ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কিনা বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে

ঢাবি ক্যাম্পাসে ফের বোমা বিস্ফোরণ ॥ জড়িতদের ধরতে মাঠে পুলিশ

প্রকাশিত: ১১:১২, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ঢাবি ক্যাম্পাসে ফের বোমা বিস্ফোরণ ॥ জড়িতদের ধরতে মাঠে পুলিশ

শংকর কুমার দে ॥ মধুর ক্যান্টিন এলাকায় আবারও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে একটি গোষ্ঠী। এর আগে গত মাসে দফায় দফায় বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে সিরিজ বোমা। সে সময়ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে মধুর ক্যান্টিন এলাকায়। এবার সিটি নির্বাচনের পর মধুর ক্যান্টিন এলাকায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটানোর বিষয়টি বেশ আলোচিত হয়েছে। গত মাসে মধুর ক্যান্টিন থেকে পল্টনের বিএনপি অফিসের সামনের এলাকায় ১১ দিনে অন্তত ১০ দফা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। একটি বিশেষ দলের কর্মী-ক্যাডাররা এই ককটেল রাজনৈতিক উদ্দেশে ঘটিয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। এসব ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে কেন? এক মাসের বেশি সময় পেরোলেও এ ঘটনায় কোন গ্রেফতার নেই। জড়িত কারা রহস্য উদঘাটনে তদন্ত করছে গোয়েন্দা সংস্থা। জড়িতদের শনাক্ত করতে মাঠে নেমেছেন গোয়েন্দারা। গোয়েন্দা সূত্রে বলা হয়, গত ৩ ফেব্রুয়ারি পৌনে এগারোটায় মধুর ক্যান্টিন ও ডাকসু ভবনের মাঝখানের রাস্তায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটানো হয়। এত বিকট শব্দে ওই এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। নির্বাচনের পর পর একই ধরনের ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় ভয়ভীতি-আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ক্যাম্পাসে। একটি বিশেষ গোষ্ঠী এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী। তিনি গণমাধ্যমকে জানান, বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। প্রক্টোরিয়াল টিম ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সেখানে আছে। যে দুষ্টচক্র এর সঙ্গে জড়িত তাদের শনাক্ত করে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। বারবার বিস্ফোরণ প্রসঙ্গে প্রক্টর বলেন, নিশ্চয়ই কোন গোষ্ঠী ব্যক্তিস্বার্থে বা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাহাত্ম্য নষ্টের জন্য এ অপতৎপরতা চালাচ্ছে। এদের ধরে আইনের আওতায় আনা হবে। কলা ভবনের ছয় তলা থেকে ককটেলটি ছুড়ে মারা হতে পারে বলে পুলিশের ধারণা। তবে কে বা কারা এ কাজ করেছে তা কেউ জানাতে পারেনি। এর আগেও গত বছরের শেষ ও এ বছরের প্রথম দিকে মধুর ক্যান্টিন এলাকায় পাঁচদিনে প্রায় ১০ দফা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এসব ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে চিহ্নিত করতে পারেনি ঢাবি প্রশাসন ও পুলিশ। গোয়েন্দা সূত্র মতে মধুর ক্যান্টিন ছাড়াও নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন এলাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকবার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। গত ডিসেম্বর থেকে চলতি জানুয়ারি পর্যন্ত দফায় দফায় এসব বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তবে এত বোমা বিস্ফোরিত হলেও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার মতো প্রযুক্তিও ব্যবহৃত হয়নি। শুধু ভয়ভীতি দেখানো, আতঙ্ক সৃষ্টি ও আলোচনায় নিয়ে আসার জন্য এই ধরনের ঘটনা ঘটানো হয়ে থাকতে পারে। (ডিএমপি) সূত্র জানায়, গত ২১ ডিসেম্বর প্রথম ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। পল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিকেলে দুটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। একই দিন রাতে আরও একটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। এর পর চারদিন বিরতিতে ২৬ ডিসেম্বর বেলা এগারোটার দিকে মধুর ক্যান্টিন এলাকায় বিস্ফোরণ ঘটে। ২৭ ডিসেম্বর আবার পল্টনে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। ২৯ ডিসেম্বর দু’দফায় মধুর ক্যান্টিন এলাকায় বিস্ফোরণ ঘটে। সেদিন দুপুরে পল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে একটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ৩০ ডিসেম্বর তৃতীয় দিনের মতো মধুর ক্যান্টিনে, সর্বশেষ ১ জানুয়ারি দুপুরে দুটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন এলাকায়। এসময় ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ছাত্রদলের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা চলছিল।
×