ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

শিল্পের সামগ্রিকতায় বর্ণিল বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসব

প্রকাশিত: ১১:২৭, ৪ জানুয়ারি ২০২০

শিল্পের সামগ্রিকতায় বর্ণিল বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একই অঙ্গে যেন বহুরূপ। সেই রূপের সঙ্গে মিশে আছে সারাদেশের কৃষ্টি ও সংস্কৃতি। শিল্পের সামগ্রিকতায় যুক্ত হয়েছে ৬৪ জেলা ও ৬৪ উপজেলা। উপস্থাপিত হবে প্রতিটি জেলার নিজস্ব লোকজ সংস্কৃতি সম্ভার। আছে লোকগান, লোকনৃত্য। বাংলার শেকড়ের শিল্প যাত্রাপালা। দেখা মিলবে পুতুল নাচের। বাউল সঙ্গীতের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ঐতিহ্যবাহী লোকজ খেলা, লোকনাট্য, নাটকের কোরিওগ্রাফি, সমবেত নৃত্য, এ্যাক্রোবেটিক, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের পরিবেশনা, একক আবৃত্তি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বর্ণিল নাচ-গান। এভাবেই অজস্র্র ছড়ানো এই উৎসবটির শিরোনাম বাংলাদেশ সংস্কৃতি উৎসব। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজিত ২১ দিনব্যাপনী উৎসবটির সূচনা হলো শুক্রবার। আগামী ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত একাডেমির নন্দন মঞ্চের শিল্প রসিকরা উপভোগ করবেন এ আয়োজন। বিকেল চারটা থেকে রাত দশটা অবধি বইবে অবলোকন করা যাবে নিজস্ব সত্তার বহুমুখী শিল্পধারা। বৈরী আবহাওয়ার কারণে শুক্রবার বিকেলে নন্দন মঞ্চের পরিবর্তে একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে উৎসবের উদ্বোধন হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। উৎসব উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিসচিব ড. মোঃ আবু হেনা মোস্তফা কামাল। একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন একাডেমির সচিব মোঃ বদরুল আনম ভূঁইয়া। প্রধান অতিথির বক্তব্যে এম এ মান্নান বলেন, যে কোন জাতি গঠনের মৌলিক ভিত্তি হচ্ছে সংস্কৃতি। আজ বিশ্বের দ্বিতীয় শক্তিধর রাষ্ট্র হচ্ছে চীন। এই জাতির উত্থানের পটভূমি হচ্ছে সাংস্কৃতিক বিপ্লব। সেই বিবেচনায় আমাদের রাজনৈতিক সীমারেখা আছে। সেই সীমারেখার বাইরে সংস্কৃতিক সীমারেখা ছড়িয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সেই ইতিহাস গড়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। সংস্কৃতির আশ্রয়ে বাংলার নিশানকে মেলে ধরতে হবে সারাবিশ্বে। বঙ্গবন্ধুর উত্তরসূরী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাংস্কৃতিকে পৌঁছে দিতে হবে বিশ্ব দরবারে। উদ্বোধনী বক্তব্যে কে এম খালিদ বলেন, মানুষের দেহের পুষ্টি খাবার আর মনের পুষ্টি হচ্ছে সংস্কৃতি। বিভিন্ন পরিবেশনার মধ্যদিয়ে নগরবাসী সংস্কৃতির বিভিন্ন উপাদানের সঙ্গে পরিচিত হবে, মনের খুদা মিঠবে। সেই লক্ষ্যে দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসব হচ্ছে। যেখানে ৬৪টি জেলা ও উপজেলা অংশ নিচ্ছে। আগামীতে জেলায় জেলায় এই সাংস্কৃতিক উৎসব হবে। এর মধ্য দিয়ে সারাদেশে সাংস্কৃতিক জাগরণ তৈরি হবে। সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষ সবার আগে এগিয়ে আসে। সেটা আমরা যে কোন সঙ্কটে দেখে এসেছি। লিয়াকত আলী লাকী বলেন, আমরা অনেক হারিয়েছি। এক সময় আমাদের ৬০০ রকম বাদ্যযন্ত্র ছিল এখন তা ২০০ এর মতো। আমরা আমাদের সংস্কৃতিক আর কোন কিছুই হারাতে চাই না। এজন্য আমরা সারাদেশের লোকজ সংস্কৃতি নিয়ে এই উৎসবের আয়োজন করেছি। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে শুরু হয় পরিবেশনা পর্ব। যন্ত্রসঙ্গীত শিল্পী কাজী হাবলুর পরিচালনায় উপস্থাপিত হয় ‘জয়বাংলা, বাংলার জয়’ গানের সুরে হৃদয়স্পশী যন্ত্রসঙ্গীত পরিবেশনা। এরপর একাডেমির শিল্পীরা নাচের আশ্রয়ে কোরিওগ্রাফি পরিবেশন করে। এরপর প্রথমদিনে ময়মনসিংহ ও গোপালগঞ্জ জেলার পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়। জেলার পরিবেশনা শেষে একাডেমি প্রাঙ্গণে রাত ৮টায় শুরু হয় ঝিনাইদাহ যাত্রাদলের যাত্রাপালা।
×