ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বকেয়া বেতন দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ জুট মিল শ্রমিকদের

প্রকাশিত: ১০:৪৮, ১ এপ্রিল ২০২০

বকেয়া বেতন দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ জুট মিল শ্রমিকদের

নিজস্ব সংবাদদাতা, দাউদকান্দি, ৩১ মার্চ ॥ বকেয়া বেতন ভাতার দাবিতে ভাংচুর ও বিক্ষোভ করেছেন দাউদকান্দির শহীদনগর সোনালি আঁশ জুট মিলের শ্রমিকরা। দুপুর থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা মিলের প্রধান ফটক এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে কয়েক হাজার শ্রমিক। ফলে উভয়পাশে ১০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে শ্রমিকরা কয়েকটি সিসি ক্যামেরা ও সার্ভার কক্ষ ভাংচুর করে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানান, গত আট সপ্তাহ যাবত বেতন পাই না। আজ দেবে কাল দেবে বলে আট সপ্তাহ পার করেছে। গত ২১ মার্চ মিলের উপ-সহকারী প্রকৌশলী শামীম আহম্মেদ শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের দাবি জানান মালিকপক্ষের কাছে। ওইদিন রাতেই মালিকপক্ষের লোকজন শামীমকে মারধর করে পরদিন চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে দেয়। ২৫ মার্চ শ্রমিকরা বেতন পরিশোধের দাবি জানালে স্থানীয় মনির হোসেন মিলের কর্মচারী শ্রমিকদের ওপর হামলা চালায়। ওই দিন খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম খান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সোনালি আঁশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে শ্রমিকদের ৩০ মার্চ সবার বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হবে বলে জানান। বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলন করায় ২৭ মার্চ ৫০ শ্রমিককে এক সপ্তাহের বেতন পরিশোধ করে চাকরি থেকে ছাঁটাই করে মিল কর্তৃপক্ষ। ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকরা মঙ্গলবার দুপুরে মিল গেটে বিক্ষোভ করলে ভেতরে কাজ করা শ্রমিকরা এসে তাদের সঙ্গে আন্দোলন শুরু করেন। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা গেটের কয়েকটি সিসি ক্যামেরা ও সার্ভার কক্ষ ভাংচুর করে। পরে বিকেল সাড়ে চারটায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকরা। বকেয়া পরিশোধের দাবি না মানা পর্যন্ত অবরোধ চলবে বলে শ্রমিকরা জানান। আন্দোলনকারী শ্রমিক আমেনা, কুলসুম ও ফরিদা বেগম বলেন, সারাদেশে করোনাভাইরাসের কারণে মিল বন্ধ করে শ্রমিকদের টাকা পরিশোধ করেছে। আমাদের বলেছে শিপমেন্ট শেষ করলে আমাদের আট সপ্তাহের বেতন দিয়ে দেবে। আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করার পর আমাদের বেতন না দিয়ে উল্টো যারা আন্দোলন করেছে তাদের নির্যাতন করেছে। গত রবিবার বেতন দেবে বলে প্রশাসনের সামনে বলেছে। আমরা মঙ্গলবার পর্যন্ত অপেক্ষা করে সব বেতন পরিশোধের এক দফা দাবিতে আন্দোলনের জন্য মহাসড়ক অবরোধ করি। আমরা বেতন না পাওয়া পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ চালিয়ে যাব। জেনারেল ম্যানেজার জহিরুল ইসলাম জানান, করোনাভাইরাসের প্রভাবে আমাদের শিপমেন্ট বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের কয়েক সপ্তাহের বেতন আটকে গেছে। এ নিয়ে ২৫ মার্চ আন্দোলন করা হলে কয়েকজনকে বেতন দিয়ে চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হলে তারাই (ছাঁটাইকৃত) এসে এ হামলা ও ভাংচুর চালায়। তিনি আরও বলেন, শ্রমিকদের তোপের মুখে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামসহ আমরা কয়েকজন দৌঁড়ে বাংলোতে গেলে সেখানে গিয়ে তারা ভাংচুর ও লুটপাট করে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ আলম জানান, গত সপ্তাহে শ্রমিকদের আন্দোলনের কথা শুনে ইউএনওসহ আমরা মিল মালিকের সঙ্গে কথা বলে শ্রমিকদের আশ^স্ত করি যে রবি/সোমবারে বকেয়া বেতন পরিশোধ করবে মালিকপক্ষ। এর মধ্যে শুনেছি যে এক সপ্তাহের বেতন পরিশোধ করে আন্দোলনকারী ৫০ শ্রমিককে ছাঁটাই করেছে। হয়তো তারাই আন্দোলন করছে।
×