ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্দিনে শিরোপা জয়ের আশা বার্সার

প্রকাশিত: ১২:৩৩, ১৭ এপ্রিল ২০২০

দুর্দিনে শিরোপা জয়ের আশা বার্সার

জাহিদুল আলম জয় ॥ স্প্যানিশ লা লিগার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বার্সিলোনা। ২০১৮-১৯ মৌসুমে শিরোপা জয় করা কাতালানরা এবারের ২০১৯-২০ মৌসুমে বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। তাদের টেক্কা দিচ্ছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদ। শিরোপা পুনরুদ্ধারের মিশনে গ্যালাক্টিকোরা বেশ ছন্দেই ছিল। বার্সার চেয়ে লম্বা সময় এগিয়ে ছিল জিনেদিন জিদানের দল। কিন্তু মরণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে লীগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগের কয়েক রাউন্ডে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন রামোস, বেনজেমারা। যে কারণে তাদের টপকে আবারও পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষস্থানে উঠে আসে লিওনেল মেসির দল। করোনার কারণে লীগ বন্ধ হওয়ার আগে ৩৮ রাউন্ডের মধ্যে খেলা হয়েছে ২৭ রাউন্ড। এর মধ্যে শীর্ষে থাকা বার্সার পয়েন্ট ৫৮ আর দুইয়ে থাকা রিয়ালের ভা-ারে জমা ৫৬ পয়েন্ট। এখন যে অবস্থা তাতে এবারের মৌসুমে বাতিলও হয়ে যেতে পারে। আবার বাতিল না হলে শীর্ষে থাকা বার্সাকে ট্রফি দেয়া হতে পারে। কিন্তু কাতালানরা এভাবে চ্যাম্পিয়ন হতে চায় না। দলটির কোচ কিকে সেটিয়েন এক সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন, মাঠে খেলেই অর্থাৎ লড়াই করেই শিরোপা জিততে চান তারা। সাক্ষাতকারে সেটিয়েন বলেন, আমি চাই অবশ্যই আবার খেলা মাঠে গড়াক। আর আমরা খেলেই চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। এরপর বাস্তবতার দিকে তাকিয়ে বার্সা বস বলেন, কিন্তু বাস্তবতা হলো, পরিস্থিতি একইরকম আছে এবং লীগ মৌসুমের সময় পার হয়ে যাচ্ছে। আমি জানি না, শিরোপার জন্য এটাই (বর্তমানে এগিয়ে থাকা) যথেষ্ট কিনা। তবে এভাবে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ভাবতে চাচ্ছি না।শিরোপা লড়াইয়ে কিছুটা এগিয়ে থাকায় স্বস্তিও আছে সেটিয়েনের কণ্ঠে। তিনি বলেন, যদি আমাদের না খেলেই মৌসুম শেষ করতে হয় সেটা হবে হতাশার। আর যদি আমরা খেলতে পারি তাহলে সেটা দারুণ হবে। দেখা যাক আমরা এগিয়ে থাকতে পারি কিনা। তবে বার্সা কোচ এই কঠিন সময়ে খেলা নিয়ে ভাবতে চাচ্ছেন না। তার বিশ্বাস সঙ্কটময় এই সময় দ্রুত কেটে যাবে। মানুষ আগের মতো স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে। তবে বার্সায় বর্তমানে যে অস্থির অবস্থা বিরাজ করছে তাতে তাদের শিরোপা জয় জরুরী বলে মনে করছেন অনেকে। এদিকে আবারও বার্সিলোনায় ভাঙনের সুর বেজেছে। এবার একসঙ্গে ক্লাবটির ছয় বোর্ড পরিচালক পদত্যাগ করেছেন। করোনাভাইরাসের কারণে যখন সব ধরনের ফুটবল স্থগিত, এমন সময় শীর্ষ কর্মকর্তাদের একযোগে পদত্যাগে বিস্মিত হয়েছেন অনেকে। বার্সিলোনা সভাপতি জোশে মারিয়া বার্টোমেউয়ের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেয়া ছয় পরিচালক হলেনÑ সহসভাপতি এমিলি রোউসান্ড ও এনরিক টোম্বাস, পরিচালক সিলভিও এলিয়াস, মারিয়া টেক্সিডোর, জোশে পন্ট এবং জর্ডি ক্লাসামিগ্লিয়া। এর মধ্যে মারিয়া টেক্সিডোর, জর্ডি ক্লাসামিগ্লিয়া ছাড়া বাকিদের ক্লাব সভাপতি নিজেই সরে যেতে বলেছিলেন। সভাপতির কাছে লেখা এক চিঠিতে নিজেদের পদত্যাগের বিষয়টি জানিয়েছেন ছয় পরিচালক। এরপর এক যৌথ বিবৃতিও প্রকাশ করা হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে যে কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা থেকে বের হওয়ার জন্য বিবৃতিতে ক্লাব নেতৃত্বকে ঢেলে সাজানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। এজন্য প্রয়োজনে নতুন নির্বাচন দেয়ার ব্যাপারেও পরামর্শ দিয়েছেন তারা। মূলত ক্লাব সভাপতি বার্টোমেউয়ের ব্যর্থতা সামনে এনে তার পদত্যাগ দাবি করেন ছয় পরিচালক। ইতোমধ্যে অবশ্য বার্সা কর্তৃপক্ষ শূন্যস্থান পূরণ করে নতুনদের নিয়োগ দিয়েছে। পুনর্গঠনের ঘোষণা দেয়ার পর বার্সিলোনা ক্লাবের মূল দলের ম্যানেজার করা হয়েছে জ্যাভিয়ের বোর্ডাসকে। ‘বি’ দল, যুব দল ও নারী ফুটবল দলের দায়িত্ব পেয়েছেন জ্যাভিয়ের ভিলাহোয়ানা। করোনাভাইরাসের কারণে মাত্র এক মাস খেলা বন্ধ থাকাতেই বার্সার আর্থিক দৈন্যতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তাই ক্লাবের কর্মচারীতের যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হন, বেতন যাতে পুরোটাই পান সেজন্য মেসি-সুয়ারেজরা বেতনের ৭০ শতাংশ কম নিচ্ছেন।
×