ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

প্রকাশিত: ১১:০৮, ২২ নভেম্বর ২০১৯

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

মোরসালিন মিজান ॥ পরিবহন সেক্টরে মহাবিশৃঙ্খলা। মালিক ও শ্রমিকরা দেশটাকে যেন দখল করে নিয়েছে। তারা যা বলবে, তাই হবে। হতেই হবে। সাধারণ মানুষকে জিম্মি করার এই খেলা অনেক পুরনো। কিন্তু আজও এর কোন প্রতিকার করা গেল না। সরকার আছে। প্রশাসন আছে। কাজ হচ্ছে না কিছুই। ফলে আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠছে মালিক-শ্রমিকরা। গত কয়েকদিন তাদের তা-ব তামাশা দেশবাসী দেখেছে। ঢাকার রাস্তা ঘাটে নেমেও হৈ হুল্লোড় করেছে তারা। যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়িয়েছে। কারণ নতুন সড়ক পরিবহন আইন। পূর্বের তুলনায় কঠোর এ আইন তাদের পছন্দ হয়নি। যেহেতু পছন্দ হয়নি সেহেতু কার্যকর করা যাবে না। হ্যাঁ, এমনটিই দাবি মালিক-শ্রমিকদের। দাবি উপেক্ষা করে ১৬ নবেম্বর থেকে আইন কার্যকরের ঘোষণা দেয় সরকার। কিন্তু কার্যকর করা তো দূরের কথা, উল্টো মালিক-শ্রমিকদের বিরাট বাধার মুখে পড়তে হয় প্রশাসনকে। নতুন আইন কার্যকর হলে ফিটনেসবিহীন গাড়ি আর লাইসেন্সহীন চালকরা রাস্তায় নামতে পারবে না। সুতরাং নিজেরাই ডেকে বসে ধর্মঘট। অযৌক্তিক এবং হঠাৎ ডাকা ধর্মঘটে দুর্ভোগে পড়ে রাজধানীবাসী। ঢাকার রাস্তায় গাড়ি কমে যায়। শুরু হয় কৃত্রিম সঙ্কট। এখানেই শেষ নয়, যারা তখন গাড়ি চালিয়েছেন তাদের মুখে মবিল লেপে দেয়ার বহু ঘটনা ঘটেছে। এমন অসভ্যতা বর্বরতা দেখে সাধারণ মানুষ হতভম্ব হয়ে গেছেন। শ্রমিক-মালিকদের কিছু তাতে আসে যায়নি। তারা হাসি আনন্দে মেতেছেন। সাধারণ মানুষ তো বটেই পুুলিশ এবং প্রশাসনও এই সব হাসিরাশি দর্শকের মতো দেখে গেছেন। একটা কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানা যায়নি। এক দঙ্গল লোক রাস্তায় নেমে যাবে। যাকে তাকে ধরে হেনস্তা করবে। সরকার বা প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেবে না। উল্টো ‘ভয় পেয়েছি’ ভাব করে তাদের বৈঠকে ডাকবেন। তারপর থেকে আইন থাকবে আইনের খাতায়। এবারও যেন তাই হতে চলেছে। অন্তত ধর্মঘটের নামে মালিক-শ্রমিকদের নর্দন-কুর্দন দেখে তেমনটিই মনে হচ্ছে। এখন কথা হচ্ছে, যাত্রীরা তবে কার কাছে প্রতিকার চাইবে? পরিবহন সেক্টরটিকে শৃঙ্খলায় আনা কি কোনদিনই সম্ভব হবে না? শীত প্রসঙ্গ। শীতটা মোটামুটি শুরু হয়ে গেছে। আনুষ্ঠানিক শুরু পৌষে। তার আগে অগ্রহায়ণেই কমে আসছে তাপমাত্রা। প্রতিদিনই তাপমাত্রা নিচে নামছে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের উপস্থিতি কমছে। সেই সঙ্গে কমছে আর্দ্রতাও। এখন ঢাকার আবহাওয়া বলা চলে, নাতিশীতোষ্ণ। না গরম। না শীত। ভীষণ উপভোগ্য। আবহাওয়া অফিস ধারণা দিয়ে বলছে, ঢাকায় ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে পুরোদমে নামবে শীত। তার আগে একাধিক শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা আছে। শৈত্যপ্রবাহের হাত ধরেই নামতে পারে প্রকৃত শীত। সে অনুযায়ী, প্রস্তুতি নিচ্ছেন রাজধানীবাসী। আপাতত প্রায় সকলেই মোটা কাপড় পরে ঘর থেকে বের হচ্ছেন। সন্ধ্যার পর গরম কাপড় বা শাল গায়ে দিয়ে বের হতেও দেখা যাচ্ছে। এসবের বাইরে রাতের শিশির, ভোরের কুয়াশা ঘোষণা করছে শীতের আগমনী। অন্য প্রসঙ্গ, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবারও চালু হচ্ছে ওসমানী মিলনায়তন। বাংলাদেশ সচিবালয়ের ঠিক সামনে নবাব আবদুল গনি রোডে অবস্থিত মিলনায়তনটি প্রায় চল্লিশ বছরের পুরনো। রাষ্ট্রীয় বহু গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান আয়োজনের সাক্ষী হয়েছে। কিন্তু সংস্কারের প্রয়োজনে এটি অনেকদিন বন্ধ ছিল। চলতি বছরের মার্চ মাসে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়াধীন গণপূর্ত অধিদফতর এখানে সংস্কারের কাজ শুরু করে। নির্ধারিত সময়ের আগেই সংস্কারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন স্থাপনাটি আগের তুলনায় আরও সুন্দর। আধুনিক সুযোগ-সুবিধাও নিশ্চিত করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন আধুনিকায়নের জন্য সিঙ্গাপুর থেকে এ্যাকুয়েস্টিক ডিজাইন করে আনা হয়েছিল। সে ডিজাইন বাস্তবায়ন করা হয়েছে। মিলনায়তনে অত্যাধুনিক সাউন্ড সিস্টেমসহ যুগোপযোগী অডিও আউটপুটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নতুন করে আলোকসম্পাতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মিলনায়তনে একটি ভিভিআইপি অফিস ও দুটি কনফারেন্স রুম নির্মাণ করা হয়েছে। সিসিটিভি, নেটওয়ার্কিং ওয়াইফাই ও এলইডি স্ক্রিন বসানো হয়েছে। প্রতিবন্ধীবান্ধব আসন ও প্রতিবন্ধীদের সুবিধার্থে হুইল চেয়ার বহনযোগ্য লিফট স্থাপন করা হয়েছে। আগামী ৯ ডিসেম্বর থেকে ব্যবহারের জন্য খুলে দেয়া হবে মিলনায়তনের দ্বার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই দিন নবসজ্জিত মিলনায়তনটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
×