ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

‘নক্ষত্র নিভে যায়’ কাব্যগ্রন্থের প্রকাশনা

প্রকাশিত: ১১:১৫, ২৮ জানুয়ারি ২০২০

‘নক্ষত্র নিভে যায়’ কাব্যগ্রন্থের প্রকাশনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কবিতাকে সঙ্গী করেই কেটেছে তার শৈশব। কবিতা পড়া ও কবিতা আবৃত্তি করা ছিল তার কাছে নেশার মতো। কবিতাপ্রেমী এই মানুষটি পেশায় ছিলেন শিক্ষক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক এ শিক্ষকের নাম আহাদুজ্জামান মোহাম্মদ আলী। কবিতা পাঠের পাশাপাশি মাঝে মাঝে অনিয়মিতভাবে লিখেছেন কবিতা। সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে সেসব কবিতা। এক বছর ধরে পুরোপুরি নিমগ্ন হন কাব্য রচনায়। সেই সাধনায় এবার আবির্ভূত হলেন পুরোদস্তুর কবির পরিচয়ে। প্রকাশিত হলো প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘নক্ষত্র নিভে যায়’। নিজ জীবনের অভিজ্ঞতার সঙ্গে চারপাশের বাস্তবতাকে ধারণ করা কাব্যগ্রন্থটির প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হলো সোমবার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বইটির প্রকাশনা সংস্থা অন্যপ্রকাশ। প্রকাশনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। কাব্যগ্রন্থটি নিয়ে আলোচনা করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী, শিক্ষাবিদ ও কথাশিল্পী অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম এবং রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ। অনুভূতি প্রকাশসহ স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন আহাদুজ্জামান মোহাম্মদ আলী। কাব্যগ্রন্থটি থেকে কবিতা আবৃত্তি করেন কবির অগ্রজ সংস্কৃতিজন আসাদুজ্জামান নূর। স্বগত বক্তব্য দেন অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম। অনুভূতি প্রকাশে আহাদুজ্জামান মোহাম্মদ আলী বলেন, মূলত শৈশব থেকেই আমি কবিতা পড়তাম। বিভিন্ন সময় আবৃত্তিও করতাম। এভাবেই কবিতার সঙ্গে গড়ে ওঠে আমার আত্মিক বন্ধন। শিক্ষকতা করার সময়েই ১৯৮৩ সালে প্রথম কবিতা লিখেছিলাম। এর পর দু/একটি কবিতা লিখে চলে যাই দীর্ঘ বিরতিতে। গত এক বছর থেকেই আবার টানা লিখতে থাকলাম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সেসব কবিতা পোস্ট করতে থাকলাম। আমার ছাত্রসহ অনেকেই বেশ উৎসাহ দিল। জনকণ্ঠ, সমকালসহ কিছু জাতীয় পত্রিকায়ও কবিতা ছাপা হলো। মূলত আমি ফেসবুকের কবি। সংক্ষিপ্ত কথন শেষে পাঠ করেন ‘আনন্দের ভৌগোলিক অবস্থান’, ‘যেদিন কবিতা লেখা হয় না’, ‘ভেসে যাচ্ছে’, ‘সকাল’ ও ‘দূর আলাপনের ব্যবস্থা নেই’ শিরোনামের কবিতা। সভাপতির বক্তব্যে আহাদুজ্জামানের কবিতার মূল্যায়নে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, তার কবিতায় অপরিণতির কোন চিহ্ন নেই। শব্দচয়নে সতর্ক। কাঠামোয় সযতœ। কবিতাকে জীবনের মর্মে গ্রহণ করেছেন এই কবি। দুই অধ্যায়ের কাব্যগ্রন্থটিতে কবির ব্যক্তিগত জীবনের অভিজ্ঞতার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সমকালীন বিষয়। সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, কাব্যগ্রন্থটির প্রধান সুর হচ্ছে নিমগ্নতা। নিজের সঙ্গে নিজের কথা বলা। সেখানে মিশে আছেন কবির প্রয়াত জীবনসঙ্গী সিতারা পারভীন। এভাবে প্রথম অধ্যায়ের কবিতায় নানাভাবে উঠে এসেছে ব্যক্তি জীবনের অভিজ্ঞতা। সমাজের অন্যায়, অবিচারসহ নানা বিষয় নিয়ে দ্বিতীয় অধ্যায়টি হয়ে উঠেছে শোক দ্রোহের শ্লোক। হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, এই কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে পাঠকের সঙ্গে জীবনের অভিজ্ঞতাকে ভাগাভাগি করেছেন কবি। বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, কষ্ট লালনের বই ‘নক্ষত্র নিভে যায়’। প্রথম অধ্যায়ে জীবনের অভিজ্ঞতালব্ধ কষ্টকে শিল্পে রূপ দিয়েছেন কবি। কবিতার অন্তঃ¯্রােতে উঠে এসেছে ব্যক্তিবোধ। দ্বিতীয় অধ্যায়ে ধারণ করেছেন সমকালকে। কাব্যগ্রন্থটি থেকে ‘অ্যালবার্ট এখনো স্বপ্ন দেখে’, ‘এক সাংবাদিকের সহযাত্রী’সহ কয়েকটি কবিতা আবৃত্তি করেন আসাদুজ্জামান নূর। ১২০ পৃষ্ঠার কাব্যগ্রন্থটির মূল্য ধরা হয়েছে ২৮০ টাকা। প্ল ক্লি’র চিত্রকর্ম অবলম্বনে প্রচ্ছদ সাজিয়েছেন মাসুম রহমান।
×