ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

মুশফিককে মিস করবেন ডোমিঙ্গো

প্রকাশিত: ১১:৪৭, ২০ জানুয়ারি ২০২০

  মুশফিককে মিস করবেন ডোমিঙ্গো

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজ খেলতে বুধবার রাতে পাকিস্তানের উদ্দেশে দেশ ছাড়বেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। পাকিস্তানে যাওয়ার আগে তিনদিনের অনুশীলন ক্যাম্পও আছে। রবিবার ক্যাম্প শুরু হয়েছে। ক্রিকেটাররা প্রস্তুতি ক্যাম্প শুরুর আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন মাঠে উপস্থিত থেকে ক্রিকেটারদের সাহস জোগান। আর এই পাকিস্তান সফরে না থাকা মুশফিকুর রহিমকে মিস করবেন প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো তা জানান। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে শুধু পাকিস্তান সফরেই নয়, অস্ট্রেলিয়ায় অক্টোবরে অনুষ্ঠেয় টি২০ বিশ্বকাপেও অধিনায়ক হিসেবে দেখতে চান ডোমিঙ্গো। তিন ধাপে পাকিস্তানে গিয়ে সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। শুরুতে তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজ হবে। ২৪, ২৫ ও ২৭ জানুয়ারি যথাক্রমে লাহোরে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় টি২০ অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ফেব্রুয়ারিতে এক টেস্ট ও এপ্রিলে এক ওয়ানডে, এক টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। সফরে টি২০ সিরিজের জন্য মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে অধিনায়ক করে ১৫ সদস্যের দলও ঘোষণা হয়ে গেছে। দলে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, তামিম ইকবাল খান, সৌম্য সরকার, নাইম শেখ, নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস, মোহাম্মদ মিঠুন, আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব, মুস্তাফিজুর রহমান, শফিউল ইসলাম, আল-আমিন হোসেন, রুবেল হোসেন ও নতুন মুখ হাসান মাহমুদ আছেন। তবে প্রস্তুতির প্রথমদিনে শরীর অসুস্থ থাকায় মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, পারিবারিক কারণে মেহেদী হাসান ও গ্রামের বাড়িতে থাকায় নাজমুল হোসেন শান্ত উপস্থিত থাকতে পারেননি। বাকিরা সবাই প্রস্তুতি ক্যাম্পে উপস্থিত হন। দলের বাইরে তাইজুল ইসলাম, এবাদত হোসেন ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও ক্যাম্পে উপস্থিত থাকেন। ক্যাম্প শুরুর আগে ক্রিকেটাররা সবাই যখন মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে হাজির তখন মাঠে আসেন বিসিবি সভাপতি। এসে ক্রিকেটারদের সবার সঙ্গে কথা বলেন। তিনি ক্রিকেটারদের অভয় দেন। সাহস জোগান। নিরাপত্তা নিয়ে নয়, খেলা নিয়েই চিন্তা করতে বলেন। বিসিবি সভাপতি পরে গণমাধ্যমকে জানান, ‘নিরাপত্তা নিয়ে এখন আমরা আলাপ করতে চাইনি। এখানে আমি বলেছিলাম, কথা উঠেছিল হাল্কা। এটা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। খেলা নিয়ে চিন্তা। মাথার মধ্যে এরকম একটা চিন্তা থাকলে তো স্বাভাবিক খেলাটা আসে না। তাই মনের শান্তি ছাড়া ক্রিকেট খেলা অনেক কঠিন।’ ক্রিকেটাররা শুধু সফরে যাবেন তা নয়। তিনি নিজেও যে যাবেন, তাও নিশ্চিত করেন, ‘আমার ইমার্জেন্সি কালকে (সোমবার) রাতে একটু বাইরে যেতে হচ্ছে। আবার আমি চলে আসব ২২ তারিখে। সুতরাং আমি ওদের সঙ্গে যেতে পারছি না। তো ওরা আবার ভাববে যে আমি আবার কোথাও চলে যাচ্ছি। আমি বলেছি যে, আমি ২৩ তারিখ ওখানে গিয়ে তোমাদের সঙ্গে দেখা করব।’ ক্রিকেটারদের সাহস দিয়ে চলেছেন বিসিবি সভাপতি। সবসময় পাশে থাকার কথাও বলছেন। কিন্তু এই সফরে থাকছেন না মুশফিক। তিনি সফরে যাচ্ছেন না। সাকিব আল হাসান তো নিষিদ্ধ থাকায় সফরে যেতেই পারছেন না। মুশফিকও নেই। দল স্বাভাবিকভাবেই দুর্বল হয়ে পড়ার কথা। বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো ‘ফ্যামিলিম্যান’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন মুশফিককে। তাকে যে মিস করবেন তাও বলেছেন। ডোমিঙ্গো জানিয়েছেন, ‘আমি মুশফিকের সঙ্গে কথা বলেছি। সে যাচ্ছে না, এটি সম্পূর্ণ তার নিজের সিদ্ধান্ত এবং আমি এই সিদ্ধান্তকে সম্পূর্ণ সম্মান করি। সে আমার মতোই একজন ফ্যামিলিম্যান। সে যদি তার পরিবারের জন্য মনে করে এটাই সঠিক তাহলে ঠিক আছে, আমি তার সিদ্ধান্তকে সম্মান করি।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘সে একজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। বাংলাদেশের অন্যতম সেরা একজন ক্রিকেটার সে। তার অভিজ্ঞতা অবশ্যই আমরা মিস করব এই সিরিজে।’ মুশফিক আর সাকিব না থাকায় অভিজ্ঞতায় ঘাটতি থাকছে। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও তামিম ইকবালই সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। তবে বিপিএলে তামিম যেভাবে ব্যাটিং করেছেন, তাতে সবার ভেতরই ভাবনা ঢুকেছে। জাতীয় দলেও কী তাহলে তামিম এমন ধীরস্থিরে খেলবেন? সেই প্রশ্ন উঠছে। ডোমিঙ্গো কোচ হওয়ার পর থেকে তিনটি সিরিজ পেয়েছেন। ত্রিদেশীয় সিরিজ, আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ এবং ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজ। তামিম কোনটিতেই ছিলেন না। এবার তামিম ডোমিঙ্গোর তত্ত্বাবধানে প্রথমবার জাতীয় দলে খেলতে নামবেন। কিন্তু বিপিএলে ৩০০ রানের বেশি করা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল স্ট্রাইক রেট (১০৯.৩৯) তামিমের। ৩৯.৬০ গড়ে ৩৯৬ রান করেছেন। বিপিএলে তামিমের ব্যাটিং নিয়ে যদিও কোচ সালাউদ্দিন বলেছিলেন, দলের প্রয়োজন অনুযায়ীই ব্যাটিং করছেন তামিম। ডোমিঙ্গো অবশ্য বলেছেন, ‘এটা তামিমের সঙ্গে আমার প্রথম কাজ হতে যাচ্ছে। তাকে আমার আরেকটু গভীরভাবে জানতে হবে। আমি জানি বিপিএলে তামিমের ভূমিকা ছিল এক রকম এবং জাতীয় দলে তার ভূমিকা কি রকম হবে সেটা নিয়ে আলোচনা হবে। এখন পর্যন্ত আমাদের কোন আলোচনা হয়নি। আমি নিজেও এটা নিয়ে চিন্তা করব। সঙ্গে যোগ করেন, ‘তামিমের ভূমিকা তার সতীর্থের ওপর নির্ভর করবে। যদি সে মারমুখী কারও সঙ্গে ব্যাটিং করে তাহলে সে একই ভূমিকায় থাকতে পারে। আবার যদি সে অনভিজ্ঞ কাউকে নিয়ে নামে তাহলে তার ইতিবাচক থাকতে হবে। আগামী কয়েকদিনেই আমাদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।’ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে ভীষণ আশাবাদী ডোমিঙ্গো। শুধু পাকিস্তান সফরে নয়, টি২০ বিশ্বকাপেও রিয়াদকে অধিনায়ক হিসেবে দেখতে চান তিনি। জানিয়েছেন, ‘আমি আশাবাদী, সে বিশ্বকাপে আমাদের দলকে নেতৃত্ব দেবে। আমার পূর্ণ সমর্থন সে পাবে। ভারতে অসাধারণ কাজ করেছে সে। আমি তার সঙ্গে কাজ করা উপভোগ করেছি। সে পেশাদার। সে শ্রদ্ধাভাজনও। সে বিশ্বসেরা খেলোয়াড়। সে আমার অধিনায়ক।’
×