ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ছয় দিন বিরতির পর আবারও মাঠে গড়াচ্ছে মহিলা ফুটবল লীগ

এবার বসুন্ধরার মুখোমুখি স্পার্টান

প্রকাশিত: ০৯:৫০, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 এবার বসুন্ধরার মুখোমুখি স্পার্টান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ছয় বছর বিরতির পর আবারও গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছিল বহুল প্রতীক্ষিত মহিলা ফুটবল লীগের তৃতীয় আসর। তবে কমলাপুর স্টেডিয়ামে দু’দিন খেলা হতেই আবারও ছয় দিনের জন্য বন্ধ হয়ে যায় খেলা। কারণ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা অনুর্ধ-১৭ ফুটবল টুর্নামেন্টের চূড়ান্ত পর্যায়ের খেলা। এই আসরে যারা অংশ নিচ্ছে তারা অধিকাংশই আবার মহিলা ফুটবল লীগেরও খেলোয়াড়। ফলে লীগ বন্ধ না করে কোন উপায় ছিল না বাফুফের। যাহোক, রবিবার থেকে আবারও মাঠে গড়াচ্ছে লীগের খেলা। এদিন দুপুর ৩টায় কমলাপুরের বীরষ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে স্পার্টান এমকে গ্যালাক্টিকো সিলেট এফসিকে পড়তে হচ্ছে কঠিন পরীক্ষায়। কেননা এই ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ শক্তিশালী শিরোপার দাবিদার বসুন্ধরা কিংস। ২২ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধনী দিনে ঢাকার উত্তরার ক্লাব বেগম আনোয়ারা স্পোর্টিংকে ১২-০ গোলে শোচনীয়ভাবে হারিয়ে শুভ সূচনা করেছিল বসুন্ধরা কিংস। এখন পর্যন্ত লীগে মোট ৩টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। উত্তরবঙ্গ এফসি ছাড়া সাত দলের প্রত্যেকেই একটি করে ম্যাচ খেলেছে। এর মধ্যে বড় জয়ে ৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে বসুন্ধরা। তাদের সমান পয়েন্ট ও সমান গোলগড় নিয়ে যৌথভাবে একই স্থানে আছে নাসরিন স্পোর্টস একাডেমি। বসুন্ধরার মতোই প্রতিপক্ষের জালে তারাও দিয়েছে ১২ গোল। সর্বোচ্চ ৪ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় আছেন এই দুই ক্লাবের দুই স্ট্রাইকার। একজন বসুন্ধরার কৃষ্ণা রানী সরকার। অন্যজন নাসরিনের আকলিমা খাতুন। বসুন্ধরাকে ‘জাতীয় দল’ বললেও খুব একটা ভুল বলা হবে না। কেননা জাতীয় দলের ১৯ ফুটবলারই আছেন এই দলে। তাদের পরেই আছে নাসরিন ফুটবল একাডেমি। যদিও বসুন্ধরার মতো বড় মুখ নেই তাদের দলে। তবে জাতীয় দলের ক্যাম্প থেকে কয়েকজন ফুটবলার নিয়েছে ক্লাবটি। সেই দল নিয়ে শুরুটা দুর্দান্তই হয়েছে নাসরিনের। প্রথম ম্যাচে তারা ১২-০ গোলের ব্যবধানে হারায় সিলেটের স্পার্টান এমকে গ্যালাকটিকো এফসিকে। বসুন্ধরা-নাসরিনের মতেই তিন পয়েন্ট অর্জন করেছে জামালপুর কাচারিপাড়া একাদশ। কিন্তু গোল গড়ে পিছিয়ে থাকাতে তারা আছে তৃতীয় স্থানে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে কুমিল্লা ইউনাইটেডকে ৬-১ গোলে হারায় তারা। স্বভাবতই বিজয়ী তিন ক্লাবের প্রতিপক্ষের অর্জন এখনও শূন্য পয়েন্ট। প্রথমে এই আসরে আট দলের অংশ নেয়ার কথা থাকলেও পরে একেবারে অন্তিম সময়ে এসে বাদ দেয়া হয় একটি ক্লাবকে। সেই দলটির নাম স্বপ্নচূড়া এ্যান্ড আক্কেলপুর ফুটবল একাডেমি। লীগে অংশগ্রহণকারী দলগুলো সবাই দুই লাখ টাকা করে পাবে। এছাড়া চ্যাম্পিয়ন দল পাবে দুই লাখ এবং রানার্সআপ দল পাবে এক লাখ টাকা করে। শিরোপাধারী দল পাবে সোনার প্রলেপ দেয়া সোনার ট্রফি। ট্রফি তৈরি করা হবে ফিফা বিশ্বকাপের আদলে। মূলত লীগ আয়োজনের উদ্দেশ্য ছিল বাফুফের আবাসিক ক্যাম্পে ডাক পাওয়া খেলোয়াড় যেন এই লীগ খেলে আর্থিকভাবে উপকৃত হতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে ক্যাম্পে থাকা অর্ধেকেরও বেশি ফুটবলার কোন দল পায়নি। যারা দল পেয়েছে তাদের সর্বাধিক ১৯ জনই খেলবে বসুন্ধরা কিংসে। সে জন্য অনেকেই বলছেন বসুন্ধরাই যেন জাতীয় দল এবং তারা হেসে-খেলেই চ্যাম্পিয়ন হতে যাচ্ছে। কেননা পেশাদার লীগের অন্য ক্লাবগুলো এই লীগে অংশ নেয়নি। দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে- এই লীগে আবাহনী, মোহামেডানের মতো ঐতিহ্যবাহী ক্লাবগুলো অংশ নেয়নি। অংশ নেয়নি বিজেএমসিও। শুরুতে নাম দিয়েও পরে নাম প্রত্যাহার করে নেয় শেখ জামাল ধানমন্ডি এবং শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। ডাবল লীগভিত্তিতে হবে খেলা। প্রতিটি দল খেলবে ১২টি করে ম্যাচ। এরপর সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল করা যায় কিনা তা নিয়েও ভাবছে বাফুফে। প্রথমে ৩১ জানুয়ারি ও পরে ১৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়ার কথা ছিল লীগের। কিন্তু সিটি নির্বাচন, নির্বাচন উপলক্ষে ঢাকা শহরে গাড়ি চলাচল বন্ধ ও স্বপ্নচূড়া-সমস্যায় দু’বার লীগ পিছিয়ে দেয় বাফুফে। ‘স্পার্টান’ শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে কষ্টসহিষ্ণু ব্যক্তি। আজকের ম্যাচে ফেবারিট বসুন্ধরার বিরুদ্ধে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করে কষ্ট সহ্য করে কোন পয়েন্ট কুড়িয়ে তাক লাগাতে পারবে কী তারা? সেটাই এখন দেখার বিষয়।
×