ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ভোটযুদ্ধ কাল ॥ প্রচারের পালা শেষ প্রার্থীদের

প্রকাশিত: ১০:৫৮, ৩১ জানুয়ারি ২০২০

ভোটযুদ্ধ কাল ॥ প্রচারের পালা শেষ প্রার্থীদের

শাহীন রহমান ॥ ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচার শেষ। এখন ভোটের অপেক্ষা। রাত পোহালেই শুরু হচ্ছে ভোটের উৎসব। এক বছর পর সিটি নির্বাচনের মাধ্যমেই আবারও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীরা মুখোমুখি হচ্ছেন। নির্বাচনী প্রচারও ছিল উৎসবমুখর পরিবেশে। আর উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচনী প্রচারের কারণে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন নিয়ে উৎসাহের কমতি নেই মানুষের মধ্যে। ৫৪ লাখ ভোটারের পাশাপাশি ১৬ কোটি মানুষেরও আগ্রহের বিষয় এখন এই সিটি নির্বাচন। কে জিতবেন, কে হারবেন সেটা নিয়ে প্রার্থীদের পাশাপাশি পুরো দেশবাসীও এখন হিসাব কষতে শুরু করেছে। মূলত এটি স্থানীয় নির্বাচন হলেও ঢাকার দুই সিটিতে জাতীয় নির্বাচনেরই আবহ বইছে চারদিকে। এদিকে নির্বাচনে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও মাঠে নেমেছে। ঢাকার সিটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা প্রচারে অংশ নেয়ায় শুরু থেকেই পরিবেশ ছিল উৎসবমুখর। জয়ের আশা নিয়ে প্রার্থীরা মাঠ চষে বেড়িয়েছেন। ভোট ও সমর্থন চেয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়িয়েছেন। মেয়র পদে দুই সিটিতে ১৩ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে মেয়র পদে এবার কোন স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই। গত ১০ জানুয়ারি থেকে নির্বাচনী প্রচারে মাঠে ছিলেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। তবে এই দীর্ঘ সময়ে নির্বাচনী প্রচারে বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সব দলের মেয়র এবং কাউন্সিলর প্রার্থীর পোস্টারে ছেয়ে গেছে গোটা ঢাকা সিটি। গত একাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক ঢাকা শহরে খুঁজে পাওয়া না গেলেও এবারের সিটি নির্বাচনে বিএনপির দুই প্রার্থীও প্রচারে সরব ছিলেন। ঢাকার অলি-গলিতে তাদের ধানের শীষ প্রতীকে ছেয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অন্য যে কোন নির্বাচনের চেয়ে ঢাকা সিটি নির্বাচনের প্রচার ছিল উৎসবমুখর। রাতদিন প্রার্থীরা ভোট প্রার্থনায় মাঠ চষে বেড়িয়েছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ঢাকা উত্তরে আওয়ামী লীগের আতিকুল ইসলাম ও বিএনপির তাবিথ আউয়াল; দক্ষিণে আওয়ামী লীগের ফজলে নূর তাপস এবং বিএনপির ইশরাক হোসেন নির্বাচনী প্রচারে যেখানেই গিয়েছেন হাজার হাজার কর্মী-সমর্থক তাদের সঙ্গে হাজির ছিলেন। নেতাকর্মী পরিবেষ্টিত অবস্থায় উৎসবমুখর পরিবেশে তারা ভোট চেয়েছেন। তবে এরই মাঝে ঢাকার গাবতলীতে বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের নির্বাচনী প্রচারে ধাওয়া, পাল্টাধাওয়া এবং পুরান ঢাকার গোপীবাগ এলাকায় ইশরাক হোসেনের নির্বাচনী প্রচারে হামলা, পাল্টাহামলার বিষয় বাদ দিলে আর কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচনী প্রচারের পরিবেশ ছিল বেশ শান্ত ও নির্বিঘœ। এছাড়া সব প্রার্থীর পক্ষেই সাউন্ড রেকর্ডার ব্যবহার করে সঙ্গীতের মাধ্যমে ঢাকার রাস্তায় রাস্তায় ভোট প্রার্থনা করা হয়। পাড়া-মহল্লায় সর্বত্র মাইকিংয়ের মাধ্যমে নির্বিঘœ প্রচার চালিয়েছেন প্রার্থীরা। এছাড়া নেতাকর্মীদের উৎসবমুখর পরিবেশে গত ২০দিন ধরে ঢাকা নগরী পরিণত হয়েছিল একটি মিছিলের নগরীতে। কারও নির্বাচনী প্রচারে বাধা দেয়ার ঘটনা পর্যন্ত ঘটেনি। ফলে এবারের নির্বাচনী প্রচারের পরিবেশ নিয়ে কমিশন প্রথম থেকে সন্তুষ্ট ছিল। গত ২২ জানুয়ারি আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠক শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা এই পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। এদিকে এবারের নির্বাচনী পরিবেশ অধিক উৎসবমুখর ও অংশগ্রহণমূলক ছিল বলে স্বীকার করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এবারের সিটি নির্বাচনের প্রচারে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় বের হতে পেরেছেন এবং দলীয় প্রতীক সামনে নিয়ে এসে ভোটের পরিবেশ তৈরি করতে পেরেছেন, সেটাই তাদের বড় অর্জন। এদিকে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ইমেজ রক্ষার নির্বাচনও বটে। ফলে নিজেদের জনপ্রিয়তা প্রমাণে এই নির্বাচনে জয়ের বিষয়ে দুই দল মরিয়া। