ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

করোনায় মারাত্মক বিপর্যস্ত দশ দেশ

প্রকাশিত: ১১:০১, ২২ মার্চ ২০২০

করোনায় মারাত্মক বিপর্যস্ত দশ দেশ

শংকর কুমার দে ॥ বিশ্বের ১৮৫টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে করোনাভাইরাস ছড়ানোয় মারাত্মক বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে শীর্ষ ১০ দেশ। করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে প্রথম ছড়ালেও বর্তমানে বৈশ্বিক মহামারীতে রূপ নিয়েছে এই দশটি দেশে। এই দেশগুলোতে প্রতি মুহূর্তে আক্রান্ত হচ্ছে, মৃতের সংখ্যা হু-হু করে বাড়ছে। কোন দেশে কত জন আক্রান্ত হয়েছেন, কত জন মারা গেছেন, কত জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন তার ওপর ভিত্তি করে করোনা আক্রান্ত শীর্ষ দশটি দেশের নামের তালিকা তৈরি করেছে করোনাভাইরাস সম্পর্কে তথ্য সরবরাহকারী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ওয়াল্ডোমিটার প্রতিষ্ঠান। আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ডোমিটারের সর্বশেষ তথ্যমতে করোনায় সবচেয়ে শীর্ষ বিপর্যস্ত ১০ দেশ হচ্ছে ইতালি, চীন, ইরান, স্পেন, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া, নেদারল্যন্ডস, জার্মানি। এই দশটি দেশের করোনাভাইরাস সম্পর্কে তথ্য সরবরাহকারী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ওয়াল্ডোমিটারের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী দেশগুলোর পরিস্থিতি তুলে ধরা হলো। ইতালি ॥ করোনাভাইরাসে সর্বাধিক আক্রান্ত দেশ ইতালি। ইতালিতে মোট আক্রান্ত ৪৭ হাজার ২১ জন। করোনা সংক্রমণের কারণে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছেন ইউরোপের এই দেশে। সেখানে মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ৩২। আক্রান্তের তুলনায় সুস্থ হওয়ার হার সেখানে এখনো কম। মোট সুস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ১২৯জন। চীন ॥ চীনের হুবেই প্রদেশ থেকে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি হয়ে আক্রান্তের সংখ্যা সর্বাধিক হলেও বর্তমানে তা দেশটির নিয়ন্ত্রণে। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন চীনে। সেখানে মোট আক্রান্ত ৮১ হাজার ১৯৯ জন। মারা গেছেন ৩ হাজার ২৫৫ জন। কিন্তু আক্রান্ত যেমন বেশি, তেমনি সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষও সেখানে সবচেয়ে বেশি। চীনে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৭১ হাজার ৭৪০ জন। ইরান ॥ তারপরেই করোনা আক্রান্ত দেশের নামের তালিকায় ইরান। ইরানে মোট আক্রান্ত ১৯ হাজার ৬৪৪ জন। মারা গেছেন ১ হাজার ৪৩৩ জন সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৭৪৫ জন। স্পেন ॥ এরপরই স্পেন দেশটির নাম। স্পেনে মোট আক্রান্ত ২১ হাজার ৫৭১ জন। মারা গেছেন ১৯৩ জন। সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৫৮৮ জন। ফ্রান্স ॥ এরপর ফ্রান্সের নাম। ফ্রান্সে মোট আক্রান্ত ১২ হাজার ৬১২ জন। মারা গেছেন ৪৫০ জন। সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৫৮৭ জন। যুক্তরাষ্ট্র ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মোট আক্রান্ত ১৯ হাজার ৬৫৮ জন। মারা গেছেন ২৬৪ জন। সুস্থ হয়েছেন ১৪৭ জন। যুক্তরাজ্য ॥ এরপরই রয়েছে যুক্তরাজ্যের নাম। যুক্তরাজ্যে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৯৮৩ জন। মারা গেছেন ১৭৭ জন। সুস্থ হয়েছেন ৬৫ জন। দক্ষিণ কোরিয়া ॥ যুক্তরাজ্যের পরই নাম এসেছে দক্ষিণ কোরিয়ার। মোট আক্রান্ত ৮ হাজার ৭৯৯ জন। মারা গেছেন ১০২ জন। সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৬১২ জন। নেদারল্যান্ডস ॥ এরপরই নেদারল্যান্ডস দেশটির নাম। নেদারল্যান্ডসে মোট আক্রান্ত ২ হাজার ৬৫৮ জন। মারা গেছেন ২৬৪ জন। সুস্থ হয়েছেন ২ জন। জার্মানি ॥ শীর্ষ দশ দেশের নামের তালিকায় জার্মানি। জার্মানিতে মোট আক্রান্ত ১৯ হাজার ৮৪৮ জন। মারা গেছেন ৬৮ জন। সুস্থ হয়েছেন ১৪৭ জন। আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী করোনাভাইরাসে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা এখন ১১ হাজার ৩৭৯। প্রাণহানিতে চীনকে ছাড়িয়েছে ইতালি, লকডাউনের ঘোষণা আর্জেন্টিনারও। বিশ্বের ১৮৫টি দেশ ও অঞ্চলে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৭৭ হাজার ০০১ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৯০ হাজার ৬০৩ জন। উৎপত্তিস্থল চীনে প্রায় ৮১ হাজার মানুষ আক্রান্ত হলেও সেখানে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব পুরোপুরি থেমে গেছে। সংক্রমণ ঠেকাতে আগামী ২ সপ্তাহ অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট এবং বাস, ট্যাক্সি ও ট্রেনসহ সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশ। সম্পূর্ণ লকডাউনের তালিকায় নাম উঠিয়েছে আর্জেন্টিয়া। সম্পূর্ণ আর্জেন্টিনাকে লকডাউন করার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শীর্ষ দশটি দেশ থেকেই বিশ্বের বিশ্বের ১৮৫টি দেশ ও অঞ্চলে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার মধ্যে এখন বাংলাদেশটির নামও যুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশে যাতে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য করোনাভাইরাস বিপজ্জনক এক অশনি সঙ্কেত, যা জরুরী ভিত্তিতে মোকাবেলার প্রস্তুতি গ্রহণের এখনই সময়।
×