কুমিল্লা ॥ নানা-নাতনির ৮ বছরের প্রেম ও প্রণয়- অতঃপর গোপনে বিয়ে। ঘটনাটি লোকমুখে জানাজানি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বিয়ে পাগল বর সামসুল হক সামুকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করে শুক্রবার জেল হাজতে এবং কিশোরীকে উদ্ধার করে সেফ কাস্টোডিতে পাঠিয়েছে। শুক্রবার দুপুরে পুলিশ ওই বিয়ের কাজী সারোয়ারকে গ্রেফতার করে।
জানা গেছে, লালমাই উপজেলার পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের পশ্চিম পেরুল গ্রামের ইমাম হোসেন ঢাকায় চাকরি করেন। গ্রামে তার পরিবারের দেখাশোনা করত পেরুল দীঘিরপাড়ার ৬৫ বছরের বৃদ্ধ রিক্সাচালক সামসুল হক। ইমাম হোসেনের ২য় কন্যা (১৩) স্থানীয় স্কুলে ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। সামসুল হক নিজের রিক্সায় তাকে নিয়মিত স্কুলে আনা নেয়া করত। একপর্যায়ে কিশোরীকে ফুসলিয়ে তার সঙ্গে ‘প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে’।
সামু বিভিন্ন অজুহাতে ওই বাড়িতে প্রায়ই আসা-যাওয়া করত। এ নিয়ে স্থানীয় লোকজন আপত্তি করলে সে বলত, ‘মেয়েটি প্রাপ্তবয়স্ক হলে তার সঙ্গে নিজের ছেলে মনিরের বিয়ে দিবে’। এমন কথা এলাকায় প্রচার করে। কিন্তু ভেতরে-ভেতরে বিয়েপাগল সামু ‘প্রেমের সম্পর্ক’ চালিয়ে যায়। এক সময়ে গত রবিবার সামসুল হক ওই কিশোরীকে ভাগিয়ে নিয়ে কাজী সারোয়ার এবং আরও কয়েকজনের সহায়তায় ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে তাকে বিয়ে করে। এই অসম বিয়ের বিষয়টি লোকমুখে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়লে বিভিন্ন স্থানে বেশ তোলপাড় শুরু হয়।
এ ঘটনায় স্থানীয় লোকদের প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে ১১ মে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান লোক মারফত সামছুল হক ও কিশোরীকে ইউপি কার্যালয়ে হাজির করে বিস্তারিত জানতে চান। কিন্তু তিনি তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লালমাই থানায় এসে লিখিত অভিযোগ করেন ওই কিশোরীর মা তাসলিমা আক্তার। মামলায় তিনি সামুর বিরুদ্ধে তার মেয়েকে ফুসলিয়ে অপহরণ করার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ ‘নবদম্পতিকে’ নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে গ্রেফতার করে।
মামলার বাদী কনের মা তাসলিমা আক্তার জানান, শামু একজন প্রতারক, তার সংসারে স্ত্রী ও ৬ ছেলে মেয়ে থাকার পরও আমাদের বাড়িতে কাজ করার সুযোগে মেয়েকে ফুসলিয়ে অপহরণ করে ভুয়া কাজীর মাধ্যমে বিয়ে করেছে। তিনি বিয়েপাগল সামুসহ এ বিয়ের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন।