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ভোটের সার্বিক পরিবেশেও তারা বেশ সন্তুষ্ট। এবার ঢাকা সিটিতে সব কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট নেয়া হবে। কেন্দ্রে কেন্দ্রে ইভিএম প্রদর্শনী করা হয়েছে। ইভিএমে ভোটে শঙ্কা দূর করতে বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা থেকে মক বা অনুশীলন ভোট সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। জয়ের প্রত্যাশা নিয়ে গত ১০ জানুয়ারি থেকে নির্বাচনী প্রচারে ছিলেন ১৩ মেয়র প্রার্থী। তবে নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের হিসাব-নিকাশ আবর্তিত হচ্ছে মূলত আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস এবং বিএনপির তাবিথ আউয়াল এবং ইশরাক হোসেনকে ঘিরেই। এই চার প্রার্থী নির্বাচনে জয়ের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। এছাড়া লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে বিএনপির প্রার্থীরা কিছু অভিযোগ করলেও ভোটের সার্বিক পরিবেশ নিয়ে তারাও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এই চার প্রার্থীর বাইরে বাকি মেয়র প্রার্থীরাও নির্বাচনে জয়ের আশাবাদ নিয়ে ভোটের মাঠ চষে বেড়িয়েছেন। তবে এই নির্বাচনে কে জিতবেন, কে হবেন নগরপিতা আগামীকাল তার চূড়ান্ত ফয়সালা হবে। উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে ১ জন করে মেয়র পদ ছাড়া ঢাকা উত্তরে ৫৪ সাধারণ কাউন্সিলর ও ১৮ সংরক্ষিত কাউন্সিলর, দক্ষিণে মেয়র পদের পাশাপাশি ৭৫ কাউন্সিলর ও ২৫ সংরক্ষিত কাউন্সিলর নির্বাচনে ভোট দেবেন ভোটাররা। এদিকে প্রার্থীরা নির্বাচনে শতভাগ জয়ের যেমন প্রত্যাশা করছেন তেমনি ভোটারদের কাছে দিয়েছেন নানা প্রতিশ্রুতি। ঢাকার নাগরিক জীবনের সব ধরনের সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি উন্নত ও দূষণমুক্ত ঢাকা গড়তে ভোটারদের কাছে অঙ্গীকার করেছেন। প্রচারের শুরু থেকেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা সব সময় ছিলেন খবরের প্রধান শিরোনামে। ফলে ভোটারদের আগ্রহ ছিল এই চার প্রার্থীকে ঘিরেই। নির্বাচনী প্রচার শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন ভোট চেয়ে। আইন অনুযায়ী বৃহস্পতিবারের পর থেকে প্রার্থীরা নির্বাচনী মাঠে থাকতে পারবেন না। ঘরোয়া পরিবেশেও নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারছেন না। নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত থাকার পাশাপাশি প্রায় সব মেয়র প্রার্থী করণীয় অগ্রাধিকার দিয়ে ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। উত্তর সিটিতে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ২৬ জানুয়ারি, বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ২৭ জানুয়ারি ইশতেহার ঘোষণা করেন। আর ২৮ জানুয়ারি দক্ষিণ সিটিতে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ইশরাক হোসেন এবং ২৯ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস ইশতেহার দেন। এসব ইশতেহারে তারা ঢাকার মূল সমস্যাগুলোর দিকে নজর দিয়ে সেগুলো সমাধানের অঙ্গীকার করেছেন। প্রতিশ্রুতি দেন আধুনিক সচল ঢাকা গড়ার। এছাড়াও সুখে-দুঃখে জনগণের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি এসেছে তাদের মুখ থেকে। মেয়রদের প্রতিশ্রুতির পালা শেষে এখন ভোটারদের সিদ্ধান্ত নেয়ার পালা। রাত পোহালে তাই ভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত প্রয়োগ করবেন। এদিকে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন শুধু মেয়র প্রার্থীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। এই নির্বাচন ঘিরেই এখন দেশের রাজনীতিও আবর্তিত হচ্ছে। দুই দল নির্বাচনে জিতে জনপ্রিয়তার প্রমাণ দিতে চায়। ফলে নির্বাচন ঘিরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দল বিএনপি এই নির্বাচন নিয়ে প্রতিদিন পরস্পর বিরোধী বক্তব্যও রেখেছে। বিএনপির পক্ষ থেকে শুরু থেকেই সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। ইসি ও সরকারের প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তাদের কম নয়। গণতন্ত্র রক্ষায় আন্দোলনের অংশ হিসেবে তারা এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, সিটি নির্বাচনে কমিশন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে পারেনি। ক্ষমতাসীনদের জয় নিশ্চিত করতেই ইভিএমে ভোট নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। অপরদিকে আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপির উদ্দেশে অভিযোগ করে বলা হয়েছে, সিটি নির্বাচন বাতিল করতেই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মন্তব্য করেছেন, নির্বাচনে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মানসিকতা নেই। পরাজয়ের আশঙ্কা থেকেই নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ তুলছে বিএনপি। এদিকে সুশীল সমাজের ভাবনা এই সিটি নির্বাচন ঘিরে। নির্বাচনে ভোটারদের আস্থা ফেরাতে সুষ্ঠু নির্বাচনেরই প্রত্যাশা করছেন তারা। বসে নেই কূটনীতিকরাও। মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলারও ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হওয়ার আশবাদ ব্যক্ত করেছেন। