ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কুয়াকাটায় পর্যটকদের ভোগান্তি

প্রকাশিত: ০৯:২৭, ১৫ জানুয়ারি ২০২০

কুয়াকাটায় পর্যটকদের ভোগান্তি

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ১৪ জানুয়ারি ॥ সব চলছে ফ্রি-স্টাইলে। যেন নেই কোন নিয়ন্ত্রণ, দেখারও কেউ নেই। কুয়াকাটা সৈকত এখন একটি স্বার্থান্বেষী মহল তাদের নিজের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য খেয়ালখুশি মতো ব্যবহার করছে। যেখানটায় পর্যটকরা ভিড় করছে। সেই জিরো পয়েন্টে অসংখ্য চটপটি, চানাচুরের দোকানপাট বসানো হয়েছে। দোকান বন্ধের পরও খালি দোকানটি ফেলে রাখা হয়। রাইডার, পিকআপ চলাচল করছে জিরো পয়েন্টে। পর্যটকরা বিনোদনের জন্য কিংবা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য একটু নির্বিঘেœ উপভোগ করার সুযোগ পায় না। এরপরে বাণিজ্যিক ফটোগ্রাফারদের উপদ্রব তো আছেই। একটু নিরাপদে কুয়াকাটা সৈকতের বেলাভূমে হাটতে পারেন না আগতরা। এই বুঝি গাড়ি কিংবা মোটরসাইকেল পেছন থেকে ধাক্কা দিল এমন আতঙ্কে থাকে পর্যটকরা। একটু নিরিবিলি পরিবেশে নৈসর্গিক দৃশ্য অবলোকন করতে পারছে না। উপভোগ করতে পারেন না সূর্যাস্ত কিংবা সূর্যোদয়ের মনলোভা দৃশ্য। সৈকতের জিরো পয়েন্টে এক বর্গকিলোমিটারের মধ্যে কোন দোকান ও যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞার কথা রয়েছে। সেখানে এখন সবকিছু দখল করে বসেছে বাণিজ্যিক এ চক্র। কুয়াকাটা বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি কিংবা কুয়াকাটা পৌরসভা সবাই রয়েছে নির্বিকার। সৈকতে একটু নিরাপদে পারিবারিকভাবে উপভোগের সুযোগ থাকছে না কারও। এছাড়া সৈকতপাড়ে যেতে দুই কিলোমিটার পর্যন্ত সড়ক দখল করে রাখা থাকে বিভিন্ন ধরনের শতাধিক বাস। একেতো নেই ফুটপাথ তার ওপর সড়কটি বাসের দখলে থাকায় পর্যটকরা সৈকতে যাওয়া আসা করতে পারছে না নিরাপদে। শত শত মোটরসাইকেল ওই পথে চলাচল করছে। যেন অরাজক পরিস্থিতি চলছে। শুধু এখানেই শেষ নয়, পর্যটকরা তাদের পছন্দসই হোটেল পর্যন্ত যেতে পারছে না। এক শ্রেণীর দালালরা প্রতারণার মাধ্যমে ভাগিয়ে নেয় নিম্নœমানের হোটেলে। এ চক্র আলীপুর থেকে বাসে ওঠে। বাসে বসেই পর্যটকদের ব্যাগ, মালামাল জোর করে কমিশন পাওয়া হোটেলে নিয়ে যায় পর্যটককে। এক কথায় পর্যটন এলাকায় নেই কারও নিয়ন্ত্রণ। প্রতারণা আর প্রতারণা। ভাড়াটে মোটরসাইকেল চালকরা বিভিন্ন দর্শনীয় স্পটে নিয়ে জোর করে আদায় করছে অতিরিক্ত ভাড়া। একই দশা ভ্যান চালকদের। কোথাও রেহাই নেই। ১০ টাকার ভাড়ায় রাখা হয় ৫০-৬০ টাকা। আর এসব কারণে পর্যটকরা এখানে এসে বিরক্ত হয়ে উপভোগের বদলে তিনদিনের বুকিং থাকলেও একদিন পরে ফিরে যায়। কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ জানান, আমরা বহুবার বিষয়টি বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসককে বলেছি, কলাপাড়ার ইউএনও এসে কয়েকদিন ব্যবসায়ীদের বলেছেন এক-দু’দিন যেতে ফের যেই সেই অবস্থা। ইউএনও মোঃ মুনিবুর রহমান বলেছেন, কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশকে নিয়ে শীঘ্রই এসব চক্র নির্মূলের উদ্যোগ নেয়া হবে।
×