ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

টিভিতে পাঠদান

প্রকাশিত: ১১:৫১, ২৪ মার্চ ২০২০

টিভিতে পাঠদান

করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্ব আতঙ্কিত, উদ্বিগ্ন। দেশ ও মানুষের সামগ্রিক সুরক্ষায় বিশ্বে অনেক রাষ্ট্র এখন অবরুদ্ধ। অন্যদের সঙ্গে প্রায় যোগাযোগ বন্ধ। কোভিড-১৯-এর এমন দুঃসময়ে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ওপরও পড়েছে নেতিবাচক প্রভাব। সমস্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং কোচিং সেন্টার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সরকারী নির্দেশে। তবে স্কুলের শিক্ষার্থীদের পাঠ গ্রহণের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় যা তা হলো জ্ঞানার্জনের এই মূল্যবান সময়গুলো হেলায় নষ্ট করা উচিত নয়। সঙ্গত কারণেই সংসদ টিভির মাধ্যমে পাঠদানের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর। পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমে তিন দিন শ্রেণী কার্যক্রম প্রচার করা হবে। পরবর্তীতে প্রতিদিন ৭টি করে সপ্তাহে ৫ দিনে ৩৫টি ক্লাসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের পাঠদান কর্মসূচী সংসদ টিভি প্রচার করবে, যাতে শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই তাদের প্রয়োজনীয় শিক্ষা কার্যক্রম গ্রহণ করার সুযোগ পায়। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এই কার্যক্রম প্রচার করা হবে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ‘এ টু আই’ প্রকল্পের কারিগরি সহায়তার মাধ্যমে মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরের এই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে মাউশি কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ব্যানবেইস মোবাইল ফোন ‘রবি’ ও একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডিওতে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে পাঠদান কর্মসূচী রেকর্ড করা শুরু হয়ে গেছে। নতুন বিবেচনায় অনলাইনভিক্তিক শ্রেণী পাঠ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। তাদের মূল্যবান শিক্ষা সময়টুকু যাতে কোন আশঙ্কা আর উদ্বিগ্নের পর্যায়ে না যায় সেজন্যই এমন তাৎক্ষণিক পাঠদান ব্যবস্থা। অনলাইনভিত্তিক পাঠদান কার্যক্রম এখন সারাবিশ্বের একটি অতি আবশ্যক বৈজ্ঞানিক কর্মসূচী। তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ বিস্তারের যুগে এভাবে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গার শিক্ষার্থীদের শিক্ষা গ্রহণের সমস্ত সুযোগ-সুবিধা এবং প্রাসঙ্গিক ব্যবস্থাপনাও হাতের মুঠোয় চলে আসছে। বর্তমান শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংসদ টিভির মাধ্যমে স্কুলের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের জন্য পাঠদান কর্মসূচী চালু করেছে, যা সময়োপযোগী এবং তাৎক্ষণিক কর্মযোগের এক ভিন্নমাত্রার সংযোগ। এর আগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হলে অনেকে আবার সেই সুযোগে সারা বাংলাদেশ ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেটাও সরকারের কঠোর নজরদারিতে চলে আসায় সেখানেও প্রবল আপত্তি তোলা হয়েছে। এখনও বলা হচ্ছে ছেলেমেয়েরা রাস্তায় যাতে যথেচ্ছ চলাফেরা না করে ঘরের মধ্যে যেন থাকে। সন্তানদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অভিভাবকদেরও খেয়াল রাখা বিশেষ দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। সেখানে সরকার আরও এক ধাপ এগিয়ে সংসদ টিভির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের সুযোগ করে দিচ্ছে তাদের মঙ্গল বিবেচনায়। শ্রেণী রুটিন অনুযায়ী দেশের স্বনামখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞ এবং দক্ষ শিক্ষকম-লী এই ক্লাসগুলো পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন। ইতোমধ্যে বিদ্যাশিক্ষার সর্বোচ্চ পাদপীঠ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও অনলাইনভিত্তিক ক্লাস নেয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে।
×