ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সারাদেশ লকডাউন দরকার

প্রণোদনায় সঙ্কট নিরসন হবে না ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ১০:০৫, ৬ এপ্রিল ২০২০

  প্রণোদনায় সঙ্কট নিরসন হবে না ॥  ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার আর্থিক প্রণোদনা সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিএনপি। রবিবার বিকেলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার উত্তরার বাসা থেকে ভিডিও বার্তায় দলের পক্ষে প্রতিক্রিয়ায় বলেন, গরিব মানুষের জন্য অনুদান নয়, ব্যবসায়ীদের জন্য ঋণ প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এটা দিয়ে চলমান সঙ্কট নিরসন হবে না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনই সারাদেশ লকডাউন করা দরকার। ফখরুল বলেন, করোনা মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী যে বিশেষ আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন, সেখানে গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোকে অবহেলা করা হয়েছে। এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত হচ্ছে স্বাস্থ্য খাত। সেই খাতের কোন আলোচনাই প্রণোদনা প্যাকেজে নেই। দিন এনে দিন খাওয়া মানুষের জন্যও কোন কথা বলা হয়নি। এ ছাড়া এই প্যাকেজে এক ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে আরেকটি ডিপার্টমেন্টের সমন্বয়ের কোন বিষয়ই নেই। ফখরুল বলেন, আমরা আশা করেছিলাম বিরাজমান পরিস্থিতিতে দেশের সঙ্কট নিরসনে প্রধানমন্ত্রী আরও অনেক কিছু ঘোষণা করবেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। তিনি অনেকগুলো বিষয় এড়িয়ে গেছেন। জাতি তার কাছে এমনটি আশা করেনি। করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় এই মুহূর্তে সারাদেশ পুরোপুরি লকডাউন করার প্রয়োজন আছে কি? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই সেটা প্রয়োজন। এখনই সারাদেশ লকডাউন করা দরকার। আমরা মনে করি, একাত্তরে যেভাবে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি, এবারও সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে পারব। তবে তার জন্য প্রয়োজন সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা দিয়েছেন সেটা শিল্পখাতে ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণের প্রণোদনা। কিন্তু দেশে দিন এনে দিন খায় এমন মানুষের সংখ্যা বেশি। এ সেক্টরের মানুষের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজের মধ্যে কোথাও দেখতে পাইনি। এ মুহূর্তে আমাদের মূল সমস্যা হচ্ছে, দিন এনে দিন খায় যারা তাদের। তারা এখন রাস্তায় বেরিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তাদের বিষয়টি অবহেলা করা হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই মুহূর্তে স্বাস্থ্যখাতের সামর্থ্য বৃদ্ধি করা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। করোনা শনাক্ত করার কিট, যারা রোগীদের চিকিৎসা করছেন সেই ডাক্তার, নার্স, মেডিক্যাল এ্যাসিস্ট্যান্টদের কথা যদি আমরা সুনির্দিষ্ট করে বলি, তাহলে তাদের সুরক্ষার জন্য, তাদের নিরাপত্তার জন্য সেভাবে অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি। আর প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনার প্রত্যেকটি প্যাকেজ ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে শিল্প মালিকদের কাছে যাবে। মির্জা ফখরুল বলেন, আগে যে পাঁচ হাজার কোটি টাকা পোশাক শিল্পের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল সেই টাকা কি পোশাক শ্রমিকদের কাছে সরাসরি যাবে? নাকি মালিকদের মাধ্যমে শ্রমিকদের কাছে যাবে, তা প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্যাকেজে উল্লেখ করা হয়নি। এটা স্পষ্ট করে বলা দরকার ছিল। এর আগে শনিবার বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দলের মহাসচিব করোনাভাইরাসজনিত বৈশ্বিক মহামারীর কারণে দেশের অর্থনীতিতে সম্ভাব্য মহাদুর্যোগ মোকাবেলায় ৮৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের জন্য অর্থনৈতিক প্যাকেজ প্রস্তাব করেন। এই প্রণোদনা প্যাকেজের ৬১ হাজার কোটি টাকা স্বল্পমেয়াদী খাতে, ১৮ হাজার কোটি টাকা মধ্যমেয়াদী খাতে এবং ৮ হাজার কোটি টাকা অন্য খাতে ব্যয় করার প্রস্তাব দেন বিএনপি মহাসচিব। এর একদিন পর রবিবার করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দেশের সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রভাব উত্তরণে গণভববনে সংবাদ সম্মেলন করে প্রধানমন্ত্রী ৫টি প্যাকেজে ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেন।
×