ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বারবার সিটের নিচে লুকিয়ে সোনা আসছে বিমানে

প্রকাশিত: ১১:১১, ২৪ নভেম্বর ২০১৯

বারবার সিটের নিচে লুকিয়ে সোনা আসছে বিমানে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে সদ্য যোগ হওয়া ড্রিমলাইনার গাঙচিলের সিটের নিচ থেকে চার কেজি ৬৪০ গ্রাম সোনা জব্দ করা হয়েছে। এই চোরাচালানের ঘটনায় উড়োজাহাজটি জব্দ করেছে ঢাকা কাস্টম হাউস। এর আগেও সোনা চোরাচালানের অভিযোগে একাধিক উড়োজাহাজ কাগজে কলমে জব্দ করা হয়। যদিও এসব জব্দের দরুণ সিডিউলে কোন হেরফের হবে না তবুও বার বার সিটের নিচে সোনা লুকিয়ে আনার ঘটনায় উদ্বিগ্নœ বিমান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোকাব্বির হোসেন বলেন, আমরা চোরাচালানসহ যে কোন দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি। তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে বিমান তো চোরচালানের তদন্ত করে না। সেটা করে কাস্টমস ও পুলিশ। তারা যাদের দায়ী করে সেটা আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া যায়। সহকারী কমিশনার সাজ্জাদ হোসেন জানান, কাস্টম হাউসের প্রিভেন্টিভ টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চোরাচালান প্রতিরোধে বিমানবন্দরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে নজরদারি করতে থাকে। নজরদারি ও তল্লাশির একপর্যায়ে বোর্ডিং ব্রিজ নং-৬ এ সকাল ৬টা ১০ মিনিটে অবতরণ করা দুবাই থেকে আসা বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট নং-বিজি ০৪৮ এর সিট নং-১৫ এফ এর নিচে কৌশলে লুকানো অবস্থায় ৪০টি সোনার বার পাওয়া যায়, যার মোট ওজন চার কেজি ৬৪০ গ্রাম। সোনা বহনকৃত বিমান আটকপূর্বক আটককৃত সোনার বিষয়ে কাস্টমস আইনে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কোন যাত্রী বা ব্যক্তিকে আটক করা যায়নি। কোন যাত্রী ওই সিটে বসে দুবাই থেকে ঢাকায় এসেছেন তা খতিয়ে দেখছে কাস্টমস। এদিকে বিমান সূত্র জানিয়েছে, তল্লাশি কাজে বিলম্ব হওয়ার দরুণ বোর্ডিং ব্রিজ থেকে ওই ফ্লাইটটিকে নিয়ে যাওয়া যায় বিমানের নিজস্ব হ্যাঙ্গারে। সেখানে ফ্লাইটের ভেতর চেক করে একজন ক্লিনার যখন ইমপোর্ট গেট দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছিল তখন তাকে চ্যালেঞ্জ করেন বিমানের একজন নিরাপত্তাকর্মী। এ সময় তাকে চেক করে আরও দুটো প্যাকেটে বিপুল পরিমাণ সোনা পাওয়া যায়। বিমান জানিয়েছে, হাতেনাতে সোনাসহ আটক করে তাকে কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাছে সোপর্দ করা হয়। তার নাম মেহেদী। তবে কি পরিমাণ সোনা তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে সেটা জানাতে পারেনি কাস্টমস। জানতে চাইলে কাস্টমস সহকারী কমিশনার সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আমরা এখনই তা নিয়ে কথা বলতে রাজি নই। প্রাথমিক তদন্ত ও জব্দ তালিকা তৈরির পরই সেটা জানিয়ে দেয়া হবে। বার বার বিমানের ভেতর একই কায়দায় লুকিয়ে আনা সোনা জব্দ করার ঘটনা কিভাবে প্রতিরোধ করা সম্ভব প্রশ্ন করা হলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোকাব্বির হোসেন বলেন, সোনা আসে অন্যপ্রান্ত থেকে যা খালাস হয় এই প্রান্তে অর্থাৎ হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। এখন ওই প্রান্তে বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সার্ভিস ও অন্যান্য সার্ভিস দেয় সেখানকার লোকেরা। ঠিকই একইভাবে আমরাও বিদেশী এয়ারলাইন্সের সার্ভিস দেই। তাই ওই প্রান্তে বিমানের কিছু করার থাকে না। দ্বিতীয়ত প্রতিটি উড়োজাহাজ নির্মাণ করা হয় আইকাও রুলস ও নির্মাণ কোম্পানির নিজস্ব রীতিনীতিতে। আমাদের পক্ষে কি সম্ভব ওই উড়োজাহাজের একটা সুতো বা পিন পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করা। ইচ্ছে করলেই কি আমরা উড়োজাহাজের ভেতর সিসিটিভি ক্যামেরা সংযুক্ত করতে পারি? কাজেই আপনি আমি চাইলেই কিছু চোরাচালান প্রতিরোধে কিছু করতে পারি না। তারপরও আমরা সতর্ক রয়েছি।
×