ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশে সব ধরনের খেলা স্থগিত

প্রকাশিত: ১২:০১, ১৭ মার্চ ২০২০

বাংলাদেশে সব ধরনের খেলা স্থগিত

জাহিদুল আলম জয় ॥ ভয়াবহ করোনাভাইরাসের কারণে গোটা বিশ্ব থমকে গেছে। সবকিছুতেই বিরাজ করছে স্থবিরতা। যে কারণে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনের সব খেলাধুলাই প্রায় স্থগিত হয়ে গেছে। আগামী জুনে বসতে যাওয়া ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপও স্থগিত হতে যাচ্ছে। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যাবে আজই। এমন সঙ্কটাপন্ন অবস্থার পরও বাংলাদেশে চলছিল ক্রিকেট ও ফুটবলের সবচেয়ে বড় দুই ঘরোয়া আসর ‘বঙ্গবন্ধু ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগ’ ও ‘বাংলাদেশে প্রিমিয়ার লীগ ফুটবল (বিপিএল)’। অবশেষে লীগগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। সোমবার সচিবালয়ে যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সব ফেডারেশনগুলোকে নিয়ে সভায় বসেছিলেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। সভা শেষে মন্ত্রী জানিয়েছেন ৩১ মার্চ পর্যন্ত ক্রিকেট ফুটবলসহ ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক সব ধরনের টুর্নামেন্ট স্থগিত থাকবে। এই ঘোষণার একদিন আগেও মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, এমন পরিস্থিতিতে খেলা চালিয়ে যাওয়া ঠিক হবে না। মূলত এ কারণেই দ্রুত দেশে খেলাধুলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই সিদ্ধান্তের কারণে বন্ধ হয়ে যাবে প্রিমিয়ার ক্রিকেট ও প্রিমিয়ার ফুটবল। আগেই স্থগিত হয়ে গেছে অন্যান্য খেলা। গোটা বিশ্বে একের পর এক খেলা বন্ধ হলেও বাংলাদেশে খেলা চালিয়ে যাচ্ছিল বাফুফে। আর মহা আতঙ্কের মধ্যেই ক্রিকেট লীগ শুরু করে সিসিডিম। কিন্তু সরকারের সিদ্ধান্তের কারণে আপাতত সব খেলাই বন্ধ রাখতে হবে সংশ্লিষ্ট ফেডারেশনগুলোকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে জানিয়ে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, ‘করানোভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। এ পরিস্থিতিতে স্কুল কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বন্ধ করা হয়েছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে এক মন্ত্রী বিষয়টি উপস্থাপন করলে প্রধানমন্ত্রী ক্রিকেট, ফুটবলসহ সব টুর্নামেন্ট বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশক্রমে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত আন্তর্জাতিকসহ সব খেলা বন্ধ করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক যদি কোন খেলা থাকে এপ্রিল মাসে করা হবে।’ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ক্রিকেটে অনেক খেলোয়াড় বল করার সময় লালা ব্যবহার করেন। এটা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তাই আপাতত সব খেলা বন্ধ করা হয়েছে।’ এদিকে ভ্যালেন্সিয়ার আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার ইজিকুয়েল গ্যারায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এই প্রথম লা লিগার কোন ফুটবলারের শরীরে এই ভাইরাস ধরা পড়ল। স্প্যানিশ ক্লাবটি জানিয়েছে, গ্যারায়সহ তাদের পাঁচ খেলোয়াড় ও স্টাফের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তবে তারা সবাই ভাল আছে এবং অন্যদের থেকে আলাদা আছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। চোটের কারণে আগেই মৌসুম শেষ হয়ে যাওয়া ৩৩ বছর বয়সী গ্যারায় ইনস্টাগ্রামে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটি পরিষ্কার যে আমি দুর্ভাগ্য নিয়ে ২০২০ সাল শুরু করেছি। আমি খুব ভাল আছি। অবশ্যই স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে এবং আলাদা থাকতে হবে।’ আগামী ১২ জুন শুরু হওয়ার কথা ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে ইউরোপের সেরা এই আসর স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছে ইতালিয়ান ফুটবল ফেডারেশন। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সবার আগে ফুটবল লীগ স্থগিত করেছে ইতালি। আর এই লীগই ইউরো পেছানোর দাবি তোলার কারণ। এ অবস্থায় ইতালিয়ান কোচ রবার্তো ম্যানচিনি বলেছেন, ২০২১ পর্যন্ত ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশীপ স্থগিত হয়ে গেলে তাতে তার কোন আপত্তি থাকবে না। ম্যানচিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, এবারের গ্রীষ্মে আমরা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশীপ জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। ২০২১ সালে হলে সেখানেও আমরাই জিতব। এখন উয়েফার সিদ্ধান্তের ওপর সব কিছু নির্ভর করছে। আমি সবকিছুর সঙ্গে মানিয়ে নিতে প্রস্তুত আছি। এই মুহূর্তে আমার কাছে জীবনের নিরাপত্তা সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পাবে। আজ ইউরোপিয়ান ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ইউরো ২০২০’সহ সব ঘরোয়া ও ইউরোপিয়ান আসরগুলো নিয়ে আলোচনায় বসবে। জরুরী এ বৈঠকেই ভাগ্য নির্ধারণ হবে ইউরোর। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ইতালির ২০০৬ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্যরা। সহায়তার জন্য তহবিল গঠনের ঘোষণা দিয়েছে তারা। বিশ্বকাপজয়ী দলটির অধিনায়ক ফ্যাবিও ক্যানাভারো এই উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন। ক্যানাভারো বলেন, আমি ও আমার ২০০৬ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দলের বাকি সতীর্থরা আবার মাঠে নেমেছি নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে জরুরী অবস্থায় আমাদের দেশকে সাহায্য করতে ইতালিয়ান রেড ক্রিসেন্টের জন্য তহবিল সংগ্রহে কাজ করছি। আপনিও আমাদের দলের অংশ হতে পারেন। মিলিতভাবে আমরা এখনও জিততে পারি।
×