ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

লকডাউন তুলে নিলে বিশ্ব জুড়ে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণ হতে পারে

প্রকাশিত: ০৬:৫৭, ২২ এপ্রিল ২০২০

লকডাউন তুলে নিলে বিশ্ব জুড়ে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণ হতে পারে

জোড়া সঙ্কট করোনায়। জীবন, জীবিকারও। আর্থিক ধাক্কা সামলাতে এখনই লকডাউন তুলে নিলে আরও বড় বিপদের মধ্যে পড়তে হবে বলে ফের সতর্ক করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। আবার জাতিসংঘের আশঙ্কা, এই অতিমারির জেরে ইতিমধ্যেই তৈরি হওয়া আর্থিক অচলাবস্থায় চলতি বছরে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণ হতে পারে বিশ্ব জুড়ে। এখনই ব্যবস্থা নেওয়া না-হলে প্রায় ২৭ কোটি মানুষকে অভুক্ত থাকতে হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিলেন বিশ্ব খাদ্য প্রকল্পের মুখ্য অর্থনীতিবিদ আরিফ হুসেন। আজ প্রকাশিত এই সংক্রান্ত রিপোর্টে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেসও। এই রিপোর্টের ভিত্তিতে সব দেশকে একজোট হয়ে পদক্ষেপ করার আর্জিও জানিয়েছেন তিনি। গত কাল জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনেও ওঠে করোনা প্রসঙ্গ। কোভিড-প্রতিষেধক আবিষ্কার হলে তা যাতে সব দেশ পায়, সেই নীতিতে সর্বসম্মতি জানিয়েছে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশ। করোনা-মোকাবিলায় হু-এর ভূমিকা নিয়ে গোড়া থেকেই অসন্তুষ্ট আমেরিকা। গত কাল অবশ্য হু-র প্রশংসাই করেছে জাতিসংঘ। এ দিকে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, স্পেনের মতো বহু দেশ লকডাউন তোলার কথা ভাবছে। আর তাতেই বিপদ দেখছে হু। হু-র প্রধান টেডরস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস জানান, এই ভাইরাস এখনও অনেকটাই অচেনা। প্রতিষেধকও দূর অস্ত্। তাই নিয়ম না-মানলে এই শত্রুই আগামী দিনে আরও বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। হু-র পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অধিকর্তা তাকেশি কাসাই বলেন, ‘‘নাগরিকদের সুস্থ রেখে কী ভাবে অর্থনীতিকে সচল রাখা যায়, তা নিয়েই ভাবনা জরুরি।’’ ভাবতে বলছে জাতিসংঘেরও। বিশেষত, দিন-আনি-দিন-খাই মানুষদের কথা। বিশ্ব খাদ্য প্রকল্পের দাবি, বিশ্বব্যাপী আর্থিক বিপর্যয় এবং লকডাউনে ইতিমধ্যেই বহু লোকের সামান্য সঞ্চয়টুকুও ফুরিয়েছে। করোনার দাপটে চাকরি হারানোর পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি, প্রবাসীদের পাঠানো টাকার পরিমাণ কমে যাওয়া এবং ভ্রমণ-সহ নানা বিধিনিষেধের কারণে আয় কমায় এ বছর আরও ১৩ কোটি মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে পারেন। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ২৭ কোটিতে পৌঁছতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের। রিপোর্টে বলা হয়েছে, উদ্ভুত পরিস্থিতিতে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশ। বিশ্বব্যাপী লকডাউন ও মন্দার কারণে খাদ্যসামগ্রী বণ্টনেও অসুবিধা হচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি বিপদে অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক এবং উদ্বাস্তু ও গৃহযুদ্ধে বাস্তুচ্যুত মানুষেরা। করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যাও লাফিয়ে বাড়ছে। সিঙ্গাপুর সম্প্রতি ‘সংক্রমণ নিয়ন্ত্রিত’ বলে জানিয়েছিল। কিন্তু সোমবার পর্যন্ত হিসেব বলছে, ফের সেখানে রোজ প্রায় দ্বিগুণ হারে বাড়ছে সংক্রমণ। আমেরিকায় আক্রান্ত ৮ লক্ষ। মৃত ৪৪ হাজারেরও বেশি। স্পেনে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে প্রায় ৪ হাজার আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। রাশিয়ায় নয়া আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ছুঁইছুঁই। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×