ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

দুইবার পিছিয়ে পড়েও ড্র করল আবাহনী

প্রকাশিত: ১১:৫৩, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০

দুইবার পিছিয়ে পড়েও ড্র করল আবাহনী

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ না, প্রতিপক্ষকে বাগে পেয়েও জেতা হলো না আবাহনী লিমিটেডের। ঘরের মাঠের বাড়তি সুবিধা কাজে লাগাতে পারল না। মালদ্বীপের মাজিয়া স্পোর্টস এ্যান্ড রিক্রিয়েশন ক্লাবটি তাদের জন্য অজেয় এবং রহস্যই হয়ে থাকল। বুধবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এএফসি কাপের প্রিলিমিনারি রাউন্ড টু’র হোম ম্যাচে দু’বার পিছিয়ে পড়ে কোনমতে ড্র করে হার এড়িয়েছে আবাহনী। ২-২ গোলে ড্র করে তারা। বল পজেশন আর আক্রমণের দিক দিয়ে প্রথমার্ধে এগিয়ে ছিল আবাহনী। ছোট ছোট পাসে আক্রমণ করে তারা। কিন্তু তাদের প্রতিটি আক্রমণই নসাৎ করে দেয় মালদ্বীপের ডিফেন্ডাররা। আর সার্বিকভাবে পুরো ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছে আবাহনীই। কিন্তু তাদের রক্ষণভাগ ছিল বেশ অগোছালো। আর সেটারই ফায়দা লোটে অতিথি দল মাজিয়া। এই জয়ের ফলে আবাহনীর বিরুদ্ধে তাদের জয়ের শতভাগ রেকর্ড অক্ষুণœ রইল। এর আগে ২০১৭ আসরে দুইবারের মোকাবেলায় প্রতিবারই তারা আবাহনীকে হারের স্বাদ দেয় ২-০ গোলে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি মালদ্বীপের মাঠে দ্বিতীয় লেগে যে কোন ব্যবধানে জয় অথবা ৩-৩ গোলে ড্র করলে প্লে-অফ পর্বে নাম লেখাতে পারবে আবাহনী। ম্যাচ শেষে আবাহনীর পর্তুগীজ কোচ মারিও লেমোস বলেন, ‘আবাহনীর খেলা দেখে আমি হতাশ। মনে হচ্ছিল তারা যেন রহমতগঞ্জের বিপক্ষে খেলছে। আমি যে আবাহনীকে দেখে আসছি এটা সেই আবাহনী নয়। এভাবে খেললে পরের রাউন্ডে ওঠা সম্ভব নয়।’ বুধবারের খেলায় ১৬ মিনিটেই গোল হজম করতে যাচ্ছিল আবাহনী। একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে আবাহনীর কয়েকজনকে কাটিয়ে যে শট নেন মাজিয়ার গ্রানাডার ফরোয়ার্ড কর্নিলেয়াস এজেকিয়েল, তা ঠেকিয়ে আবাহনীকে রক্ষা করে গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেল। ২০ মিনিটে গোলের সুযোগ পেয়েছিল আবাহনীও। সতীর্থের কাছ থেকে বল পান নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড সানডে চিজোবা। বল নিয়ে দ্রুতগতিতে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সের মধ্যে ঢুকে পড়েন তিনি। তার সামনে ছিলেন শুধুই মাজিয়ার গোলরক্ষক আজিজি ওভায়াস। কিন্তু সানডে যে শট নেন তা পোস্টের অনেক বাইরে দিয়ে চলে গেলে গোলবঞ্চিত হয় ‘দ্য স্কাই ব্লু ব্রিগেড’ খ্যাত আবাহনী। ৩১ মিনিটে কর্নার পায় আবাহনী। মিডফিল্ডার মামুনুল ইসলামের উড়ন্ত কর্নারে লাফিয়ে ওঠে বক্সের ভেতরে হেড নেন সানডে। কিন্তু তার এই প্রচেষ্টা অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। সাইড পোস্টে বল লাগে। এক মিনিট পর বক্সের ভেতর থেকে হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড বেলফোর্টের বাঁ পায়ের তীব্র শট আটকে দেন মাজিয়া গোলরক্ষক। ৩৮ মিনিটে বক্সের সামান্য বাইরে আবাহনীর অধিনায়ক-ফরোয়ার্ড নাবীব নেওয়াজ জীবনকে ফেলে দেন মাজিয়ার এক খেলোয়াড়। ফিলিপিন্স রেফারি ক্লিফোর্ড দেপুয়াত ফ্রি কিকের বাঁশি বাজান। বিপজ্জনক জায়গা থেকে আবাহনীর কিরগিজ মিডফিল্ডার বার্নাড এডগারের জোরালো শট প্রতিহত করেন মাজিয়ার গোলরক্ষক আজিজি। খেলার ধারার বিপরীতে ৪২ মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় মাজিয়া। চমৎকারভাবে ড্রিবলিং করে বল নিয়ে আবাহনীর বক্সে ঢুকে পড়ে চিপ করেন মোহাম্মদ হামজা। তার কাছ থেকে বল পেয়ে পায়ের আলতো টোকায় গোল করেন ইব্রাহিম মাহুদি হুসেন (১-০)। এই জন্য দায়ী আবাহনীর ডিফেন্ডাররা। হামজাকে থামানোর কোন চেষ্টাই করেননি রায়হান-নাসিররা। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে গোল করে সমতায় ফেরে আবাহনী। বাঁপ্রান্ত থেকে সতীর্থের বাড়ানো শটে বক্সের মধ্যে বল পান ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার ম্যালসন ভেরাইতো। ঘুরে বাঁ পায়ের শটে বল জালে পাঠান তিনি (১-১)। ৫৩ মিনিটে রায়হানের ক্রসে সানডের ব্যাকহিল পোস্টের বাইরে দিয়ে বল চলে যায়। ৬১ মিনিটে বাঁপ্রান্ত থেকে সানডের উদ্দেশে ক্রস করেন বেলফোর্ট। সানডে হেড করার আগেই গোললাইনের খুব কাছ থেকে প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড় বল বিপদমুক্ত করেন। ৬৫ মিনিটে আবারও গোল করে এগিয়ে যায় মাজিয়া। বক্সের বাইরে থেকে নাইজ হাসানের জোরালো শট আবাহনী গোলরক্ষক সোহেল পাঞ্চ করেন। সামনে বল পান। ডান পায়ের শটে গোল করেন মাজিয়ার গ্রানাডার ফরোয়ার্ড কর্নিলেয়াস ইজেকুয়েল (২-১)। যখনই মনে হচ্ছিল ম্যাচে হারতে যাচ্ছে আবাহনী, তখনই ৮০ মিনিটে সমতা আনে তারা। ডিফেন্ডার রায়হান হাসানের থ্রো থেকে বল পান বেলফোর্ট। তিনি সামনে বল বাড়ান। বক্সের মধ্যে থাকা সানডে পা ছুঁইয়ে জাল কাঁপান। ম্যাচের যোগ করা সময়ে বাঁপ্রান্ত থেকে বেলফোর্টের ক্রসে কেউ মাথা ছোঁয়াতে পারেননি। গোল না হওয়ার আক্ষেপে দগ্ধ হয় আবাহনী শিবির। একটু পরেই রেফারির শেষ বাঁশি বাজতে ড্রয়ের হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ে ধানম-ি পাড়ার ক্লাবটি।
×