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে এবং কমিশনের প্রস্ততি দেখতে তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি বলেছেন, আশা করি উৎসবমুখর পরিবেশে শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে- এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসনও। বৃহস্পতিবার নির্বাচনের আগে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। এদিকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে প্রার্থীদের সব ধরনের প্রচার শেষ হয়েছে। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে পুরো রাজধানী। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে, শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে বৃহস্পতিবার থেকে মাঠে নেমেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। নির্বাচনের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখতে ইসির অধীনে একটি মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঢাকার দুই সিটিতে মোট ৬৫ প্লাটুন বিজিবি টহল দিচ্ছে। এর মধ্যে উত্তরে ২৭ প্লাটুন এবং দক্ষিণে ৩৮ প্লাটুন বিজিবি সদস্য ভোটের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন শুরু করেছে। আরও ১০ প্লাটুন বিজিবি রিজার্ভ রাখা হয়েছে প্রয়োজনের মুহূর্তে মোতায়েনের জন্য। ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে ইসির অধীনে গঠিত আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় ও মনিটরিং সেলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন নির্বাচন কমিশনের এনআইডি উইংয়ের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর অর্ধলক্ষ সদস্য মাঠে থাকছেন। নিñিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্বাহী ও বিচারিক হাকিমদের নেতৃত্বে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, এপিবিএন সদস্যদের মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স নির্বাচনী এলাকায় টহলে থাকবেন। আর পুলিশসহ অঙ্গীভূত আনসার ও ভিডিপির সদস্যরা থাকবেন কেন্দ্রে কেন্দ্রে। জানা গেছে কেন্দ্রগুলোতে পুলিশ ও আনসার-ভিডিপির সদস্য থাকছেন ৪১ হাজার ৯৫৬ । পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে গঠিত ১২৯টি মোবাইল ফোর্সে থাকবেন ১ হাজার ২৯০ জন। ৪৩টি স্ট্রাইকিং ফোর্সে থাকবেন ৪৩০ জন, রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্সে থাকবেন ৫২০ জন। দুই সিটিতে র‌্যাবের টিম থাকবে ১৩০টি। প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে টিম দায়িত্ব পালন করবে। গড়ে ১১ জন করে এতে মোট ১ হাজার ৪৩০ র‌্যাব সদস্য থাকবেন। দুই সিটিতে র‌্যাবের ১০টি রিজার্ভ টিম থাকবে, তাতে ১১০ সদস্য থাকবেন। রিজার্ভসহ দুই সিটিতে ৭৫ প্লাটুন বিজিবি দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতি প্লাটুনে গড়ে ৩০ জন করে মোট ২ হাজার ২৫০ জন বিজিবি সদস্য থাকবেন ভোটের দায়িত্বে। এদিকে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ‘পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে’ জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, কোথাও কোন ঝুঁকি তিনি দেখছেন না। এদিকে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাবসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকলেও সেনাবাহিনী মোতায়েন করার কোন সিদ্ধান্ত নেই নির্বাচন কমিশনের। তবে সব কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট গ্রহণের কারণে ইভিএম পরিচালনায় কারিগরি টিমের সদস্য হিসেবে প্রতিকেন্দ্রে ২ জন করে সেনা সদস্য মোতায়েন থাকছেন। যারা মূলত ইভিএম পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন। ইসি সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার দুই সিটিতে ২ হাজার ৪শ’ ৬৮টি ভোট কেন্দ্রে ইভিএম পরিচালনার জন্য দায়িত্বে থাকবেন সশস্ত্র বাহিনীর পাঁচ হাজারের বেশি সদস্য। যারা দায়িত্ব পালন করবেন সব ভোটকেন্দ্রে। এদিকে ইভিএম পরিচালনায় দায়িত্বরত নিরস্ত্র সেনা সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে সশস্ত্র বাহিনী সব পদক্ষেপ নিতে পারবে। এক্ষেত্রে সেনাক্যাম্প স্থাপন অথবা প্রশাসনিক সুবিধাদানকারী ডিভিশনের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে। ইভিএম বিষয়ক এক বিশেষ পরিপত্র জারি করে এমন নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
×