ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ইশরাকের মতবিনিময়

সাংবাদিকদের কাছে তাবিথের ভোট প্রার্থনা

প্রকাশিত: ১১:০৫, ৩১ জানুয়ারি ২০২০

সাংবাদিকদের কাছে তাবিথের ভোট প্রার্থনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রচারের শেষ দিনে সাংবাদিকদের কাছে ভোট প্রার্থনা করেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টা থেকে দুপুর সোয়া ১টা পর্যন্ত তিনি জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি ও ফটো জার্নালিস্ট এ্যাসোসিয়েশন কার্যালয়ে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি নিজের জন্য ধানের শীষে ভোট চান। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গোপীবাগে নিজ বাসভবনে পুলিং এজেন্ট ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তাবিথ আউয়ালের গণসংযোগ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল বেলা সোয়া ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে গিয়ে সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে কুশল বিনিময় ও নিজের জন্য ভোট চান। সেখান থেকে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ও ফটো জার্নালিস্ট এ্যাসোসিয়েশনে গিয়ে ভোট প্রার্থনার পাশাপাশি সুষ্ঠু ভোটের জন্য সাংবাদিকদের সহযোগিতা চান তিনি। সাংবাদিকদের সঙ্গে গণসংযোগের পর বিকেল ৩টা থেকে তাবিথ আউয়াল মগবাজার, সাত রাস্তা, তেজগাঁও, ফার্মগেট ও কাওরান বাজার হয়ে মোহাম্মদপুর তাজমহল রোড, মিরপুর-১২, মিরপুর-১০, উত্তরা, নতুনবাজার, বাড্ডা, গুলশান ও মহাখালী এলাকায় গণসংযোগ করে ধানের শীষে ভোট প্রার্থনা করেন। নির্বাচনী প্রচারকালে বিভিন্ন পথসভায় অংশ নিয়ে তাবিথ আউয়াল নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ করে বলেন, সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আপনাদের বিতর্কের উর্ধে থাকতে হবে। আর ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে যাবেন। ভোট দেয়ার পার তা গণনা পর্যন্ত মাঠে থাকবেন, ফলাফল জেনে ঘরে ফিরবেন। তাবিথ বলেন, ভোটা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিলে কারো পক্ষে ভোট চুরি করা সম্ভব হবে না। ভোট দিয়েই ভোট চুরি প্রতিরোধ করা সম্ভব। তিনি বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। দুর্নীতি প্রতিরোধী ও বঞ্চিত মানুষের মুক্তি নিশ্চিত করা। তবে ভোটের দিন বিএনপির পুলিং এজন্টরা কেন্দ্রে থাকতে পারবে কি না সে বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে তাবিথ বলেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির চেষ্টায় সাংবাদিকদের ভূমিকা ছিল। তাই গণমাধ্যমের ওপর আমাদের আস্থা আগেও ছিল, এখনও আছে। এবার সিটি নির্বাচনে প্রচার চালানো সময় দুষ্কৃতকারীদের হামলায় যে ৬ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন তাদের প্রতি আমি সমবেদনা জানাই। আমরা আশা করছি নির্বাচনের দিনে পরিবেশ ভাল থাকবে, কোন সংবাদকর্মী আহত বা বাধার শিকার হবেন না। তাবিথ আউয়াল বলেন, নির্বাচন কমিশন যদি চায়, জনগণের ও গণতন্ত্রের স্বার্থে ভাল সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। আমাদের আশঙ্কার জায়গা নির্বাচন কমিশনকে নিয়ে। ইশরাক হোসেনের গণসংযোগ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নিজ গোপীবাগের বাসায় আগত পুলিং এজেন্ট দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়সহ ভোটের বিভিন্ন কৌশল নিয়ে কথা বলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন। এ সময় তিনি পুলিং এজেন্টদের ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেন্দ্র ত্যাগ না করার আহ্বান জানান। সবাইকে সকাল সকাল কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেয়ারও আহ্বান জানান তিনি। ইশরাকের সঙ্গে কথা বলে বেলা আড়াইটায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি রিটার্নিং অফিসার আব্দুল বাতেনের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। এসময় তারা ক্ষমতাসীন দলের নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন এবং বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি, গ্রেফতার ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করছে বলে জানান। এসব বিষয়ে ইতোপূর্বে অভিযোগ দাখিল করা হলেও কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন তারা। এ সময় আবদুস সালাম বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে আওয়ামী লীগ সমাবেশ করেছে, নির্বাচন কমিশনকে জানানোর পরও তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এতে নির্বাচন কমিশনের বিষয়ে জনমনে বিরূপ ধারণাই তৈরি হচ্ছে। ফুটপাথ ও রাস্তা দখল করে ক্ষমতাসীন দলের নির্বাচনী ক্যাম্প করা হলেও তা উচ্ছেদ তো হয়নি। তিনি পুলিং এজেন্ট ও ভোটারদের নিরাপত্তা বিধানে নির্বাচন কমিশনকে দৃশ্যমান ও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানান। বিএনপির প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম ও মনির হোসেন। বিকেল ৩টা থেকে ইশরাক হোসেন নিজ এলাকা গোপীবাগ, সূত্রাপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করে ভোট প্রার্থনা করেন। এ সময় তিনি ভোটারদের সকাল সকাল কেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রদানের আহ্বান জানান। নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ নিশ্চিত করুন, তা না হলে আপনাদের একদিন জবাবদিহি করতে হবে। ঢাকার মানুষ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিয়ে তাদের যোগ্য মেয়র নির্বাচিত করতে চায়। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ধানের শীষের বিজয় হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ইশরাক বলেন, ধানের শীষের গণজোয়ার দেখে বিভিন্ন দিক থেকে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইশরাক বলেন, আমার কোন ব্যক্তিগত সহকারী নাই। আপনারা জানেন, আমি বিএনপি থেকে নির্বাচন করছি। এখানে হাজার হাজার নেতাকর্মীরা আসছেন। তারা স্বপ্রণোদিত হয়ে বিভিন্ন কর্মকা-ে এবং প্রচারে অংশ নিচ্ছেন। আর এসব বিষয় নিয়ে বাইরে কে কি বলল এটা তো আমি বলতে পারব না। ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস অভিযোগ করেছেন ১৭০টি কেন্দ্র দখল করার জন্য বাইরে থেকে সন্ত্রাসী ভাড়া করে নিয়ে এসেছেন- এ বিষয় জানতে চাইলে ইশরাক বলেন, এটা একেবারে অবাস্তব কথা। আমার কাছে তথ্য আছে, আওয়ামী লীগ সারা দেশে জেলা কমিটি করে লঞ্চ ভরে ঢাকায় লোক আনতেছে। তারা পুরো ঢাকা শহরে এ কাজটি করছে। আমি খুব শঙ্কিত যে, তারা ভোটের দিন কি করতে চাচ্ছে। বুধবার রাতে আমাদের দক্ষিণের যুবদলের সভাপতির বাসায় পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিযান চালানো হচ্ছে।
×