ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে কিট সঙ্কট ॥ এক ল্যাবেই চলছে পরীক্ষা

প্রকাশিত: ১০:৪৪, ১৭ এপ্রিল ২০২০

চট্টগ্রামে কিট সঙ্কট ॥ এক ল্যাবেই চলছে পরীক্ষা

হাসান নাসির, চট্টগ্রাম অফিস ॥ মরণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরীক্ষায় কিট সঙ্কটে পড়েছে চট্টগ্রামের একমাত্র ল্যাব। ফলে ফৌজদারহাটে অবস্থিত বিশেষায়িত হাসপাতাল বিআইটিআইডিতে (বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এ্যান্ড ইনফেশসাস ডিজিজেস) নমুনা সংগৃহীত হলেও ব্যাহত হচ্ছে পরীক্ষা। প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধির কারণে কিট সরবরাহ যেখানে বাড়ার কথা, সেখানে দেখা দিয়েছে সঙ্কট। বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে চিকিৎসা প্রত্যাশী সাধারণ মানুষকে। এদিকে চট্টগ্রামের মতো একটি বড় বিভাগে করোনা পরীক্ষা চলছে মাত্র দুটি ল্যাবে। পরিস্থিতি বিবেচনায় ল্যাব সংখ্যা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা থাকলেও বাস্তবায়নের কাজটি চলছে ধীর গতিতে। বিআইটিআইডি ল্যাবে পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, করোনা পরীক্ষা করতে হয় কয়েকটি ধাপে। প্রয়োজন হয় দুই ধরনের কিট। করোনা পরীক্ষার জন্য উভয় ধরনের সমসংখ্যক কিট নেই। ফলে ভাইরাস সংক্রমণ টেস্ট চালু রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। বুধবার এক শ’টি নমুনা পরীক্ষার মতো কিট ছিল। বৃহস্পতিবার দেখা দেয় কিটের অভাব। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ এই সঙ্কট দূর করার চেষ্টা করছে। সূত্র জানায়, পরীক্ষার জন্য দুই ধরনের কিটের মধ্যে পিসিআর সঙ্কট নেই। কিন্তু দরকার সমসংখ্যক এক্সট্রেকশন কিটেরও। পিসিআর কিট প্রয়োজন হয় পরীক্ষার একেবারে শেষ ধাপে। আগের উপকরণগুলো না থাকলে পরেরগুলো থেকে লাভ নেই। চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক হাসান শাহরিয়ার কবির জনকণ্ঠকে বলেন, কিট সমস্যা থাকবে না। সেই ব্যবস্থা আমরা করছি। চট্টগ্রাম বিভাগের বিরাট জনগোষ্ঠীর করোনা পরীক্ষার প্রস্তুতি বিষয়ে তিনি জানান, এখন বিআইটিআইডি এবং কক্সবাজার মেডিক্যালে করোনা পরীক্ষা হচ্ছে। কুমিল্লা, নোয়াখালীতেও ল্যাব স্থাপন করা হবে। চট্টগ্রাম মহানগরীর জনসংখ্যা বিবেচনায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে দ্বিতীয় ল্যাব বাস্তবায়নাধীন আছে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি এ বিষয়ে জানান, কিটের জন্য করোনা পরীক্ষা যেন ব্যাহত না হয়, সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ রয়েছে। বৃহস্পতিবারই একটি ধাপের প্রায় এক হাজার কিট চট্টগ্রামে এসে পৌঁছেছে জানিয়ে তিনি বলেন, দ্বিতীয় ধাপের কিটও শীঘ্রই এসে পড়বে। করোনা পরীক্ষা থমকে যাবে না বলে তিনি আশ্বস্ত করেন। চট্টগ্রামে নমুনা পরীক্ষা আরও বৃদ্ধির বিষয়ে সিভিল সার্জন বলেন, যত বেশিসংখ্যক নমুনা পরীক্ষার নির্দেশনা রয়েছে মন্ত্রণালয় থেকে। কিট সরবরাহ বাড়ানোর পাশাপাশি ল্যাবও বৃদ্ধি করা হচ্ছে। সপ্তাহখানেকের মধ্যেই চমেক হাসপাতালের ল্যাব প্রস্তুত হয়ে যাবে বলে তিনি জানান। উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের বিআইটিআইডিতে গত ২৬ মার্চ করোনার নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়। ফৌজদারহাটে অবস্থিত ল্যাবটিতে এ পর্যন্ত ১০১৪টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এরমধ্যে ৩৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। আক্রান্তদের মধ্যে ৩২ জন চট্টগ্রামের, ২ জন নোয়াখালীর এবং ২ জন লক্ষ্মীপুর জেলার অধিবাসী। এছাড়া সিভিল সার্জন আরও জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নেয়া ২৮ জন বর্তমানে সঙ্কটমুক্ত। তিনি জানান, এ পর্যন্ত ৩৬ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে, যার মধ্যে ৪ জন মারা গেছে।
×