ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার জারি

ব্যাংকগুলোর ঋণ দেয়ার ক্ষমতা বাড়ল

প্রকাশিত: ১১:২০, ১৩ এপ্রিল ২০২০

  ব্যাংকগুলোর ঋণ দেয়ার  ক্ষমতা বাড়ল

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বেসরকারী খাতের ব্যাংকগুলোর ঋণপ্রবাহ বাড়াতে ঋণ আমানত অনুপাত সীমা (এডিআর) ২ শতাংশ বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে প্রচলিত ধারার একটি ব্যাংক ১০০ টাকা আমানতের বিপরীতে ৮৭ টাকা এবং ইসলামী ব্যাংকগুলো ৯২ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিতে পারবে। আগামী ১৫ এপ্রিল থেকে যা কার্যকর হবে। রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফসাইট সুপারভিশন থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলায় বাংলাদেশ ব্যাংক এরই মধ্যে দুই দফায় ব্যাংকগুলোর নগদ জমা সংরক্ষণের (সিআরআর) হার দেড় শতাংশ কমিয়ে ৪ শতাংশ নির্ধারণ করে। জানা গেছে, করোনাভাইরাসের কারণে সঙ্কটকালে অর্থনৈতিক ক্ষতির হাত থেকে দেশকে রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোট ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার পাঁচটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। এর মধ্যে দু’টি প্যাকেজের আওতায় এসএমএমই, শিল্প ও সেবাখাতে ৫০ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিতে হবে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব উৎস থেকে। এ ঋণ দিতে যেন কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য ব্যাংকগুলোর হাতে টাকা বাড়াতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একইসঙ্গে বেসরকারী খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়ানোর মাধ্যমে অর্থনীতির গতি সচল রাখতে ব্যাংকগুলোকে নানা ছাড় দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের রবিবারের সার্কুলারে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সীমিত হয়ে পড়েছে। এ প্রেক্ষাপটে বেসরকারী খাতে ঋণপ্রবাহে গতিশীলতা আনা, ব্যাংকিংখাতের সার্বিক তারল্য পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বিভিন্ন আর্থিক প্যাকেজ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত প্রচলিত ধারার ব্যাংকের জন্য অগ্রিম আমানত হার (এডিআর) ৮৫ শতাংশ থেকে ২ শতাংশ বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ৮৭ শতাংশ নির্ধারণ করা হলো। আর ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক এবং প্রচলিত ধারার ব্যাংকের ইসলামী ব্যাংকিং কার্যক্রমের জন্য বিনিয়োগ আমানতের হার (আইডিআর) ৯০ শতাংশ থেকে ২ শতাংশ বাড়িয়ে ৯২ শতাংশ নির্ধারণ করা হলো। আগামী ১৫ এপ্রিল থেকে এ নির্দেশনা কার্যকর হবে। মূলত আমানতকারীদের সুরক্ষার লক্ষ্যে প্রতিটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মোট তলবি ও মেয়াদী দায়ের একটি অংশ বাংলাদেশ ব্যাংকে সংরক্ষণ করতে হয়। ফলে আমানতের কত অংশ ঋণ দেয়া যাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সময়ে-সময়ে তা ঠিক করে দেয়। বাংলাদেশ ব্যাংকে ব্যাংকগুলো যে অর্থ রাখে তার মধ্যে একটি অংশ রাখতে হয় নগদে এবং একটি অংশ রাখতে হয় বিভিন্ন বিল ও বন্ডের বিপরীতে। সাম্প্রতিক সময়ে নগদ সংরক্ষণের হার দেড় শতাংশ কমিয়ে ৪ শতাংশে নামানো হয়েছে। আর বিভিন্ন বিল ও বন্ডের বিপরীতে এসএলআর হিসেবে সংরক্ষণের হার ১৩ দশমিক ৫০ শতাংশে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। সিআরআর সংরক্ষণের হার কমানোর ফলে ব্যাংকগুলোর হাতে যে বাড়তি টাকা আসবে তা বিনিয়োগ করার সুযোগ দিতে এখন ঋণ আমানত অনুপাত বাড়ানো হলো। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে অর্থনীতির চাকা সচল রাখার সবচেয়ে বড় উপায় বাজারে তারল্য সরবরাহ বাড়ানো। বিশ্বের সবদেশ এখন অর্থনীতির গতি সচল রাখতে এ উপায় বেছে নিয়েছে। সহজ শর্তে ঋণের জন্য বাংলাদেশে প্রয়োজন হলে আগামীতে আরও বিভিন্ন ছাড় দেয়া হবে।
×