ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আওয়ামী লীগের প্রার্থী শফিউল মহিউদ্দিন বেসরকারীভাবে নির্বাচিত

প্রকাশিত: ১১:০২, ২২ মার্চ ২০২০

আওয়ামী লীগের প্রার্থী শফিউল মহিউদ্দিন বেসরকারীভাবে নির্বাচিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোঃ শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন নির্বাচিত হয়েছে। এই আসনের ১১৭টির কেন্দ্রের সবগুলোর ফলে নির্বাচন কমিশন তাকে বেসরকারীভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করে। সব কেন্দ্রে তিনি মোট ভোট পেয়েছেন ১৫ হাজার ৯৫৫টি। অপরদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী শেখ রবিউল আলম ভোট পেয়েছেন মাত্র ৮১৭টি। এই আসনে মোট ভোট পড়ার হার মাত্র ৫.২৮ ভাগ। এদিকে করোনা আতঙ্কে ব্যাপক ভোটার অনুপস্থিতির মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয় ঢাকা ১০ আসনসহ দেশে তিন আসনের উপনির্বাচন। শনিবার সকাল ৯টা থেকে এসব আসনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ঢাকা ১০ আসনের সব কেন্দ্রে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট দেন ভোটাররা। তবে ভোটার উপস্থিতি কম থাকলে নির্বাচনে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচন নিয়ে কোন প্রার্থীই অনিয়মের অভিযোগও দেয়নি। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে ভোটার ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সকাল ৯টা ১০ মিনিটে রাজধানীর সিটি কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল, ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোঃ শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। তবে আঙুলের ছাপ এবং জাতীয় পরিচয়পত্রে নম্বর না মেলায় আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী সকালের দিকে নিজের ভোট দিতে পারেনি। তিনি রাজধানীর উত্তরার ভোটার। মাইগ্রেট করে এ আসনের ভোটার হয়েছেন। পরে ভোটার তথ্য আপডেট করা হলে বেলা ৩টায় ভোট দেন তিনি। সকাল ৯টা ৫৩ মিনিটে ভোট দিতে আসেন রাজধানীর কলাবাগান লেক সার্কাস স্কুল ভোটকেন্দ্রে। আঙুলের ছাপ না মেলায় তিনি ভোট দিতে পারেননি। তার জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বরও তখন মেলেনি। সার্ভারেও নৌকার প্রার্থীর নাম ছিল না। এ বিষয়ে ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আহসানুল হক বলেন কোন সমস্যার কারণে তার ভোটার এলাকা হয়তো ঠিকমতো মাইগ্রেট হয়নি। পরে আপডেট করা হলে তিনি এই কেন্দ্রে বেলা ৩টার দিকে ভোট দেন। ইসি কর্মকর্তারা জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে এই নির্বাচনে সব ধরনের সচেতনতা ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থার মধ্যে ইভিএমে ভোট সম্পন্ন করা হয়েছে। সংক্রমণ এড়াতে হাত ধোয়া, মাস্ক পরার ব্যবস্থা রাখা হয়। ভোটারদের জন্য কেন্দ্র-ভোটকক্ষভিত্তিক হ্যান্ড স্যানিটাইজার, টিস্যু ও অন্যান্য সামগ্রী রাখা হয়। সিভিল সার্জনের তত্ত্বাবধানে স্বাস্থ্যকর্মীরা নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান নেন। তবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সব ব্যবস্থা নেয়া হলেও শেষ পর্যন্ত এই নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল নগণ্য। এ নিয়ে কমিশনের যুক্তি তুলে ধরে ইসি সচিব মোঃ আলমগীর বলছেন, করোনার কারণে ভোটার উপস্থিতি কম হবে ধরে নিয়েই শনিবারের নির্বাচন করা সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনের বিএনপির ধানের শীষ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন শেখ রবিউল আলম রবি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, করোনাভাইরাস নয়, ভোট ব্যবস্থাপনার জন্য ভোটাররা কেন্দ্রে আসছেন না। ভোটব্যবস্থা নিয়ে মানুষ আতঙ্কে আছে। গত নির্বাচনে ৭ ভাগ ভোট পড়েছে, অথচ দেখানো হয়েছে ২৫ ভাগ। এবার ০.১ ভাগও কাউন্ট করা যাবে না। এদিকে নির্বাচনে কম ভোটার উপস্থিতি নিয়ে ইসি সচিব মোঃ আলমগীর বলেন, একটি ভোট পড়লেও নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে। নির্বাচনে যারা প্রার্থী তারা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করলেই সেটা অংশগ্রহণমূলক। পৃথিবীর অনেকে দেশের সংবিধানে রয়েছে একটি নির্দিষ্টসংখ্যক ভোটাররা না গেলে ভোট হবে না। আমাদের সংবিধানে তা নেই। একটি ভোটও যদি হয় তাহলে আমরা বলব এটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। শনিবার নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। মোঃ আলমগীর বলেন, উপনির্বাচনে ঢাকা-১০ আসনে বিকেল ৩টা নাগাদ ৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। আর গাইবান্ধা-৩ আসনে ৪০ শতাংশের উপরে এবং বাগেরহাট-৪ আসনে ৪০ শতাংশের মতো ভোট পড়েছে। ঢাকা ১০ আসনের আসনটিতে মোট ভোটার ৩ লাখ ১২ হাজার ২৮১ জন। নির্বাচনে ১১৭টি ভোটকেন্দ্রের ৭৭৬টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে। ঢাকা-১০ আসনটি ধানমণ্ডি ও হাজারীবাগ থানা এলাকা নিয়ে গঠিত। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ১৪-১৮ নম্বর ওয়ার্ড ও ২২ নম্বর ওয়ার্ড এ আসনের অন্তর্ভুক্ত।
×