ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে খেলা দেখেছেন রোনাল্ডো, জিদানের শিষ্যদের এমন পারফর্মেন্সে নাখোশ জেরার্ড পিকে

বার্সিলোনাকে হারিয়ে শীর্ষে রিয়াল

প্রকাশিত: ১২:৩৩, ৩ মার্চ ২০২০

বার্সিলোনাকে হারিয়ে শীর্ষে রিয়াল

জিএম মোস্তফা ॥ স্প্যানিশ লা লিগার পয়েন্ট টেবিলের লড়াইটা এবার বেশ হাড্ডাহাড্ডি। চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত এককভাবে দাপট দেখাতে পারেনি কেউ। শুরু থেকেই যেন একে অপরের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছিল স্পেনের দুই জায়ান্ট বার্সিলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদ। যদিওবা এই সময়ে বেশিরভাগ সময়েই লীগ টেবিলের শীর্ষে ছিল বার্সিলোনা। তবে শনিবার মৌসুমের দ্বিতীয় এল ক্ল্যাসিকোতে হেরে গেছে মেসি-পিকেরা। নিজেদের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে এদিন রিয়াল মাদ্রিদ ২-০ গোলে পরাজিত করেছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী কাতালানদের। সেইসঙ্গে লা লিগার পয়েন্ট টেবিলেও শীর্ষে উঠে এসেছে জিনেদিন জিদানের দল। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচের আগে দুই দলের সমর্থকদের মধ্যেই দেখা গেছে বাড়তি উত্তেজনা। তবে ম্যাচের শুরুতেই এদিন বাগবিত-ায় জড়িয়ে পড়ে দুই দলের দুই ফুল-ব্যাক দানি কারভাহাল ও জর্দি আলবা। যে কারণে তাদের হলুদ কার্ড দেখাতে বাধ্য হন ম্যাচ রেফারি। ম্যাচের শুরু থেকেই অবশ্য মাঠে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছিল। বাম দিক থেকে ভিনসিয়াসের কল্যাণে মাদ্রিদ নিয়মিতভাবে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের করে নিচ্ছিল। বিপরীতে বার্সিলোনার পাস ছিল অত্যন্ত ধীর গতির। তারপরও বেশকিছু সুযোগ তারা সৃষ্টি করেছিল। আলবার কাটব্যাক থেকে এ্যান্থনি গ্রিজম্যানের শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। এরপর কুর্তোয়ার দুটি দুর্দান্ত সেভে মান বাঁচে রিয়াল মাদ্রিদের। দ্বিতীয়ার্ধে বার্সিলোনা যেন তাদের গতি হারিয়ে ফেলে। সেই সুযোগে ধীরে ধীরে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের করে নেয় রিয়াল মাদ্রিদ। ইস্কোর হেড বার্সা গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টার স্টেগানকে পরাস্ত করলেও লাইনের উপর থেকে পিকে তা ক্লিয়ার করেন। আর্তুরো ভিদালের ভুল পাস থেকে বল পেয়ে করিম বেনজেমার ভলি বারের ওপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। ৬৯ মিনিটে ভিদালের পরিবর্তে মাঠে নামেন মার্টিন ব্রেথওয়েইট। ৭১ মিনিটে টনি ক্রুসের সহায়তায় পোস্টের খুব কাছে থেকে রিয়াল মাদ্রিদকে এগিয়ে দেন ভিনসিয়াস জুনিয়র। এক গোলে পিছিয়ে পড়ে বার্সিলোনা যেন আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে। মেসির শট আটকে দেন রাফায়েল ভারানে। ক্যাসেমিরোকে ফাউলের জন্য মেসিকে হলুদ কার্ড দিয়ে সতর্ক করা হয়। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে মারিয়ানোর গোলে জয় নিশ্চিত হয় রিয়াল মাদ্রিদের। গত সপ্তাহে ম্যানচেস্টার সিটির কাছে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে হেরে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। সেই পরাজয়ের পর বার্সাকে এল ক্ল্যাসিকোতে হারানোর মধ্য দিয়ে যেন নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে জিনেদিন জিদানের শিষ্যরা। ম্যাচ শেষে রিয়ালের কোচ জিনেদিন জিদান বলেন, ‘সপ্তাহটা সত্যিই খুব কঠিন ছিল। পুরো সপ্তাহ জুড়েই আমরা নিজেদের এগিয়ে নেয়ার সুযোগ পেয়েছি। এখন মনে হচ্ছে সেই সুযোগ আমরা কাজে লাগাতে পেরেছি।’ এই জয়ে বার্সিলোনা থেকে এক পয়েন্ট এগিয়ে ৫৬ পয়েন্ট নিয়ে আবারও লীগ টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছে রিয়াল মাদ্রিদ। এই ম্যাচে কিকে সেতিয়েনের বার্সেলোনা কোনদিক থেকেই পেছনে ফেলতে পারেনি চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মাদ্রিদকে। এ প্রসঙ্গে সেতিয়েন বলেছেন, ‘মূল কথা হচ্ছে বলের সঙ্গে সঙ্গে আমরা নিজেদের আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছিলাম। একটি নার্ভাস সময়ে আমরা গোল হজম করেছি।’ ম্যাচের শুরু থেকে বার্সিলোনা অবশ্য আক্রমণভাগে রিয়ালের চেয়ে কিছুটা হলেও এগিয়ে ছিল। বার্সা ডিফেন্ডার জেরার্ড পিকে বলেন, ‘সান্তিয়াগোতে আমি এ পর্যন্ত যে মাদ্রিদের মুখোমুখি হয়েছি তার মধ্যে শনিবার দলটি প্রথমার্ধে সবচেয়ে বাজে দল ছিল। আমি এটাকে সমালোচনার চোখে দেখছি না। আমাদের দলেও সমস্যা আছে। কিন্তু আমরা তাদের ভুলের সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারিনি।’ ম্যাচ শেষে মাদ্রিদ অধিনায়ক সার্জিও রামোসের আনন্দটা ছিল একটু বেশি। শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গেই রিয়ালের এই স্প্যানিশ ডিফেন্ডার যেভাবে জয়টা উদযাপন করেছে তাতে মনে হয়েছে এই ম্যাচটা মাদ্রিদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এটা শুধুমাত্র চির প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে তিন পয়েন্ট ছিনিয়ে আনা নয়, বরং শিরোপার দৌড়েও কিছুটা বার্সিলোনাকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়া।’ এদিকে, শনিবার ম্যাচের আগে জিদান বলেছিলেন মে মাসে শিরোপা কার ঘরে যাবে সেটা এখনও ঠিক হয়নি। এই ম্যাচ দেখতে এদিন গ্যালারিতে উপস্থিত হয়েছিলেন রিয়ালের সাবেক সেরা তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোও।
×