ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপিকে কাদের

নোংরা রাজনীতি না করে সরকারকে সহায়তা করুন

প্রকাশিত: ১১:২৭, ১২ মার্চ ২০২০

নোংরা রাজনীতি না করে সরকারকে সহায়তা করুন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে অহেতুক নোংরা রাজনীতি না করে সরকারকে সহযোগিতা করতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে অহেতুক নোংরা রাজনীতি করবেন না। মানবিক ও সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়। এই পরিস্থিতিতে আপনাদের উচিত সরকারকে সহযোগিতা করা। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকারের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। বুধবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক যৌথ সভায় তিনি এ কথা বলেন। মুজিববর্ষ উদ্যাপনের উদ্বোধনী কর্মসূচীর পুনর্বিন্যাস ও সমসাময়িক ইস্যুতে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং দলীয় সংসদ সদস্য ও দুই সিটি মেয়রদের সঙ্গে এই যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টের মতো ঘটনার কারণে রাজনীতিতে কর্মসম্পর্ক বিএনপিই নষ্ট করেছে। তারপরও করোনাভাইরাস ইস্যুতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। তাই বিএনপিকে বলব এই সময়ে রাজনৈতিক বিষোদগার থেকে বিরত থাকুন। তিনি বলেন, সারাবিশ্বই করোনাভাইরাস নিয়ে একটা উদ্বেগ ও আতঙ্কে আছে। বাংলাদেশে যারা বলছেন, সরকার করোনাভাইরাস মোকাবেলায় প্রস্তুত ছিল না। তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, করোনাভাইরাসের উপস্থিতির সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশই একমাত্র দেশ, যে দেশ সবার আগে কেন্দ্রীয়ভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে, পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে শুরু করে যারা এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব জায়গাতেই যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় প্রস্তুতির ব্যাপারে সরকারের কোন ঘাটতি ছিল না দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ইতালি থেকে যে দুজন প্রবাসী বাংলাদেশী এসেছে, তারা কিন্তু প্রস্তুতি আছে বলেই তাদের সংক্রমণের ব্যাপারটা ধরা পড়েছে এবং তাদের ব্যাপারে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। তাদের দুজন থেকে আরেকজন সংক্রমণ হয়েছে, সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়া নতুন করে কেউ সংক্রমিত হয়নি। সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নামক সংগঠনটি সবক্ষেত্রে ব্যর্থ। আসলে নিজেদের কারণেই তারা আজকে আন্দোলন-নির্বাচনে ব্যর্থ হয়েছে। তারা আইনী লড়াইয়ে ব্যর্থ হয়ে বেগম জিয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে রাজনীতি করে বেড়াচ্ছে। রাজনীতির ইস্যু খুঁজে বেড়াচ্ছে। করোনাভাইরাস নিয়েও বিএনপি তাদের সেই নিকৃষ্ট রাজনীতির আশ্রয় নিয়েছে। এটা নিয়েও নোংরা রাজনীতির চেষ্টা করছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, এই মানবিক স্বার্থের বিষয়টি সারা বিশ্বের একটা জনস্বার্থ সম্পর্কিত একটা সমস্যা। অনেক দেশ আক্রান্ত হয়েছে। নতুন নতুন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। আমরা প্রস্তুত আছি বলেই আমরা ভাগ্যবান এখনও আমাদের দেশে এই রোগের বিস্তার হয়নি। এখানে সংক্রমণ সে পর্যায়ে আসেনি। তার আগেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় যারা সরকারের সদিচ্ছা-আন্তরিকতার ঘাটতি খুঁজে, যারা সরকারের প্রস্তুতি নিয়ে আজকে এ ধরনের অপপ্রচার করে; আমি মনে করি তারা হীনরাজনৈতিক উদ্দেশে এটা করছে। আমরা এ ধরনের কর্মকা- থেকে বিরত থাকতে আবারও তাদেরকে অনুরোধ করছি। আওয়ামী লীগের তিন মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী সংগঠনকে আগামী মে থেকে জুন মাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় সম্মেলন সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন ওবায়দুল কাদের। চলতি মার্চে মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ ও তাঁতি লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি তিন বছর অতিক্রম করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপাতত গণজমায়েত জাতীয় সভা-সমাবেশ, যে কোন ধরনের জমায়েত আমাদেরকে পরিহার করে চলতে হবে। এখন আমাদের কোন কনফারেন্সও আমরা করছি না। মার্চ এবং এপ্রিল এই দুই মাসে কোন সম্মেলন বা কোন সভা-সেমিনারের নয়া আয়োজনে যাচ্ছি না। এই দুই মাস আমাদেরকে ঘরোয়া সাংগঠনিক কর্মকা-ের দিকে নজর দিতে হবে। যাদের সম্মেলন হয়েছে, পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়নি তাদের প্রতি নির্দেশ হচ্ছে- তারা অনতিবিলম্বে কমিটি জমা দেবেন। কনফারেন্স অনেক আগে হয়ে গেছে, এখন করোনাভাইরাসের জন্য আমাদের কমিটি গঠন প্রক্রিয়া বন্ধ থাকতে পারে না। সেটা আমাদের ঘরোয়া কাজ। সে কাজটি আপনারা চালিয়ে যাবেন, বিশেষ করে ঢাকা সিটির মধ্যের সংগঠন। যেগুলোর কোন কমিটি নেই। পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। আপনারা খুব দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কাজ শেষ করবেন। এটা আপনাদের প্রতি আমাদের নেত্রীর নির্দেশ। আমি জানিয়ে দিলাম। গত বছরে কেন্দ্রীয় সম্মেলন সম্পন্ন হওয়া সহযোগী সংগঠনের নেতাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের যেসব সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন হয়েছে কিন্তু তাদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি, তারা তাদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনতিবিলম্বে জমা দেবেন। আর যাদের কমিটি করার সময় এসে গেছে, মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে তাদের প্রতি নির্দেশ হচ্ছেÑ তারা মার্চ-এপ্রিল থেকে ঘরোয়াভাবে নিজেরা সম্মেলনের প্রস্ততি নিতে পারেন। আমরা মে-জুনের দিকে সম্মেলনগুলো করার চিন্তাভাবনা করছি। কাজেই মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, আপনাদের মার্চ মাসে মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। কাজেই আপনারা মে-জুনের দিকে আপনাদের সম্মেলনের প্রস্তুতি এখন থেকেই শুরু করবেন। কারণ ঘরোয়া কর্মকা- করোনাভাইরাসের জন্য বন্ধ থাকবে না। সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য শাজাহান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন নাহার লাইলীসহ ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
×