ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জোরালো হচ্ছে টোকিও অলিম্পিক স্থগিতের দাবি

প্রকাশিত: ১১:৫৪, ২২ মার্চ ২০২০

জোরালো হচ্ছে টোকিও অলিম্পিক স্থগিতের দাবি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আগামী জুলাই-আগস্ট মাসে শুরু হওয়ার কথা ক্রীড়ার মহাযজ্ঞ অলিম্পিকের। কিন্তু এই মুহূর্তে গোটা দুনিয়াজুড়েই করোনাভাইরাসের আতঙ্ক। ভয়ঙ্কর এই ভাইরাস প্রতিদিনই কেড়ে নিচ্ছে হাজার হাজার প্রাণ। এই ভাইরাসের কারণে ইতোমধ্যেই ক্রীড়াঙ্গনের সব ধরনের ইভেন্ট স্থগিত করা হয়েছে। ইউরোপের শীর্ষ সব লীগসহ, ইউরোপা লীগ, চ্যাম্পিয়ন্স লীগও এখন বন্ধ। কিন্তু তারপরও জাপানের টোকিও অলিম্পিকের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। শুধু তাই নয়, করোনাভাইরাসের ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যেও শুক্রবার গ্রীসের কাছ থেকে অলিম্পিকের মশাল গ্রহণ করেছে আয়োজক দেশ জাপান। তবে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) প্রধান টমাস বাখ মনে করেন, এখনই অলিম্পিক বন্ধের সিদ্ধান্ত হবে অকালপক্ষ। তাই পরিস্থিতি বিবেচনা করে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মেনেই অলিম্পিকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এ প্রসঙ্গে নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে টমাস বাখ বলেন, ‘অবশ্যই আমরা বিভিন্ন দৃশ্যপট থেকে বিষয়টা বিবেচনা করছি। কেননা, আমাদের সামনে এখনও চার থেকে সাড়ে চার মাস সময় রয়েছে। আমাদের জন্য এখনই গেমস স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া মোটেও ঠিক হবে না। আমাদের নিজস্ব টাস্কফোর্স রয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দিক-নির্দেশনাও অনুসরণ করছি আমরা। তাই টাস্কফোর্সের কোন রকম সুপারিশ ছাড়া এখনই অলিম্পিক বন্ধের কোন গুঞ্জন কিংবা সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়টি হবে অকালপক্ষ।’ টমাস বাখ এমনটা বললেও বাস্তবতা অনেক ভিন্ন। প্রতিযোগিতাটি পিছিয়ে দেয়ার জোর দাবি উঠতে শুরু করেছে চারিদিক থেকে। বৈশ্বিক মহামারীতে রূপ নেয়া কভিড-১৯ রোগে সারাবিশ্বে শনিবার পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে আড়াই লাখ মানুষ। এই সময়ে মৃত্যু ঘটেছে ১১ হাজারেরও বেশি মানুষের। অতি সংক্রামক নোভেল করোনাভাইরাসের এমন প্রাদুর্ভাবের মাঝেও কদিন আগে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে আশা প্রকাশ করেছিলেন যে, পরিকল্পনা অনুযায়ী জুলাইয়ে টোকিও অলিম্পিক হবে। আগামী ২৪ জুলাই থেকে ৯ অক্টোবর জাপানের টোকিও শহরে হওয়ার কথা বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া আসর। তবে বাস্তবতার সঙ্গে বদলাতে শুরু করেছে ভাবনাও। যুক্তরাষ্ট্রে ইতোমধ্যে অলিম্পিকের বেশ কিছু ট্রায়াল ইভেন্ট স্থগিত করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাঁতার সংস্থা দেশটির অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিক কমিটির কাছে আবেদন করেছে, তারা যেন এবারের আসর ১২ মাসের জন্য পিছিয়ে দেয়ার অনুরোধ করে। বিবিসির দাবি, একটি চিঠি তারা দেখেছে যেটিতে যুক্তরাষ্ট্র সাঁতার সংস্থার প্রধান নির্বাহী টিম হিঞ্চি লিখেছেন, ‘বিশ্বব্যাপী মানুষের এমন স্বাস্থ্য ঝুঁকির মাঝে আগামী গ্রীষ্মে অলিম্পিক আয়োজনে জোর দেয়াটা কোন সমাধান হতে পারে না।’ যুক্তরাজ্য এ্যাথলেটিক্সের নতুন চেয়ারম্যান নিক কাওয়ার্ড মনে করেন, করোনাভাইরাসের সমস্যার মাঝে টোকিও অলিম্পিক অবশ্যই পিছিয়ে দেয়া উচিত। তিনি বলেন, ‘বিষয়টিকে এভাবেই রেখে দেয়া এখন পুরো সিস্টেমের ওপর প্রচ- চাপ বাড়াচ্ছে। এটি এখন বুঝতে হবে ও বিবেচনা করতে হবে।’ গ্রেট ব্রিটেনের তায়কোয়ান্দো পারফর্মেন্স ডিরেক্টর গ্যারি হেল এখন জাপানে অবস্থান করছেন। ওখানকার পরিস্থিতি কাছ থেকে দেখে তিনি জানিয়েছেন, আয়োজকরা নার্ভাস এবং আসছে জুলাইয়ে এটি শুরু করার সম্ভাবনা তারা দেখছেন ৫০-৫০। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে ইউরোপের অধিকাংশ দেশে সব ধরনের খেলাধুলা স্থগিত করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যে যেমন এ্যাথলেটদের প্রস্তুতির সব ভেন্যু বন্ধ করে দেয়া হয়েছে গত সপ্তাহে। অধিকাংশ দেশে অনেকটা একই অবস্থা। এই পরিস্থিতিতে টোকিও অলিম্পিক পিছিয়ে দেয়া এখন অনেকটাই সময়ের ব্যাপার বলে ধারণা করা হচ্ছে। একই কারণে এরই মধ্যে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ এবং লাতিন আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্ট কোপা আমেরিকা এক বছর করে পিছিয়ে গেছে।
×