ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক না হওয়ায় ব্যবস্থা

১১ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়

প্রকাশিত: ০৯:২৬, ১ জানুয়ারি ২০২০

১১ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রকল্পের স্বচ্ছ প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন ও বিদ্যমান ঠিকাদারি সিন্ডিকেট মূলোৎপাটন এবং নাগরিক সেবায় রাষ্ট্রের সম্পদের সর্বোচ্চ উপযোগিতা নিশ্চিত করতে ১১ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজের অগ্রগতি ৩০ শতাংশের নিচে। কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক না হওয়ায় তাদের কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। চলমান কাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তারা আর কোন টেন্ডারে অংশ নিতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার একনেক বৈঠকে প্রকল্পগুলোর কাজের অগ্রগতি দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক এই প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলোÑ ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং, মেসার্স হাসান এ্যান্ড ব্রাদার্স, মেসার্স তাজুল ইসলাম, মেসার্স মশিউর রহমান, এসএস ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যান্ড কন, ডলি কনস্ট্রাকশন লি., মেসার্স আমিন এ্যান্ড কো., মেসার্স খন্দকার শাহীন, মেসার্স শামীমুর রহমান, ইউনুস এ্যান্ড ব্রাদার্স পা. লি. এবং মেসার্স শহিদ ব্রাদার্স। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ‘সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ)’ হতে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে এ তালিকা করা হয়। তথ্যাদি থেকে জানা যায়, উক্ত ১১ প্রতিষ্ঠানের হাতে মোট ৪১৬টি কাজ চলমান যার মধ্যে ১১১টি কাজের অগ্রগতি ৩০ শতাংশের কম। ৩০-৪৫ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে ৫৩ কাজের, ৪৬-৬৭ ভাগ হয়েছে ৪৭টি কাজ। চলমান কাজ শেষ না করা পর্যন্ত নতুন করে কোন কাজের জন্য পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত যে কোন টেন্ডারে তাদের অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখা হবে। এ প্রসঙ্গে টেলিফোনযোগে পানি সচিব কবির বিন আনোয়ার বলেন, আগামী ১ মাসের মধ্যে যদি উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো চলমান কাজের অন্তত ৩০ শতাংশ অগ্রগতি না দেখাতে পারে সেক্ষেত্রে আমরা তাদের জামানত বাজেয়াফত করতে বাধ্য হব। কেননা এতে রাষ্ট্রীয় অর্থের ক্ষতি সাধিত হয় এবং জনকল্যাণ ব্যাহত হচ্ছে। লাইসেন্স ভাড়া দেয়া, কাজ বিক্রয়, সাব কন্ট্রাকটর নিয়োগ, কাজ হাতবদল, সময়মতো কাজ সমাপ্ত না করা ইত্যাদি বিষয়ে একাধিকবার সতর্ক করার পরেও উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো আশাব্যঞ্জক কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনি। পানি সচিব আরও জানান, পিপিআর-২০০৮ এ অবাধ প্রতিযোগিতা থাকলেও অভিজ্ঞতা ও বার্ষিক টার্নওভার নির্ণায়কের কারণে প্রকৃত অবাধ প্রতিযোগিতার সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। কতিপয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিন্ডিকেট করে মাত্রাতিরিক্ত কাজ নিচ্ছে এবং ওয়ার্কলোড থাকায় সময়মতো প্রকল্প শেষ হচ্ছে না বিধায় প্রকল্পের উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে। কাজের মান ও নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে ব্যর্থ হলে সেটি পিপিএ ২০০৬ এর ধারা ৬৪(৬) এবং পিপিআর ২০০৮ এর বিধি ১২৭(৪) (গ) চুক্তির মৌলিক শর্ত লঙ্ঘন হয়। এ ধরনের ঠিকাদারদের বিষয়ে বিধি ১২৭ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ রয়েছে। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিষয়ে পানি সচিব বলেন, যারা প্রকল্প মূল্যায়নের সঙ্গে জড়িত এবং সচেতনভাবে এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপারে উদাসীনতা দেখিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধেও আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আমরা কার্পণ্য করব না। নতুন ও যোগ্য প্রতিষ্ঠান আসার সুযোগ করে প্রকল্পগুলোকে মানসম্মত ও সঠিক সময়ে শেষ করতে আমাদের এই উদ্যোগ।
×